Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

শিক্ষার্থীদের এক দফা বিক্ষোভে উত্তাল বাংলাদেশ (২০২৪)

Share on Facebook

ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদি থেকে সামনের গোটা চত্বর, সড়ক। এক পাশের মূল সড়কটি ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনের সড়ক। কোনাকুনি দোয়েল চত্বরের দিকে চলে যাওয়া সড়ক। আরেক পাশে পলাশীর দিকে গেছে যে সড়ক—সর্বত্র মানুষ আর মানুষ। কানায় কানায় পূর্ণ। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে ভিজে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের স্রোত মিশেছে শহীদ মিনারে।

গতকাল শনিবার বেলা দেড়টার পর ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহীদ মিনারে আসতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। বিপুল মানুষের পুরো জমায়েতে তরুণ উপস্থিতি ছিল সবচেয়ে বেশি। স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে শুধু রাজধানী নয়, পুরো বাংলাদেশ। নারী-পুরুষ সবার কণ্ঠে একই সুর। সরকার পতনের এক দফা দাবির স্লোগান ওঠে চারপাশে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল ঢাকার পাশাপাশি অন্তত ৩৩টি জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ হয়েছে। শিক্ষার্থী ছাড়াও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এসব কর্মসূচিতে অংশ নেন। গাজীপুরে ও চট্টগ্রামে কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ-সংঘাতে দুজন নিহত হয়েছেন। কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের মিছিলে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের হামলায় ৭ জন গুলিবিদ্ধ হন। এ ছাড়া সাতটি জেলায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৩০ জন।

জমায়েতের মূল কেন্দ্র শহীদ মিনার
স্লোগানে প্রকম্পিত ছাত্র-জনতার জমায়েতের কেন্দ্র শহীদ মিনারে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে উপস্থিত হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক। সবার দাবি জানতে চান তাঁরা। সবাই সমস্বরে এক দফা দাবির কথা জানান। ‘ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থান, অভ্যুত্থান’, ‘পদত্যাগ পদত্যাগ, শেখ হাসিনার পদত্যাগ’ এমন স্লোগান ওঠে চারপাশে।
বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে এক দফার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ও সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা এক দফা দাবির সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। দফাটি হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ এই সরকারের পতন ও ফ্যাসিবাদের বিলোপ। ’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে। ঢাকা, ৩ আগস্ট
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে। ঢাকা, ৩ আগস্টছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
নাহিদ আরও বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে আমরা খুব দ্রুতই ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের জন্য সর্বস্তরের নাগরিক, ছাত্রসংগঠন ও সব পেশাজীবী মানুষের সঙ্গে মিলে সম্মিলিত মোর্চা ঘোষণা করব। সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জাতীয় রূপরেখা আমরা সবার সামনে হাজির করব।’

‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গঠন করতে চাই, এমন একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করতে চাই, যেখানে আর কখনো কোনো ধরনের স্বৈরতন্ত্র-ফ্যাসিবাদ ফিরে আসতে না পারে।’ বলেন নাহিদ। যে স্বতঃস্ফূর্ত ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থান শুরু হয়ে গেছে, তার সঙ্গে মানুষকে যোগ দেওয়া এবং পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায় সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানান নাহিদ। তিনি আজ রোববার থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণাও তুলে ধরেন।

নাহিদের বক্তব্যের পর আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে কিছু জরুরি নির্দেশনা দেন। তিনি জানান, অসহযোগ কর্মসূচির মধ্যে হাসপাতাল, ওষুধের দোকান, জরুরি পরিবহন সেবা (ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পরিবহন), অ্যাম্বুলেন্স সেবা, ফায়ার সার্ভিস, গণমাধ্যম, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহন, জরুরি ইন্টারনেট-সেবা, জরুরি ত্রাণসহায়তা এবং এ খাতে কর্তব্যরত কর্মকর্তা-কর্মচারীর পরিবহন সেবা চালু থাকবে।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্র-জনতার প্রচণ্ড ক্ষোভ থেকেই এক দফার কর্মসূচি এসেছে। মানুষের বুকের ওপর গুলি করা হয়েছে। প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সব মানুষ নেমে এসেছেন। জনদ্রোহের মাধ্যমেই এমন সরকারের শেষ পরিণতি নির্ধারিত হয়।

এক দফা দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণার পরও ঘণ্টাখানেক শহীদ মিনারে অবস্থান করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় শহীদ মিনারের সামনের সড়কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিনটি কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। সবাই স্বৈরাচার স্বৈরাচার বলে স্লোগান দিতে থাকেন। সাড়ে ছয়টা থেকে শহীদ মিনার ছাড়তে শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ সন্ধ্যায় শাহবাগ মোড়ে অবরোধ করে।

আরেকটি অংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। এর বাইরে আরেকটি অংশ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত শহীদ মিনার থেকে শাহবাগ এলাকায় মিছিল নিয়ে প্রদক্ষিণ করতে থাকে।

সন্তান-শিশু নিয়ে মা–বাবা
আন্দোলনকারীদের পানি সরবরাহ করতে গিয়ে গত ১৮ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ। তাঁর স্মরণে গতকাল শিক্ষার্থীরা অনেকে ‘পানি লাগবে, পানি লাগবে’ বলে বিনা মূল্যে সবার মধ্যে পানি বিতরণ করেন। কেউ কেউ নিজ খরচে পেয়ারা খেতে দেন বিক্ষোভকারীদের।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আন্দোলনে স্বামী, দুই মেয়ে ও চার ভাগনিকে নিয়ে আসেন খুরশিদা শিরিন। এসেছেন রাজধানীর আফতাবনগর থেকে। তাঁদের মাথায় বাঁধা পতাকা, মুখে স্লোগান। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে খুরশিদা শিরিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওরা একা কেন আন্দোলন করবে, তাই আমরা সবাই এসেছি। ’

দুপুরের পর সময় যত গড়াতে থাকে, আন্দোলনকারীদের সংখ্যা তত বাড়তে থাকে। বিপুল মানুষের ভিড়ে শহীদ মিনার চত্বর ও এর আশপাশের এলাকায় পা ফেলার জায়গা ছিল না। ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’; ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’; ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’; ‘স্বৈরাচারের গদিতে আগুন জ্বালো একসাথে’; ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’; ‘পদত্যাগ পদত্যাগ, শেখ হাসিনার পদত্যাগ’ এমন নানা স্লোগান দিতে থাকেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

এসেছিলেন রিকশাচালকেরাও
শহীদ মিনারের পাশে বেশ কিছু রিকশা নিয়ে অবস্থান নেন চালকেরা। নিজের রিকশার ওপর বসেই তাঁরা নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। তাঁদের স্লোগানের মধ্যে রয়েছে ‘গুলি করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’ ইত্যাদি।

মিরপুর ১০ নম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তিন মেয়েকে নিয়ে শহীদ মিনারে আসেন দুই মা। মেয়েদের স্লোগানের জমায়েতে পাঠিয়ে তাঁরা দুজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তাঁরা বলেন, ক্ষোভের কথা বলে শেষ করা যাবে না। যেভাবে শিক্ষার্থীদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, সেই দৃশ্য দেখার পর ঘরে থাকা যায় না। শহীদ মিনারে আসার আগে মিরপুর-১০ এলাকার বিক্ষোভেও অংশ নেন তাঁরা।

সব মিছিল মিশেছে শহীদ মিনারে
সায়েন্স ল্যাব মোড়ে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। বেলা তিনটার দিকে সেখান থেকে কয়েক হাজার মানুষ মিছিল নিয়ে শহীদ মিনার এলাকায় উপস্থিত হন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় নিহত, গণগ্রেপ্তার ও হয়রানির প্রতিবাদে ব্যান্ডসংগীতশিল্পীরা বেলা তিনটায় ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবরে জড়ো হন। সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানাতে সংগীতশিল্পীরা যান শহীদ মিনারে।

বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরাও যোগ দেন শহীদ মিনারে। ‘একাত্তরের রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা’ ব্যানারেও অংশ নেন কয়েকজন। কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো মাইকের ব্যবস্থা ছিল না শহীদ মিনারে। তাই ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত আন্দোলনকারীরা নিজেদের মতো স্লোগান দিতে থাকেন। সব স্লোগানের ভাষা একই।

ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। উত্তরায় সকালে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। পুলিশ ও সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের বাধায় মূল সড়কে আসতে পারেননি। কিছুক্ষণ পর চলে যান বিক্ষোভকারীরা। যাত্রাবাড়ী, শান্তিনগর মোড় এলাকাতেও বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এসব বিক্ষোভ থেকেও পরে মিছিল নিয়ে অনেকে যোগ দেন শহীদ মিনারে। মিরপুর ডিওএইচএস এলাকায়ও বিক্ষোভ হয়। গুলশানের সাহাবুদ্দীন পার্কে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় বেলা ২টা থেকে তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। যোগ দেন অভিভাবকেরাও। ওই সময় ১০ নম্বর গোলচত্বরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ অবস্থান নিয়েছিল। দলে দলে শিক্ষার্থীরা আসতে থাকলে পুলিশ সেখান থেকে সরে মিরপুর ২ নম্বরে শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় গোলচত্বর এলাকায় দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।

বিক্ষোভকালে মিরপুর ১০ নম্বর থেকে পল্লবী, আগারগাঁও, মিরপুর ১ ও ১৪ নম্বরগামী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল পাঁচটার দিকে শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি শেষ করে এলাকা ছেড়ে চলে যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আন্দোলনকারীরা জড়ো হতে শুরু করেন। বেলা ১১টার দিকে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রাস্তার এক পাশ বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন।

দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে রামপুরা, বনশ্রী, বাড্ডা এলাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ ছোট ছোট মিছিল নিয়ে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আসেন। শিক্ষার্থীদের গলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র ছিল। সকাল থেকে আফতাবনগর গেটে অনেক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে দুপুরের পর পুলিশ সদস্যরা সরে যান।

বেলা দেড়টার দিকে বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে প্রগতি সরণির মূল সড়কে আসেন। এরপর মিছিল নিয়ে মেরুল বাড্ডা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে যান। সেখানে প্রায় আধা ঘণ্টা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। সেখানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে বনশ্রী সড়কে অবস্থান নেন। সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত রামপুরা থেকে বনশ্রী যাওয়ার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।

পুলিশ দেখে কিছুটা উত্তেজনা
শহীদ মিনারের আশপাশে কোথাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি চোখে পড়েনি। তবে শাহবাগ থানার সামনে পুলিশের উপস্থিতি ছিল। শহীদ মিনার থেকে সন্ধ্যায় বিক্ষোভকারীদের মিছিলটি শাহবাগ থানার সামনে পৌঁছালে বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ পুলিশকে লক্ষ্য করে পানির বোতল ছোড়েন। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশের ওপর আক্রমণ ঠেকাতে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ শাহবাগ থানার সামনে মানব ঢাল তৈরি করে।

এর আগে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকা থেকে কয়েক হাজার আন্দোলনকারীর একটি মিছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে যাচ্ছিল। নীলক্ষেত হয়ে মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এলে কয়েকজন উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থাকা পুলিশ সদস্যদের দিকে তেড়ে যান। তখন আন্দোলনকারীদের একটি অংশ মানব ঢাল তৈরি করেন এবং পুলিশ সদস্যদের সরে যেতে সহযোগিতা করেন।

সায়েন্স ল্যাব মোড়ে বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ সদস্যরা মিরপুর সড়কের বাইতুল মামুর জামে মসজিদ মার্কেটের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। দুপুর সাড়ে ১২টার পর আন্দোলনকারীদের কয়েকজন পানি ও বিস্কুট নিয়ে পুলিশের কাছে যান। পুলিশ সদস্যদের অনেকে তা গ্রহণ করেন।

কোটা সংস্কারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভ শুরু হয় ৫ জুন। ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার পর সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। ১৬ জুলাই সংঘর্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়। এরপর আন্দোলন আরও বেগবান হয়। এরপর একে একে আরও মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ ও সংঘাতে এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১৮। এরপর ব্লক রেইড দিয়ে গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

‘সর্বাত্মক অসহযোগ’
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সমাবেশ থেকে ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ সম্পর্কে কিছু নির্দেশনা পড়ে শোনান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, অসহযোগ কর্মসূচির মধ্যে হাসপাতাল, ওষুধের দোকান, জরুরি পরিবহনসেবা (ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পরিবহন), অ্যাম্বুলেন্স–সেবা, ফায়ার সার্ভিস, গণমাধ্যম, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহন, জরুরি ইন্টারনেট-সেবা, জরুরি ত্রাণসহায়তা এবং এ খাতের কর্মকর্তা-কর্মচারীর পরিবহনসেবা চালু থাকবে।

নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে কর বা খাজনা না দেওয়া। বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানির বিলসহ কোনো ধরনের বিল পরিশোধ না করা। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত ও কলকারখানা বন্ধ রাখা। অফিসে না যাওয়া, মাস শেষে বেতন তোলা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা। প্রবাসীরা যাতে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স দেশে না পাঠান, সেই আহ্বানও রয়েছে নির্দেশনায়।

নির্দেশনায় আরও রয়েছে গণপরিবহন বন্ধ রাখা। জরুরি ব্যক্তিগত লেনদেনের জন্য সপ্তাহের শুধু রোববার ব্যাংক খোলা রাখা। পুলিশ সদস্যদের রুটিন দায়িত্ব ছাড়া অন্য কোনো দায়িত্ব পালন না করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ছাড়া বিজিবি ও নৌবাহিনী ছাড়া অন্যান্য বাহিনী ক্যান্টনমেন্টের বাইরে দায়িত্ব পালন করবে না বলেও নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে।

এই নির্দেশনায় বিলাসদ্রব্যের দোকান, শোরুম, বিপণিবিতান, হোটেল-মোটেল, রেস্তোরাঁ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানপাট বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে বলে নির্দেশনায় উল্লেখ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: আগষ্ট ০৪, ২০২৪

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ