Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

শাহজাহান ও মুমতাজ মহলের শাহাজাদি – জাহানারা বেগম এবং কিছু কথা

Share on Facebook

এক মুঘল শাহজাদীর প্রেম ও করুণ ফল।।

শাহজাহান ও মুমতাজ মহলের জ্যেষ্ঠা কন্যা জাহানারা বেগম ১৬৩১ সালে মুমতাজ মহলের মৃত্যুর পরে মুঘল সাম্রাজ্যের ‘ফার্স্ট লেডি’ বা ‘পাদশাহ বেগম’ এর স্থান পান। জাহানারা ছিলেন অসাধারণ রূপবতী ও গুণবতী, সম্রাট তাঁকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন।জাহানারার দু’টি প্রেম এবং সেই দুই প্রেমের মর্মান্তিক পরিণতি নিয়ে দুটি ঘটনার উল্লেখ তৎকালীন সময়ের লেখকদের বর্ননা থেকে জানা যায়। দুটো ঘটনায় ইতিহাসে উল্লেখিত বাস্তব ঘটনা।বার্নিয়ের তাঁর লেখনী তে উল্লেখ করে গিয়েছেন যে, “ইউরোপে প্রেম করা যত সহজ, এশিয়ায় তত সোজা নয়।এখানে প্রেম একটা ভয়াবহ ব্যাপার, প্রেম একবার করলে আর রেহাই নেই, তার শোচনীয় মর্মান্তিক ফলাফল ভোগ করতেই হবে। বার্নিয়েরের লেখনী থেকে আরো জানা যায় যে, পিতা-কন্যার এই প্রীতির সম্পর্কে রাজদরবারে, ওমরাহ-মহলে নানা রকমের কানাঘুষা-গুজব রটেছিল। কাফ্রু নামের এক পর্যটক লিখেছেন, “বেগমসাহেবা শুধু যে সুন্দরী ছিলেন তা নয়,ছলাকলায় ও বুদ্ধিতে তাঁর সমকক্ষ কেউ ছিলেন না। এই কন্যার ওপরে সম্রাটের ছিল অগাধ বিশ্বাস এবং পিতার সকল দায়িত্ব তিনি বহন করতেন।”

মোঘল-দরবারে সম্রাটের জ্যেষ্ঠা কন্যার প্রভাব-প্রতিপত্তি ছিল অসাধারণ। সম্রাটের সঙ্গে তিনি ছায়ার মতন থাকতেন, তাঁর আমোদ-প্রমোদ, হাসি-ঠাট্টায় যোগ দিতেন, এবং কোনও গুরুতর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত করার সময়ে সম্রাট তাঁর জ্যেষ্ঠা কন্যার মতামত কে যথেষ্ঠ গুরুত্ব দিতেন। সম্রাটের জ্যেষ্ঠপুত্র দারা যে সম্রাটের প্রীতি লাভে সমর্থ হয়েছিলেন তাঁর মূল কারণ ছিল, তাঁর প্রতি তাঁর দিদির সমর্থন ও সহানুভূতি। দারা সবসময় বেগমসাহেবার মন জুগিয়ে চলতেন, তাঁকে তুষ্ট রাখতেন, এমনকি তিনি তাঁর দিদি কে এই প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন যে তিনি যদি সম্রাট হতে পারেন তাহলে তিনি তাঁর দিদি কে বিবাহের অনুমতি দেবেন।

জাহানারা সব সময়ই অন্দরমহলে বন্দিনী হয়ে থাকতেন এবং সবসময় পরিচারিকা দ্বারা বেষ্টিত থাকতেন।তাই তার পক্ষে কিছু করা সম্ভব ছিল না।
কিন্তু ভাগ্যক্রমে জাহানারা একজন পেয়েছিলেন যদিও তিনি সে রকম উচ্চবংশজাত কেউ তা নয়, একজন সাধারণ অমায়িক ভদ্রলোক ছিলেন। জাহানারার প্রেমের খবর একসময় সম্রাটের কাছে ঠিক পৌঁছে গেল। সম্রাট অতর্কিতে এসে তাঁর কন্যার গোপন কক্ষে এমন এক অপ্রত্যাশিত সময়ে ঢুকে পড়লেন যে, বেগমসাহেবার প্রেমিক কোনও দিশা না পেয়ে পাশের স্নানঘরের গরম জলের টবের মধ্যে আত্মগোপন করলেন। সম্রাট এমন ভাব দেখালেন যে তিনি কিছুই জানেন না, কিছুই বুঝতে পারেন নি। তিনি কন্যার ঘরে বসে নানা বিষয় নিয়ে অনেকক্ষণ কথাবার্তা বললেন। শেষে একসময়, একথা-সেকথার পরে তিনি হঠাৎ কথার মোড় ঘুরিয়ে বেগমসাহেবা কে জানালেন যে বেগমসাহেবা আগের থেকে কালো হয়ে গেছেন, এবং তিনি বুঝতে পারছেন যে বেগমসাহেবা নিজের শরীরের আর যত্ন নেন না। এরপরেই তিনি খোজাদের হুকুম দিলেন টবের জল গরম করার জন্য আগুন ধরিয়ে দিতে। হুকুম তামিল হল। গোসলখানায় টবের জল টগবগ করে ফুটতে লাগল এবং তাতে বেগমসাহেবার প্রেমিকও সেদ্ধ হতে লাগলেন। সম্রাট চুপ করে বসে অপেক্ষা করতে লাগলেন। শেষে যখন খোজারা তাঁকে জানাল যে সব শেষ, তখন তিনিও গম্ভীরভাবে উঠে তাঁর কন্যার কক্ষ ত্যাগ করলেন। বেগমসাহেবার হতভাগ্য গরম জলে সেদ্ধ হয়ে মরলেন। এইভাবে জাহানারার প্রথম প্রেম মর্মান্তিকভাবে সমাপ্ত হল।

এরপরে জাহানারা দ্বিতীয়বার প্রেমে পড়েছিলেন এবং তার পরিণতি ও বরারবরের মত করুন।জাহানারা দ্বিতীয়বার একজন উচ্চবংশজাত সুদর্শন পার্শী যুবক কে পছন্দ করে তাঁকে তাঁর ব্যক্তিগত খানসামা নিযুক্ত করলেন, তাঁর নাম ছিল নজর খাঁ। ঔরঙ্গজেবের পিতৃব্য শায়েস্তা খাঁ এই যুবকটিকে নাকি বিশেষ স্নেহ করতেন এবং সম্রাটের কাছে জাহানারার সাথে তাঁর বিবাহের প্রস্তাবও তিনি করেছিলেন। সম্রাট সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। যথারীতি জাহানারার সাথে নজর খাঁ’র গোপন প্রণয়ের সম্পর্ক সম্রাটের কানে পৌঁছেছিল। সম্রাট নিজে তাঁকে দরবারে আমন্ত্রণ জানালেন।সে দরবারে আসতেই সম্রাট সভায় উপস্থিত আমির-ওমরাহদের সামনে তাঁকে একটি পান দিয়ে অভ্যর্থনা করেন। এই আপ্যায়নে নজর খাঁ’র বুক গর্বে ফুলে উঠল। তিনি মহানন্দে সম্রাটের নিজের হাতে দেওয়া পানটি মুখে পুরে চিবোতে শুরু করলেন। সভায় উপস্থিত কেউ ভাবতেও পারেন নি যে সম্রাট নিজের হাতে যে পানটি নজর খাঁ কে দিয়েছেন তাতে ছিল বিষ। পান খেয়ে ঠোঁট লাল করে, বেগমসাহেবার স্বপ্নে বিভোর হয়ে নিজের পাল্কিতে গিয়ে উঠলেন নজর খাঁ। বিষাক্ত পানের ক্রিয়া পাল্কির মধ্যেই হল, আর তাঁকে নামতে হল না। প্রেমের পান খেয়ে বেগমসাহেবার দ্বিতীয় প্রেমিকের প্রেমলীলা আর ভবলীলা দুটোই সাঙ্গ হল।

এভাবে জাহানারার দুই প্রেমের করুন পরিসমাপ্তি ঘটল এবং মুঘল সম্রাজ্যের ইতিহাসে এই ঘটনাদ্বয় উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করলো।

সূত্র: সংগৃহিত।

তথ্যসূত্র:

১/ বাদশাহী আমল, বিনয় ঘোষ,প্রকাশ ভবন,কোলকাতা,(পৃষ্ঠাঃ ২৪-৩০)।

২/ শাহজাদা দারাশুকো,শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়,দে’জ পাবলিসার্চ,কোলকাতা,১৯৯১,(পৃষ্ঠাঃ৭১১-৭১৩)।

৩/Travels In the Moghul Empire A.D. (1656-1668) , Francois Bernier, Oxford University press,London,1916,(page:86,87).

তারিখ: ফেব্রুয়ারী ০৭, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ