প্রায় প্রতিটি মানুষ নিজের কথা বলতে বড় ভালোবাসে, ভালো বক্তাদের শ্রোতাও আছে, এই ধারায় একটি সমস্যাও আছে, ভালো শ্রোতা পাওয়া। অন্যকে নিজের কথা বলতে ভালো লাগার বড় একটি কারণ হল সে নিজেকে বেশি জানে বলে, কিন্তু সকল বক্তা কী নিজেকে সঠিক করে জানে ! নিজের মধ্যে নিজেকে জানার মধ্যে বড় ঘাটতি থাকে বলে অনেক সময় নিজেকে বিজ্ঞ মনে হয়। সঠিক বিজ্ঞ মানুষের সংখ্যা খুবই কম। আমাদের ষোল কোটি মানুষের দেশে প্রতি বছরে কত জন সঠিক বিজ্ঞ মানুষ যোগ হচ্ছেন তার সংখ্যা কি নির্ণয় করা যায় !! বেশী ভাগ মানুষই যদি নিজেকে বিজ্ঞ মনে করি তখন যে সংখ্যা দাড়ায় তা একটি ভ্রান্ত ধারণার জন্ম দেয়।
সঠিক ভাবে নিজেকে জানাটা বড় কঠিন কাজ, আমাদের সকলের কাছে নিজেকে সঠিক ভাবে জানা হয় না, দুই হাজার বছরের আগে সক্রেটিস “নিজেকে জানো” বলে বিখ্যাত কথাটি বলেছিলেন।
নিজের কথা বলে বলে নিজের কথা প্রতিষ্ঠা করা না গেলে দশের কাছে বা সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা যায় না। নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যেই মানুষ নিজের কথা বলতে বড়ই ভালোবাসে বা বলে, আর নিজের কথা যদি বলা না যায় তবে নিজের প্রকাশ হবে কী ভাবে !! কে না চায় নিজেকে প্রকাশ করতে !! এ সব কারণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন-
” হৃদয় আমার প্রকাশ হল অনন্ত আকাশে।
বেদন-বাঁশি উঠল বেজে বাতাসে বাতাসে ॥
এই-যে আলোর আকুলতা আমারি এ আপন কথা–” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
নিজে অনেক জেনে. অনেক পড়াশুনা করে তা কেউ যদি নিজের মধ্যে রেখে দিয়ে থাকেন তবে তাকে এতটি মূল্যবান বা মূল্যহীন পাথরের সাথে তুলনা করা যায়।
নিজেকে প্রকাশের বড় হাতিয়ার হচ্ছে লেখা। লেখার একটি ক্ষমতা অর্জন ও লেখার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। ব্লগে লিখার মধ্য দিয়ে আমাদের অনেকের লেখার যাত্রা শুরু, নিজের মত প্রকাশের যাত্রা শুরু। ভালো অর্থের ভালো মানের চিন্তা চেতনার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে নিজেকে প্রকৃত ভাবে প্রকাশ করি শুধু নিজের কথা বার বার না বলে। লেখাই এক সময় বলে দিবে নিজে কতটুকু সঠিক জেনেছি, নিজে কতটুকু সঠিক হতে পেরেছি। কোন রাজা বা কোন সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় তাদের সব কাজকেই সঠিক মনে হয় কিস্তু রাজার বা সরকারের পরিবর্তনের পরে তাদের আগের কাজগুলি কতটুকু সঠিক ছিল বা ছিল না জনগনই তা বুঝে নিতে পারে বেশ। তাই বেশি ভাগ সময় নিজের বুঝাটা সঠিক হয় না। নিজের কাছে এক সময় স্পষ্ট হয়ে যাবে এক বা দুই বছর আগের নিজের একটি লেখা কতটুকু সঠিক ছিল বা ছিল না, পাঠক এক সময় বলে দিবে লেখার মান নিয়ে, বিজ্ঞাপন দিয়ে বা ঢোল ঢাক বাজিয়ে পাঠক তৈরী করা যায় না। পাঠক ছাড়া যিনি লেখক তিনি কোন লেখক নন। নিজের কথা বলতে আমরা যেমন ভালোবাসি সেই কথাগুলির প্রকাশ হোক লেখার মধ্য দিয়ে, পাঠকের পড়ার মধ্য দিয়ে, পাঠক ভক্তের সমারহের মধ্য দিয়ে।
তারিখ: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৭
রেটিং করুনঃ ,
সুন্দর বলেছেন।
মানুষ যেমন অনেক সময় নিজের ভুল নিজে বুঝতে পারেনা, তেমনি নিজের কোন লেখা অনেক সময় বোঝা যায়না যে কেমন হলো। যখন পাঠক পড়ে মন্তব্য করে তখন বোঝা যায় যে লেখাটা আসলে কেমন হয়েছে।
আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, লিখতে লিখতেই লেখার পরিপক্কতা আসে।
অল্প কথায় চমৎকার ভাবে আমার লেখার বিষয়টি আরো পরিষ্কার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। অনেক শুভেচ্ছা জানবেন, ভালো থাকবেন জামান ভাই।
খুব চমৎকার করে সাজিয়ে লেখটা লিখেছন যা বুঝাতে চেয়েছেন তা সরল ভাবেই ফুটে উঠেছে। নিজে মনে করি ভালো লেখক হতে হলে লেখার চেয়ে বেশি করে অন্য লেখকের লেখা পড়া উচিত
অনুপ্রেরণা মূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, শুভেচ্ছা জানবেন ভালো থাকবেন।
অনুগ্রহ পুর্বক লেখার শিরোনামে —– দেওয়া থেকে বিরত থাকুন
—– চিহ্ন দেওয়াটা যদি কারিগরি ক্রুটির কারণ হয়ে থাকে তবে সকলের তা থেকে বিরত থাকা উচিত আর আমি তো সবার আগেই। অনেক অনেক ধন্যবাদ আগামীর লেখাগুলিতে —– চিহ্ন থাকবে না। অনেক ধন্যবাদ্
নিজের কাছে এক সময় স্পষ্ট হয়ে যাবে এক বা দুই বছর আগের নিজের একটি লেখা কতটুকু সঠিক ছিল বা ছিল না, পাঠক এক সময় বলে দিবে লেখার মান নিয়ে, বিজ্ঞাপন দিয়ে বা ঢোল ঢাক বাজিয়ে পাঠক তৈরী করা যায় না। পাঠক ছাড়া যিনি লেখক তিনি কোন লেখক নন। নিজের কথা বলতে আমরা যেমন ভালোবাসি সেই কথাগুলির প্রকাশ হোক লেখার মধ্য দিয়ে, পাঠকের পড়ার মধ্য দিয়ে, পাঠক ভক্তের সমারহের মধ্য দিয়ে।
দ্বিমত করার কোন সুযোগ নেই।
চমৎকার লিখার জন্য শুভেচ্ছা।
অনুপ্রেরণা মূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, এমন মন্তব্যে আরও লেখার ইচ্ছা জাগে। শুভেচ্ছা জানবেন ভালো থাকবেন।
নিজে অনেক জেনে. অনেক পড়াশুনা করে তা কেউ যদি নিজের মধ্যে রেখে দিয়ে থাকেন তবে তাকে এতটি মূল্যবান বা মূল্যহীন পাথরের সাথে তুলনা করা যায়।
তাইতো জটিল জটিল পোষ্ট বানাই, পাঠক পাই না।
সঠিক কথা বলেছেন, জটিল কথার লেখায় পাঠক পাওয়া খুব কঠিন বিষয়, তাই তো এখন ফেসবুকে এক লাইন লিখলে মিলে মন্তব্য ও লাইকের সাইক্লোন।
তাই হোক
আপনাদের সহযোগিতায় আমাদের লেখার পথ দীর্ঘ হোক।
//নিজেকে প্রকাশের বড় হাতিয়ার হচ্ছে লেখা।//—–
ঠিক! তবে আমার মতো পাঠকদের দ্বারে পৌছাতে লেখকের যে একটু ছাড় দিতে হবে!
লেখক আর পাঠকের দূরত্বটা একটু কম হওয়াই কাম্য!!
তাই বলে আমি অখাদ্য লিখতে বলবো না!!
আপনার লেখা অবশ্যই পাঠকপ্রিয়তা পায়।
এ কারণে কৃতজ্ঞতারও শেষ নেই।
অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই!!!!
ভাল থাকবেন!!!
অনেক অনেক ধন্যবাদ নাহার আপা, এ কথা আমার বিশ্বাসই হয় না যে আবার কখনো একই ব্লগে দেখা হবে মন্তব্য কলামে আলোচনা হবে।
নিজেকে খুব গর্বিত মনে হচ্ছে,
মনে হচ্ছে আবারো সেই সেই ব্লগীয় দিন ফিরে আসলো। অনেক অনেক ভালো ভালো থাকবেন।
বেঁচে থাকলে দেখা হয়েই যায় এই গোলাকৃতি পৃথিবীতে।
ভাল লাগছে পরিচিত মানুষগুলোকে আবারও পেলাম!
আমিও আশা করি ভাল কাটবে সময়গুলো!!
সঠিক কথাই বলেছেন আপা, বেঁচে থাকলে কোন না কোন ভাবে এই গোলাকৃতি পৃথিবীতে দেখা হয়েই যায়। তবে যতার্থ দেখার মূল্য অনেক বেশি।