আমাদের অনেকের মধ্যে ভালো প্রতিভা নেই, কখনো কখনো কিছু একটা লেখার বিষয় মাথায় আসলে তা যদি সঙ্গে সঙ্গে লিখে ফেলতে না পারি তখন লেখার বিষয় হারিয়ে যায়, অবশ্য এই ধরণের চরিত্র থেকে অনেকেই বতিক্রমও আছে তাঁদের কথা ভিন্ন।
যারা লিখতে জানেন তাঁরা সকল অবস্থায় লিখতে জানেন বা লিখতে পারেন। নিজের কথার বর্ণনা দিয়ে আমরা অনেক সময় বলি ‘ জীবন বাঁচে নাই ভাই, আবার লেখা !! আগেতো লিখতাম শখের বসে এখন আছি জীবন সংগ্রাম নিয়ে।’ বেশ কথা, আমরা বিভিন্ন লেখকের লেখা পড়ে জেনেছি নরম বিছানায় শুয়ে লেখা আসে না আর আসলেও সে লেখা লেখার ভিড়ে টিকে থাকে না। কেউ যখন জীবনের বাস্তবতার মুখে দাঁড়িয়ে জীবনের অর্থ তন্ন তন্ন করে উপলদ্ধি করে লেখা তখন মাথায় আসে আর তখন থেকে শুরু হয় লেখা।
প্রচলিত কথা – নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা। আজ কোন লেখা হল না, নানান কারণ দাঁড় করানো যায়, যেমন অবসর পাই নি, বিদ্যুত ছিল না, নেটে ব্যালেঞ্চ ছিল না, ব্লগ ঠিক ঠাক মত চলছিল না, লেখার মন ছিল না। নিজের দোষ অন্যের উপর বেশ সহজে চাপিয়ে দেওয়াটা আমাদের মধ্যে অনেকের একটি সহজ প্রবনতা। ” তুমি অধম, তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন !! ” এই প্রবাদ বাক্যটি খুব জনপ্রিয় , এখন সময় পাল্টিয়েছে, যুগ পাল্টিয়েছে, কথা বলার ধরণও পাল্টিয়েছে। এখন আমরা খুব সরাসরি কথা বলি ” তুমি খারপ, আমি ভালো ” এখন প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা বেশি বলে পরোক্ষ্য ভাবে বা সৌজন্য ভাবে কথা বলার প্রবনতাও কম।
বিখ্যাত লেখক প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায় তাঁর বিখ্যাত “ফুলের মুল্য” গল্পে লিখেছেন ” কোথায় সে কর্ম করে, এইবার তাহাকে জিজ্ঞাসা করার সুযোগ পাইলাম। ইংরাজ হিসাবে এ রূপ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করাটা নিয়ম নহে, কিন্তু সকল নিয়মের ফাঁক আছে কিনা! যেমন রেলগাড়িতে উঠিয়া সহযাত্রীকে – কোথায় যাইতেছেন মহাশয় ? জিজ্ঞাসা করা ভয়ানক পাপ, তবে অধিক দূর যাইবেন কি !! – ইহা জিজ্ঞাসা করিতে দোষ নাই ”
ঠিক আছে এক জন সহ ব্লগার নিয়মিত লিখতেন এখন আর লিখেন না, ইংরেজ সাহেবদের মত সৌজন্য বজায় রেখে সরাসরি প্রশ্ন না করে যদি বলি – ” ব্লগে ইদানিং আপনার লেখা খুঁজি, দুই একদিনের মধ্যে কোন পোষ্ট দিবেন কী !! ” আমি নিশ্চিত তিনি কোন কিছু তোয়াক্কা না করে উত্তর দিবেন ” আপনি কি আমাকে একটি মন মত চাকুরি জুটিয়ে দিবেন !! আমার কর্ম স্থলের কাজগুলি কি করে দিবেন !! বা পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিতে পারেন – ” আপনাদের কি কোন কাজ নেই সারাক্ষণ শুধু ব্লগ ব্লগ করেন !! ব্লগ কি আমাকে খাবার, পোষাক, ফ্লাট বাড়ি, ব্যাংক ব্যালেন্চ বানিয়ে দিবে !! ”
না; ব্লগ, লেখালেখি – ফ্লাট বাড়ি, ব্যাংক ব্যালেঞ্চ বানিয়ে দিবে না। তবুও আমরা লিখি, এজন্যই লেখা লেখিকে, ব্লগকে কখনো কখনো কি বড় জটিল মনে হয় !!
ইদানিং ব্লগে লেখার সূচক নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে ক্রমাগত, এটিও একটি জটিল প্রশ্ন সামনের দিনের ব্লগগুলি আলোকিত হবে কি না !
০৯/২২/২০১৬
রেটিং করুনঃ ,