আমার লেখা নিয়ে আমাদের সবার প্রিয় মাঈনউদ্দিন মইনুল ভাইয়ের আমার প্রতি বিশাল এক উক্তি, ওনার দৃষ্টিতে আমি নাকি ” লেখা বিষয়ক লেখক” যতই লিখি বা বলি ‘না, না আমি ব্লগের তেমন লেখক নই’ কিন্তু এমন বিদ্বান ব্যক্তির কাছ থেকে যখন এমন খেতাব পাই তখন গর্বে বুক ভরে যায়, অনেক রাত জেগে, প্রিয় মানুষদের সময় না দিয়ে, সময় ব্যয় করে যে লেখা লেখেছি এমন খেতাবে মন ভরে যায়, মন প্রফুল্ল হয়, লেখার শক্তিকে বাড়ায়। তিনি বার বার আমাকে বিবিধ ক্যাটাগরি থেকে বের হয়ে হয়তো প্রবন্ধ লিখতে বলতেন। প্রবন্ধ লেখার মত মান সন্মত লেখা এখনও লিখতে পারার মত যোগ্যতা অর্জন হয় নি তা স্পষ্ট করে বলা যায়। কোন এক জায়গায় বলেছিলাম ৫০০ টা পোষ্ট লেখার পরে ভাবব লেখা গুলি লেখা হিসাবে ভাবা যায় কিনা !! আর কয়েক দিন পরে পোষ্টের সংখ্যা হবে ৩০০ আর প্রায় ৮০ টার বেশি পোষ্ট অনেকের মত মুছে গেছে ব্লগ থেকে।
আমার লেখা অর্থ দর্শনের ছোঁয়া এ কথা নীল দার, নীল দা একজন কবি, তিনি জানে এর সত্যতা। তৌফিক মাসুদ ভাই বলেন গবেষনামূলক লেখা। সন্মিনিত হেনা ভাই, হায়দার ভাই প্রতিটি পোষ্টে জুড়ে দেন অসাধারণ মন্তব্য যা জ্ঞানে পরিপূর্ণ আরও অসংখ্য সন্মানিত লেখক কবিদের কথা লিখে শেষ করা যাবে না।
আমার সন্মানিতা আপাদের যারা লেখিকা, কবি তাঁদের কথা লিখে শেষ করা যাবেই না, প্রতি লেখায় উচ্চাছিত প্রশংশা, কিন্তু আমি রাশিয়ান এক মহা বিখ্যাত কবির কয়েকটা লাইন মনে প্রাণে বিশ্বাস করি। যিনি বরিস পারতেজ নায়েক ( সাহিত্যে নোবেল প্রাইজ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন )
কবির কয়েটি লাইনের বাংলা অনুবাদ :
“জনতার প্রশংসা বাণীকে কখনো বিশ্বাস করো না,
প্রশংসার দ্বি-প্রহারিক উপত্তেজনা অচিরেই ফুরাবে,
জনতা সংঘ তোমাকে নিয়ে বিদ্রুপ করবে আর
মূর্খরা দিবে তোমার সম্পর্কে মতামত।
তুমি নিজের প্রতিভায়, গুনাবলিতে, দক্ষতায়
অবিচল ভাবে বেঁচে থাকো রাজার মত। ”
মুছে যাওয়া পোষ্টগুলির বেশি ভাগ ছিল লেখা বিষয়ে, লেখক কেন লিখে ! কি ভাবে লিখে !! লিখে লেখক, কবি কি পায় !! এই সব বিষয়ে লেখা ছিল লেখার বিষয় বস্তু। এই সব বিষয় বস্তুর কিছুই নেই আজ সু-রক্ষিত অবস্থায় যেমন আমরা পুরানা দিনের বহু পুরানা দিনের জিনিস পত্র রেখে দেই যাদুঘরে। আমার কাছে লেখার কোন সু-রক্ষিত যাদুঘর না থাকলেও আছে একটি ভাংগাচুরা মাথা। সেই বিষয় বন্তুর কিছু আছে খাতায় আর কিছু আছে মাথায়।
একবার একজন কবি আইনস্টাইনকে প্রশ্ন করেছিলেন ” আচ্ছা আপনি কি বলতে পারেন একবার আপনার মাথায় কোন তত্ব আসলে তখনই কি তত্বগুলি কাগজে লিখে ফেলেন !!! আইনস্টাইন উত্তর দিয়েছিলে ” আমাদের মাথায় কোন তত্ব আসলে আমরা তো তিন চার বছর ভুলিই না। ”
এই হলো আইনস্টাইনের মাথা আর আমাদের মাথা আর আমার ভাংগাচুরা মাথার জ্ঞান বা স্মৃতি শক্তি বা মনে রাখার ধারণের ক্ষমতা বা পরিধী।
এর আগেও বলেছিলাম যা আছে মাথায় আর যা আছে খসড়া খাতায় তার সংমিশ্রন ঘটিয়ে আবারও লেখা শুরু করব হারিয়ে যাওয়া বা মুছে যাওয়া পোষ্টগুলির বিষয় বস্তু থেকে কিন্তু তা আর হয়নি নানান কারণে, প্রথম আলো ব্লগে কারিগরি ক্রুটি ছিল, অনেক দিন সাইন ইন করতে পারি নি আর লেখার মধ্যে ধারাবাহিকতা ছিল না, এখন মনে হচ্ছে লেখার বড় একটি ভিত্তি হচ্ছে লেখার ধারাবাহিকতা।
একটা ধারণা মাথায় ভর করে বসলো বেশ শক্ত হয়ে, আজ যদি না লিখি তবে কাল আর লিখতে পারব না। যে প্রতিভা আমাকে লেখায় একদিন না লিখলে কী একটা ময়লার চাদরে বা আবরণে আমার লেখার প্রতিভা ঢেকে যাবে !!
কিছুটা নিশ্চিত হলাম, রবি ঠাকুরের গানে –
“যখন জমবে ধুলা তানপুরাটার তারগুলায়,
কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়, আহা,
ফুলের বাগান ঘন ঘাসের পরবে সজ্জা বনবাসের,
শ্যাওলা এসে ঘিরবে দিঘির ধারগুলায়–”
যেখানে আমার লেখার প্রতিভা আছে সেই লেখার তারে যেন ধুলা না জমে, প্রতিভার দুয়ারে কাঁটালতা যেন না জন্মে, প্রতিভার বাগান বাড়ি যেন ঘন ঘাসে ভরে না উঠে, প্রতিভার দিঘিতে যেন শ্যাওলা না জমে। আর এ জন্যই হয়তো মনের মধ্যে ও মাথার মধ্যে ধারণাটা ভর করলো লেখার যে প্রতিভা আমাকে লেখায় একদিন না লিখলে একটা ময়লার চাদরে বা আবরণে আমার লেখার প্রতিভা ঢেকে যাবে আর লেখা হবে না। তাই প্রতিদিন কিছু কিছু লেখার প্রচেষ্টা।
বেশ বুঝি মনের আবেগ দিয়ে, মেধার বিকাশ ঘটিয়ে আমাদের লেখা লেখি। লেখার বিষয়টা প্রতি দিন সকালে হাঁটা, কর্ম-স্থলের কাজ, বিকালে এক কাপ চা পানের মত নয়।
আমার উচ্চ পর্বত মালায় উঠা হয় নি, কয়লা খনিতে একজন শ্রমিক হয়ে কাজ করে কয়লা খনির কাজের অভিজ্ঞতা নেই, সমুদ্রে দীর্ঘ দিন কাটানো নাবিকের অভিজ্ঞতা নেই, অনেক সময় নানান অভজ্ঞতা ছাড়া লেখা যায় না, লিখতে গেলে অভিজ্ঞতার সাথে কল্পনার মিশ্রন লাগে, তাই অভিজ্ঞতা অর্জনের পথে যাত্রা হোক শুরু, সাথে অভিজ্ঞতার সাথে কল্পনার সাথে, আবেগ মিশিয়ে শুরু হোক দক্ষ কলমের লেখা।
তারিখ: মে ১৪, ২০১৪
রেটিং করুনঃ ,