জীবনের প্রথম সম্পত্তি সংক্রান্ত ধাক্কাটা খেলাম, সেটির ভার বহন করাটি বেশ কঠিন হয়ে দাড়ালো আমার পক্ষ্যে, শারীরিক ও মানুষিক ভাবে অনেকটা ভঙ্গুর দশা, স্বাভাবিক হওয়ার বরংবার চেষ্টা করার পরেও স্বাভাবিক হওয়াটা বেশ কষ্ট সাধ্য হয়ে দাড়াচ্ছিল। এমন বড় ধরণের একটি ধাক্কা মোকাবেলা করার সামর্থ আসলে আমার নেই।
হয় তো নিচে পড়ে গিয়েছি, আরও অনেক অনেক নিচে পড়ে যাওয়ার কথা, সামনের যে দিনগুলি তা ধীরে ধীরে আবছা হয়ে উঠেছে, এক সাথে অনেকগুলি স্বপ্নের মৃত্যুকে বরণ করে নেওয়াটা প্রকৃতই কঠিন।
ঘুরে দাড়ানোর কথা ভাবছি, অর্থ শালী হয়ে একটি প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টার কথা ভাবছি, প্রকৃতই মানুষকে শুধুই নিজ স্বার্থবাদীই মনে হচ্ছে।
প্রথম থেকে আমি নিশ্চিত ভাবে একজনের শুষ্ক প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলাম যার ফলে আমি ছিলাম বিয়োগের খাতায় হয় তো শিকারী হয়েছিলাম বহু আগে থেকে আক্রমনের, অবশেষে আমারই হলো পরাজয়।
পরাজিত হয়ে জয়ি হওয়ার একটি চেষ্টা করা যায় তাতে সামান্য লাভ অবশ্যই আছে সেটাই আমার প্রয়োজন। এপ্রিল ২০, ২০১৮।
ধাক্কা খাওয়ার পরে নতুন পথে পা বাড়ানোর লোভটা ছিল আমার কাছে বড়, তাই অর্থহীন কারো দেওয়া মিথ্যা প্রতি্শ্রুতিটাকে আমিও ধাক্কা মেরে ফেলে দিলাম ভূয়া সম্পত্তি যা দিতে চেয়েছিল বিশেষ স্বার্থে তাকে পাঠিয়ে দিলাম ডাষ্টবিনে।
করণীয় একটি পথেই খোলা- নতুন মাত্রার লেখার। লেখার জন্য জেগে উঠা, আমার কী করনীয় তা বেশ দ্রুতার সাথে গুছিয়ে ফেলছি, আমাকে লেখক হতেই হবে আর মানুষের ভিতরে থাকা স্বার্থের ধরণগুলি সাবার সামনে তুলে ধরাই হবে একজন লেখক হয়ে নিজেকে তৈরী করা।
হয় তো জীবন যে ভাবে চলে সে ভাবেই চলত কিন্তু ধাক্কাটা সামনের দিকে যখন এগিয়ে চলার দুয়ার খুলে দিল তখন পৃথক হতে থাকলাম যাদের প্রিয় জন হিসাবে জানতাম। স্বাতন্ত্র জীবন ধারা, যেখানে যে সমস্ত রক্ত-বহনকারী সদস্যদের প্রয়োজনীয়তা বোধ হলো না আর, মনে হলো স্বার্থে কারণে জন্ম তাদের, নিজ স্বার্থ উদ্ধারে জীবন যাপন, স্বার্থের লড়াই প্রতি মূহুর্তে এই জন্য জন্ম তাদের, স্বার্থের পিছনে ছুটে চলা, স্বার্থ রক্ষায় যুদ্ধ বাঁধানো।
একটি বিষয়ে আগে থেকে ধারণা ছিল, লেখা-লিখি নিয়ে মানুষেরা একটি প্রবল মানসিক শক্তি নিয়ে এগিয়ে চলে, স্বাচ্ছল্যবান না হলেও একজন আদর্শবান মানুষ হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্টিত করতে পারে- এটাই ছিল বড় লক্ষ্য। জীবনটা একটি সরাইখানা মহাজ্ঞানীর এই দর্শণটি জীবনে চলার পথে বড় অনুপ্রাণিত করেছে আমাকে, সেই সাথে আমিও বুঝতে চলার চেষ্টা করেছি জীবন প্রচন্ড উন্নত গতিতে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে ফলাফলটা যেটাই হোন না কেন ! ফলাফল একটি ভালোই থাকে যা কিছু না হলেও উন্নত মানের ধরা যায়।
লেখালিখি একটি পথ দেখাবে এই স্বপ্ন নিয়ে যখন পথ চলা শুরু হলো তখন শরীরে কিছু রক্ত-বহনকারী সদস্যদের প্রয়োজনীয়তা বিলুপ্ত হয়ে পড়ল, সেই সাথে ছোট বেলার জমি-সম্পত্তি নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যে লোভ লালসা তা বেশ দ্রুতই আমাকে বিশুদ্ধের পথে নিয়ে চলল। ধীরে ধীরে একজন লেখক হিসাবে পরিচিতি পেতে থাকলাম, লেখক পরিচিতি পাওয়াটা কোন কিছুর বিনিময়ে নয়, কোন প্রত্যাশার বিনিময়ে নয়, নিজ স্বার্থ রক্ষার কারণে নয়। এটি যেন খুব সাবলিল ধারা, শান্ত নদীতে স্রোতের চলাচল, খোলা বাতাসে আলোর চলাচলা, খুব স্বাভাবিক তাই লিখে যাওয়া নির্ভয়ে গাছের ডালে ঘুঘু পাখিটির বসে থাকা যতক্ষণ ইচ্ছা বা অচমকা কারণে হঠাৎ উড়ে যাওয়া।
আমার লেখক হওয়াটা স্রোতের চলাচলের মত, খোলা বাতাসে আলোর চলাচলের মত, অচমকা কারণে হঠাৎ উড়ে যাওয়া বা গাছের ডালে ঘুঘু পাখিটির বসে থাকা যতক্ষণ ইচ্ছার মত।
তারিখঃ জুন ২০, ২০১৮
রেটিং করুনঃ ,