লেখক: মইনুল হাসান।
খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে রচিত রামায়ণ ও মহাভারতে লবঙ্গের উল্লেখ আছে। চিরসবুজ লবঙ্গগাছের ফুলের কুঁড়িকেই বলে লবঙ্গ বা লং। জনপ্রিয় মসলা লবঙ্গ শুধু খাবারের স্বাদ, ঘ্রাণই বৃদ্ধি করে না, পচন নিরোধক, ক্ষতিকর অণুজীবনাশক এবং অনেকটা অবশকারী গুণাবলির কারণে এর নামডাক আছে। রান্নার স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি এশিয়া ও আফ্রিকার অনেক দেশেই এখনো ঔষধি উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয় লবঙ্গ।
এসব ছাড়াও লবঙ্গ সাধারণভাবে দাঁতের ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে। দাঁতের ক্ষয়রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। লবঙ্গের ভেতর রয়েছে ‘ইউজেনল’ নামের একটি যৌগ, যা এর সুগন্ধের মূল কারণ। এটির ৭২ থেকে ৯০ শতাংশই ইউজেনলে ভরপুর। যৌগটি জীবাণু ও ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। এতে আরও আছে ক্যারিওফিলিন নামের আরেকটি যৌগ, যা একধরনের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান। মুখগহ্বরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া কমিয়ে দুর্গন্ধ দূর করে লবঙ্গ। হজমে সহায়তা করে। গলাব্যথা, গলা খুসখুস এবং বমি বমি ভাব দূর করে। খুশকি ও চুল পড়ার সমাধানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে লবঙ্গ। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে, ক্যানসার প্রতিরোধে, আলসার নিরাময়ে, হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায়, সর্দি–কাশিতেও এটি বেশ উপকারী। লবঙ্গ মূত্রনালির সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং মূত্রনালিতে পাথর তৈরি হতে বাধা দেয়।
প্রস্তুতপ্রণালি: এক কাপ গরম পানিতে ৫-৬টি লবঙ্গ জ্বাল দিয়ে সরাসরি পান করা যায় বা অনেকেই এর সঙ্গে আদা, লেবু, তেজপাতা এবং তিতকুড়ি স্বাদ থেকে নিস্তার পেতে মধু মিশিয়ে পান করতে পছন্দ করেন। এ ছাড়া চিবিয়ে খাওয়া যায়। দাঁতের নানা সমস্যার সমাধান ছাড়াও খাবারের বিষক্রিয়া সারাতে, হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে, এমনকি ক্যানসার প্রতিরোধে খাওয়া যেতে পারে লবঙ্গ।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: লবঙ্গের ইউজেনলের গুণাগুণ থাকলেও মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে তা হবে হিতে বিপরীত। আর তা ছাড়া অতিরিক্ত লবঙ্গ খেলে যকৃতের ক্ষতি হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা গর্ভবতী বা বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদের এবং ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের যথেচ্ছ লবঙ্গ না খেতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তারা এ ব্যাপারে চিকিত্সকের পরামর্শ নিয়ে তবে খেতে পারে।
সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ নভেম্বর ১০, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,