লং কোভিড বা কোভিড হওয়ার পরও যাঁদের দীর্ঘ দিন অসুখের প্রভাব রয়ে যাচ্ছে, তাঁদের জীবনে হঠাৎ নেমে এসেছে এক রাশ অনিশ্চয়তা। শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য, কোনওটাই ঠিক রাখা যাচ্ছে না। প্রত্যেক দিনই যেন একটা নতুন যুদ্ধ। কী করে লড়াই করবেন এই অবস্থায়? নিজেকে ভাল রাখার রসদ খুঁজে নিতে হবে নিত্য দিনের ছোট ছোট জিনিসে থেকেই।
খাওয়া-দাওয়াই শেষ কথা নয়
মেটমাধ্যমে নানা রকম ডায়েটের আশ্চর্য উপকারিতার কথা পড়ে থাকতে পারেন। কিন্তু মনে রাখবেন, কোনও ডায়েটই আপনাকে এক দিনে সারিয়ে তুলবে না। তবে একজন পেশাদার পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে পারেন। এবং সেটা মেনে চললে ধীরে ধীরে উপকার নিশ্চয়ই পাবেন।
অসুস্থ হলে আমাদের সেরে ওঠার তাগিদ থাকে ভিতর থেকেই। কিন্তু নিজের শরীরকে বুঝুন। ব্যায়াম করা জরুরি। কিন্তু যদি দেখেন শরীরে অত্যাধিক চাপ পড়ছে, তা হলে একদিন বিরতি নিন। ক্লান্ত লাগলে ঘুমিয়ে পড়ুন। ঠিক তেমনই মনের পরিস্থিতি। আমরা জানি, এই সময়ে ইতিবাচক চিন্তা বজায় রাখা কতটা জরুরি। কিন্তু তাই বলে কি সারাক্ষণ খুশি থাকা সম্ভব? কখনও মন খারাপ হলে, ভেঙে পড়লে, কাঁদতে ইচ্ছে করলে বা চুপচাপ বসে থাকব মনে হলে তাই করুন। যে পরিস্থিতিতে আপনি শান্তি পাবেন, তাই করুন। যদি একদিন মনে হয় শরীরচর্চা বা নিঃশ্বাসের ব্যায়াম না করে প্রিয় নেট সিরিজটা ফের একবার টানা দেখবেন, তা হলে সেটাই করুন।
ভাল-মন্দ মিশিয়ে
দীর্ঘ রোগের সঙ্গে লড়াই করা সহজ নয়। কোনওদিন আপনি অনেকটা সুস্থ বোধ করবেন। হতে পারে পরদিনই আবার একটুতেই হাঁপিয়ে পড়ছেন। কিন্তু সেটাকে নিজের পরাজয় হিসেবে দেখবেনা না। বরং রোজকার ছোট ছোট জয়ে মনোযোগ দিন। গতকালের তুলনায় দু’পা বেশি হাঁটতে পারছেন? গত সপ্তাহের তুলনায় বেশি এনার্জি পাচ্ছেন? তা হলে সেগুলোই আপনার বড় জয়।
হজমের সমস্যায় মন দিন
অনেক সময় আমরা কোনও ব্যথা-কষ্ট সহ্য না করতে পারলে ব্যাথা কমানোর ওষুধ খাই। সাময়িক ভাবে নিস্তার পেলেও আরও অন্য সমস্যা তৈরি করে এই ওষুধগুলি। যেমন অ্যাসিডিটি বা পেট ফুলে থাকার সমস্যা। প্রাকৃতিক ভাবে এর মোকাবিলা করতে হলে দই, আচারের মতো খাবার খেতে পারেন। পেটের সমস্যা অনেকটাই কমবে এবং নিজেও অনেকটা হালকা বোধ করবেন।
নিজের মতো মানুষ খুঁজুন
পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব আপনার কঠিন সময়ের সবচেয়ে বড় ভরসা। কিন্তু অনেক সময়ে মনে হতে পারে, তাঁরা ঠিক আপনাকে বুঝতে পারছেন না। তাই আপনার মতো যাঁরা লং কোভিডে আক্রান্ত তাঁদের খুঁজে বার করা প্রয়োজন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে দুঃখ-কষ্টগুলি ভাগ করে নিলে অনেক সমাধানও হতে পারে। কী করে খুঁজবেন। অবশ্যই নেটদুনিয়ায়। ইনস্টাগ্রাম বা ফেসবুকে এই ধরনের প্রচুর গ্রুপ তৈরি হয়েছে যেখানের আপনার মতো হাজার হাজার মানুষ তাঁদের গল্প বলছেন। সেগুলো পড়লে, তাঁদের সঙ্গে কথা বললে, বুঝতে পারবেন, আপনি একা নন।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
তারিখ: মে ০৭, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,