Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

রাহুল সক্রিয়, মমতা উদ্যমী, মোদি নির্ভাবনায় (২০২১)

Share on Facebook

লেখক: সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়

ইদানীং একটু বেশিই চনমনে রাহুল গান্ধী। টুইটে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়মিত আক্রমণ করছেন। দুর্গত মানুষের পাশে যাচ্ছেন। এখন সংসদ চলছে। অধিবেশন মুলতবি হোক না হোক, রাহুল প্রতিদিন হাজির হচ্ছেন। বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলছেন। কী করে সংসদের ভেতর ও বাইরে বিজেপিবিরোধী ঐক্য মজবুত করা যায়, তা নিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। ট্রাক্টর ও সাইকেল চালিয়ে পার্লামেন্টে গিয়ে জনমত তৈরি করছেন। এমন সক্রিয়তা অনেক দিন দেখা যায়নি।

কাকতালীয় কি না জানি না, এই অতি সক্রিয়তার শুরু তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক দিল্লি সফরের আগুপিছু। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে বেইজ্জত করার পর মমতার দৃষ্টিতে এখন দিল্লি। গত ২১ জুলাইয়ের ভার্চ্যুয়াল সম্মেলনেই তিনি দিল্লি সফরের উদ্দেশ্য স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, বিজেপিবিরোধী ব্যাপক জোট গঠনই তাঁর উদ্দেশ্য। জোটের মধ্যমণি ও মোদিবিরোধী মুখ কে হবেন, সেই প্রশ্ন ঊহ্য রেখে তিনি বুঝিয়েছিলেন, আপাতত তাঁর ভূমিকা বাগানের মালির। ফুল ফোটানোই তাঁর উদ্দেশ্য। মূল জিজ্ঞাসা ঊহ্য রাখলেও জোটের নেত্রী হিসেবে তিনি যে নিজেকেই দেখতে চাইছেন, আভাসে–ইঙ্গিতে মমতা তা গোপন করেননি। দলীয় নেতারা তো প্রকাশ্যেই বলেছেন, তাঁকেই তাঁরা ভাবী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাইছেন। এ বিষয়ে মমতার উত্তর, ‘ওসব পরের কথা। আমি জ্যোতিষী নই।’

মমতার এবারের সফর ঘিরে তাই আগ্রহ ছিল আঠারো আনা। রাজধানীতে কোনো রাজনৈতিক সফরের গুরুত্ব বিচারের একটা মাপকাঠি হলো জাতীয় গণমাধ্যমের আগ্রহ ও নড়াচড়া। মমতা বছরে একাধিকবার দিল্লি আসেন। তাঁকে ঘিরে মিডিয়ার স্বাভাবিক কৌতূহলও থাকে। কিন্তু এবার তা অতীতকে ছাপিয়ে গেছে! মিডিয়ার প্রচার এবার অভূতপূর্ব! এর একটা কারণ যদি হয় একপেশে রাজনীতির ক্লান্তি, অন্য কারণ তাহলে সর্বভারতীয় স্তরে নরেন্দ্র মোদিকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো চরিত্রের আবির্ভাব। মমতার আগমন ঝিমিয়ে থাকা মিডিয়াকে গা-ঝাড়া দিয়ে উঠতে সাহায্য করেছে। ভাবখানা এমন যেন মমতা হলেন নব্বইয়ের দশকের হরকিষেণ সিং সুরজিৎ, বিরোধী ঐক্যের অনুঘটক, যাঁর কল্যাণে অন্তত ফাঁকা মাঠে গোল খেতে হবে না!

মমতার এই উদ্যমই কি রাহুলের অতি সক্রিয়তার কারণ? তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা তেমন মনে করলেও সেই ভাবনা অতি সরলীকরণ হবে। বেশ কিছুদিন ধরেই রাহুলকে দলীয় ও জাতীয় বিষয় নিয়ে উৎসাহী হতে দেখা যাচ্ছে। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং ও নভজ্যোত সিং সিধুর লড়াইয়ের ইতি টেনেছেন। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট ও শচীন পাইলটের দ্বন্দ্ব থামাতে সচেষ্ট। মমতার বিরুদ্ধে উপনির্বাচনে প্রার্থী না দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস সভাপতির জোটবিরোধী কথাবার্তা বন্ধ করেছেন। ছত্তিশগড়ে মুখ্যমন্ত্রী বদলের দাবি গোচরে এনেছেন। কৃষক আন্দোলনে লাগাতার সমর্থন জানাচ্ছেন এবং ফি দিন মোদিবিরোধী প্রচারের অস্ত্রে শাণ দিচ্ছেন। দল ও দলের বাইরের যাঁরা রাহুলকে ‘অ্যামেচার পলিটিশিয়ান’ বলে ঠেস দেন, এই রূপান্তরে আপাতত তাঁরা চুপ।

এই ধারাবাহিকতা রাহুল ধরে রাখতে পারবেন কি না, প্রশ্ন সেটাই। দলের রাশ হাতে নেওয়ার যাবতীয় আড়ষ্টতা পালক থেকে হাঁসের জল ঝাড়ার মতো ঝেড়ে ফেলছেন, এটা দেখতে দল মুখিয়ে রয়েছে। রাহুল তাদের নিশ্চিত করবেন কি না, বিপুল ধন্দ সেখানেই। হ্যাঁ, এখনো। দল চায় অনিশ্চয়তার পেন্ডুলাম হয়ে না থেকে রাহুল দৃঢ় ও ঋজু হোন। কিন্তু রাহুল নিজে কী চান ‘দেবা না জানন্তি, কুতো: মনুষ্যা’(ঈশ্বর যা জানে না, তা মানুষ জানবে কী করে!)।

এই শূন্যতা ভরাটেই মমতার আগমন। রাহুলেরও নড়েচড়ে বসা।

বিজেপি অবশ্য এখনই চিন্তিত নয়। তাদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ নেই। কারণ, লোকসভার ভোটের বাকি পাক্কা ২ বছর ১০ মাস। রাজনীতিতে এ বিস্তর সময়। তাদের এ মুহূর্তের চিন্তা উত্তর প্রদেশ নিয়ে। মোদি জানেন, আগামী বছরের গোড়ায় উত্তর প্রদেশের ভোট শুধু মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ভাগ্যই গড়বে না, বিনা আয়াসে তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর তখত তাঁরই কি না, তা–ও ঠিক করবে। কেননা, ভারতীয় রাজনীতির আদি সত্য হলো দেশ দখলের জন্য দিল্লি আসতে হয় লক্ষ্ণৌ ঘুরে। উত্তর প্রদেশের হাওয়া খুব সুবিধের নয়। কোভিড, বেকারত্ব, কৃষক ক্ষোভ, শরিকি অসন্তোষ, জাতভিত্তিক সমাজে ঠাকুরদের প্রতি ব্রাহ্মণ-অনগ্রসরদের রাগ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মুখ্যমন্ত্রীর পথের কাঁটা। হাওয়া ঘোরাতে মোদি-শাহ জুটি যা চাইছেন, তাতে বাগড়া দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। আদিত্যনাথের ইচ্ছা মানা ছাড়া বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আর কোনো উপায় আপাতত নেই।

সাত বছর পর জৌলুশ ফিকে হলেও জনপ্রিয়তার জরিপে মোদি এখনো অন্যদের তুলনায় এগিয়ে। তিনি আরও আশ্বস্ত বিরোধীদের মুখহীনতায়। শরদ পাওয়ার অসুস্থ। বয়সের ভারেও জীর্ণ। সোনিয়া গান্ধীও তথৈবচ। রাহুল নিজেকে নিয়ে নিশ্চিত নন। শূন্যতা পূরণে মমতা আগ্রহী। কিন্তু সর্বগ্রাহ্য কি? ফলে মোদি বনাম কে, সেই অনন্ত জিজ্ঞাসা ভেসেই থাকছে মোদির পক্ষে পাল্লা ঝুলিয়ে।

পাল্লা এখনো ভারী, কারণ লোকসভার ৫৪৩ আসনের মধ্যে ৩৫০টিতে বিজেপির সঙ্গে লড়াই আঞ্চলিক দলগুলোর। এদের মধ্যে ওডিশায় বিজেপি, অন্ধ প্রদেশে ওয়াইএসআর কংগ্রেস, তেলেঙ্গানায় টিআরএস, তামিলনাড়ুর এআইএডিএমকে ও উত্তর প্রদেশে বিএসপির সঙ্গে বিজেপির বোঝাপড়া শুরু থেকেই। উত্তর-পূর্ব ভারতের হালও সেই রকম। যার দরুন রাজ্যসভায় বিল পাসে সরকারকে দ্বিতীয়বার ভাবতে হয় না। দুই শর মতো আসনে বিজেপির প্রধান চ্যালেঞ্জার ক্ষয়িষ্ণু কংগ্রেস। ভোটও দেশের নেতা নির্বাচনের, যেখানে মানুষ শক্তিশালী চরিত্রকেই পছন্দ করে।

আরও একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। প্রবল জনরোষে ১৯৭৭ সালে ইন্দিরা বা ১৯৮৯ সালে রাজীব খড়কুটোর মতো ভেসে গিয়েছিলেন। বিকল্প মুখ তখন গৌণ হয়ে গিয়েছিল। তিন বছর পর জনরোষ সেই তীব্রতা নিলে জোটের মুখ নিয়ে জল্পনাও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে। এখনো তেমন আভাস কিন্তু নেই।

প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ঐতিহাসিক নির্ভেজাল স্বীকারোক্তি, তিনি নিজেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য মনে করতেন না। কারণ, নেহরু, ইন্দিরা, বাজপেয়ি, জ্যোতি বসু বা মমতার মতো জনমোহিনী ক্ষমতা তাঁর ছিল না। তা ছাড়া তিনি মনে করতেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর হিন্দিভাষী হওয়া জরুরি। মমতার এই দ্বিতীয় গুণটির বড়ই অভাব। রাহুলের আবার জনতাকে উদ্বেল করার ক্ষমতা নেই। ভাবমূর্তি যথেষ্ট ফিকে হলেও মোদির মাথা তাই অন্যদের চেয়ে এখনো উঁচুতে। অতি সক্রিয় রাহুল কিংবা উদ্যমী মমতা তাই এখনো মোদির কপালে দুশ্চিন্তার রেখা গভীর করতে পারেননি। কিন্তু বিচক্ষণ তিনি এ কথাও জানেন, দেবগৌড়া বা ইন্দ্র কুমার গুজরালরাও ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন জোট রাজনীতির সৌজন্যে। জোটে জট পাকাতে সেই চেষ্টায় বিজেপি ঘাটতি রাখবে কেন?

লেখক: সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম আলোর নয়াদিল্লি প্রতিনিধি
সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: আগষ্ট ০৮, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

,

নভেম্বর ২২, ২০২৪,শুক্রবার

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ