ইউক্রেনে হামলার পর থেকেই রাশিয়ার উপর আর্থিকসহ নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ও লেনদেনের উপরও নিষেধাজ্ঞা এসেছে। ফলে রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় চলমান রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা ব্যক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে ইউক্রেন ইস্যুতে বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে দাবি করেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার রাষ্ট্রয়াত্ব পরমাণু সংস্থা রোসাটম। মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন দাবি করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোসাটম জানায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি এবং কাজের শিডিউলে কোন বিঘ্ন ঘটার সম্ভাবনা নেই। ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যকার চলমান সঙ্কটে রূপপুর প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রশ্ন ওঠার পরিপ্রেক্ষিতেই এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
তবে অর্থনীতিবিদ ও খাত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউক্রেন ইস্যুতে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এই প্রকল্প বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাদের মতে , প্রকল্পটিতে ঋণ হিসাবে অর্থের বড় অংশের যোগান দিচ্ছে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়াত্ব ভিবি ব্যাংক। এই ব্যাংকের উপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ফলে রূপপুর প্রকল্পের অর্থায়ন নিয়ে শঙ্কা থেকেই যায়।
বাংলাদেশ একক প্রকল্প হিসাবে সবচেয়ে বড় রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। এর ৯০ শতাংশ অর্থ ঋণ হিসেবে যোগান দিচ্ছে রাশিয়া।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গত শুক্রবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান সমকালকে বলেন, এটি একটি জাতীয় ইস্যু। এ বিষয়ে আমার কেনো বক্তব্য নেই। প্রধানমন্ত্রীর হয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি দেখছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান বলেন, আমরা ইউক্রেন পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। তবে এজন্য রূপপুর প্রকল্পের কাজ বিঘ্নিত হবে না বলে মনে হয়। কারণ কাজ এগিয়ে চলছে। আর এখানে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করছে তাদের অধিকাংশই রাশিয়ার। ওদের পেমেন্ট হয় রাশিয়ায়। এ ছাড়া প্রকল্পে রাশিয়া ছাড়া ইউক্রেনের অনেক কর্মী রয়েছে। তারাও কাজ করছে। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, রূপপুর প্রকল্পের বিনিয়োগ তো রাশিয়ার। সেখানে কাজে বিলম্ব হলে তাদেরই ক্ষতি।
২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর রূপপুর প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক নির্মাণ কাজ শুরু হয়। গত বছরের অক্টোবরে প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল বা পরমাণু চুল্লি স্থাপন করা হয়। সরকার আশা করছে, আগামী বছর ১২০০ মেগাওয়াটের ইউনিটটি উৎপাদনে আসবে। সমান ক্ষমতার অন্য ইউনিট ২০২৪ সালে চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
সূত্রঃ সমকাল।
তারিখঃ মার্চ ০১, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,