লেখা: এএফপি মস্কো।
ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী কোম্পানি ভাগনারের বিদ্রোহ ঠেকানোর মধ্য দিয়ে রাশিয়ার সেনারা কার্যত গৃহযুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ক্রেমলিনে সেনাদের এক জমায়েতে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এসব কথা বলেছেন। এ সময় বিদ্রোহ ঠেকাতে গিয়ে নিহত পাইলটদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন থাকা সেনাদের পাশাপাশি ন্যাশনাল গার্ড ও ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের (এফএসবি) সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের উদ্দেশ করে পুতিন বলেন, ‘আপনারা কার্যত গৃহযুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছেন।’
ক্রেমলিনের ক্যাথেড্রাল স্কয়ারে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে লালগালিচায় দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেন পুতিন। সামনে ছিল বিভিন্ন বাহিনীর পোশাকধারী সদস্যরা। পেছনে রাশিয়ার পতাকা ও বেয়নেট হাতে দাঁড়িয়েছিলেন সেনাদের কয়েকজন।
বিদ্রোহের পর পুতিন বেশ কয়েকবার বক্তব্য দিয়েছেন। দুই দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা পুতিনের জন্য এ বিদ্রোহ ছিল সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা হুমকি।
আজ পুতিন বলেন, ‘রাশিয়ার জনগণ ও সামরিক বাহিনীতে যোগদানের সময় যে শপথ নিয়েছেন, তার প্রতি আপনারা নিজেদের আনুগত্য প্রমাণ করেছেন। মাতৃভূমির ভাগ্য ও এর ভবিষ্যতের প্রতি আপনার দায়িত্বশীলতা দেখিয়েছেন।’
এই বিদ্রোহ মোকাবিলা করতে গিয়ে কয়েকজন পাইলটের মৃত্যু হয়। তবে কতজন পাইলট নিহত হয়েছেন, তা প্রকাশ করা হয়নি। তাঁদের স্মরণে আজ অনুষ্ঠানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পুতিন বলেন, ‘বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে আমাদের সশস্ত্র কমরেড, পাইলটরা নিহত হয়েছেন। তাঁরা মাথানত করেননি এবং সম্মানজনকভাবে অর্পিত নির্দেশনা ও সামরিক দায়িত্ব পালন করেছেন।’
মস্কো অভিমুখে যাত্রা করা ভাগনার বিদ্রোহীরা জনগণ ও সেনাবাহিনীর সমর্থন পায়নি জানিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিদ্রোহে জড়ানো লোকজন দেখেছে সেনাবাহিনী ও দেশের জনগণ তাদের সঙ্গে নেই।’
ভাগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন বিদ্রোহ ঘোষণা করে গত শনিবার তাঁর বাহিনী নিয়ে ইউক্রেন সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার রাজধানী মস্কো অভিমুখে যাত্রা করেছিলেন।
পরে বেলারুশের মধ্যস্থতায় তিনি এই অভিযাত্রা বন্ধ করেন। সমঝোতায় বলা হয়, প্রিগোশিন বেলারুশে চলে যাবেন। বিদ্রোহের কারণে আনা অভিযোগ প্রত্যাহার হবে।
বিদ্রোহ থেকে সরে আসার পর গতকাল সোমবার প্রথমবারের মতো অডিও বার্তা দেন প্রিগোশিন। এতে তিনি দাবি করেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ক্ষমতাচ্যুত করতে নয়, বরং প্রতিবাদ জানাতে মস্কো অভিমুখে যাত্রা করেছিল তাঁর বাহিনী।
এই বিদ্রোহের পর পুতিন গতকাল প্রথম জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি ভাগনার প্রাইভেট মিলিটারি কোম্পানির (পিএমসি) যোদ্ধাদের সামনে তিনটি বিকল্প দেন।
ভাগনার বাহিনীকে অস্ত্র ফেরত দিতে হবে: রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
বিবিসি।
ভাগনার বাহিনীকে তাদের সামরিক অস্ত্র ফেরত দিতে হবে বলে জানিয়েছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে এটি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়টি। বার্তা আদান–প্রদানের মাধ্যম টেলিগ্রামে মন্ত্রণালয়টি এক বিবৃতিতে জানায়, রাশিয়ান ফেডারেশনের সশস্ত্র বাহিনীর সক্রিয় ইউনিটগুলোতে পিএমসি ‘ভাগনার’ ভারী সামরিক সরঞ্জাম স্থানান্তরের প্রস্তুতি চলছে।
এর আগে পুতিন বলেছিলেন, ভাগনার সদস্য যাঁদের বেশির ভাগই সত্যিকারের দেশপ্রেমিক, যাঁরা বিভ্রান্ত হয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছিলেন, তাঁরা নিয়মিত সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে পারেন অথবা তাঁরা চাইলে পরিবারের কাছে ফিরে যেতে বা বেলারুশে যেতে পারেন বলে প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
একই সময়ে সাংবাদিকেরা খবর পান, যাঁরা এই বিদ্রোহে অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সব ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস। এমনকি যাঁরা ইতিমধ্যে সশস্ত্র বিদ্রোহের জন্য বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও অভিযোগ তুলে নেওয়া হবে।
ভাগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন বিদ্রোহ ঘোষণা করে গত শনিবার তাঁর বাহিনী নিয়ে ইউক্রেন সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার রাজধানী মস্কো অভিমুখে অভিযাত্রা করেছিলেন। পরে বেলারুশের মধ্যস্থতায় তিনি এ অভিযাত্রা বন্ধ করেন। সমঝোতায় বলা হয়, প্রিগোশিন বেলারুশে চলে যাবেন। বিদ্রোহের কারণে আনা অভিযোগ প্রত্যাহার হবে।
বিদ্রোহ থেকে সরে আসার পর গতকাল প্রথমবারের মতো অডিও বার্তা দেন প্রিগোশিন। এতে তিনি দাবি করেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ক্ষমতাচ্যুত করতে নয়, বরং প্রতিবাদ জানাতে মস্কো অভিমুখে যাত্রা করেছিল তাঁর বাহিনী।
সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:জুন ২৭, ২০২৩
রেটিং করুনঃ ,