Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া খেলাপি ঋণ কমবে না-অর্থনীতিবিদ সম্মেলন (২০২৩)

Share on Facebook

দুই জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ বললেন, খেলাপি ঋণ একটি বড় সমস্যা।আইএমএফ শর্ত দিলেও রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া তা কমবে না।

খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা।

রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকে খেলাপি ঋণের হার ২৩%, যা কমিয়ে ১০ শতাংশে নামাতে বলেছে আইএমএফ।

২০০৯ সালে খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা।

——————————–

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান বলেছেন, সাধারণ মানুষ ব্যাংকে যে আমানত রাখছেন, তার একটা অংশ নিয়ে যাচ্ছেন প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা। নিয়ে তা ফেরতও দিচ্ছেন না। এতে খেলাপি ঋণ বাড়ছে, যা ব্যাংক খাতে একটা বড় সমস্যা।

আরেক অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ মনে করেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া খেলাপি ঋণ কমবে না। এমনকি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বললেও কমবে না।

রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ সানেম বার্ষিক অর্থনীতিবিদ সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়ার সময় এ দুই অর্থনীতিবিদ এসব কথা বলেন।

আইএমএফ বাংলাদেশকে যে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে, তাতে অন্য অনেক শর্তের মধ্যে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার শর্তও রয়েছে। আইএমএফ বলেছে, রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের নিচে রাখতে হবে। আর বেসরকারি ব্যাংকের ক্ষেত্রে তা রাখতে হবে ৫ শতাংশের নিচে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ৩৩ হাজার কোটি বেড়ে ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকে খেলাপি ঋণের হার ২৩ শতাংশ। বেসরকারি ব্যাংকে ৬ শতাংশের কিছু বেশি। সার্বিকভাবে মোট ঋণের ৯ শতাংশের বেশি খেলাপি।

অবশ্য ব্যাংকাররা বলছেন, প্রকৃত খেলাপি ঋণ আরও বেশি। কারণ, বারবার পুনঃ তফসিল ও অবলোপন করে খেলাপি ঋণ গোপন করা হয়। আর অনেকে খেলাপি হয়ে পড়লেও তা হিসাবে দেখানো হয় না।

এমন পরিস্থিতিতে গতকাল সানেমের অর্থনীতিবিদ সম্মেলনের প্রথম দিনের দ্বিতীয় অধিবেশনে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘বহু দশক ধরে দেখেছি, কাগজে সই করলেই কি খেলাপি ঋণ কমে যাবে? এটা তো সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক ব্যাপার। খেলাপি ঋণ কমানোর শর্তের মাধ্যমে আইএমএফের আমলাতন্ত্র খুশি, আমরাও খুশি।’

ঋণ দিতে এবার আইএমএফ বেশি শর্ত আরোপ করেনি—পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুরের এমন বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ কথাগুলো বলছিলেন।

বড় বড় ঋণখেলাপিকে সুবিধা দিয়ে খেলাপির তালিকা থেকে নাম কাটানোর সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি উঠে আসে অধ্যাপক রেহমান সোবহানের বক্তব্যে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক মাত্র ২ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে খেলাপি থেকে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ দিচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এটা একটা অন্যায্য ব্যবস্থা।

সানেমের দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম। তিনি দ্বিতীয় অধিবেশনে ছিলেন না, যেখানে অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান ও ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ খেলাপি ঋণ নিয়ে কথা বলেন।

পরে এ বিষয়ে শামসুল আলমের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার যেহেতু রাষ্ট্র পরিচালনা করে, খেলাপি ঋণ কমাতে অবশ্যই সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা আছে। গত কয়েক বছর একটা দুর্যোগপূর্ণ সময় গেছে। অনেকেই ব্যবসায়ে লোকসান দিয়েছেন। কখনো কখনো ব্যবসায়ীদের এ কারণে একটু সুযোগ দিতে হয়েছে।’ তিনি বলেন, সরকার তো আর কাবুলিওয়ালা হতে পারে না।

প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম গত কয়েক বছরের দুর্যোগপূর্ণ সময়ের কথা বললেও খেলাপি ঋণের সমস্যা চলছে অনেক বছর ধরে। যেমন ২০০৯ সালে খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা, যা বছর বছর বেড়েছে।

যথেষ্ট বিচার-বিবেচনা ‘ছাড়া’ প্রকল্প

সানেমের সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে বক্তা ছিলেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান ও ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তাঁদের বক্তব্যে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, আইএমএফের ঋণ, সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয়, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত (রিজার্ভ), শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সরকারি ব্যয়সহ নানান বিষয় উঠে আসে।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, বিদেশি অর্থায়নে দেশে অনেক বেশি বৃহৎ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে যথেষ্ট বিচার-বিবেচনা ছাড়াই। প্রকল্পগুলো বেসরকারি বিনিয়োগকে কতটা আকৃষ্ট করবে, বিশেষ করে রপ্তানিকেন্দ্রিক শিল্পকারখানা তৈরির জন্য এগুলো উপযুক্ত কি না, তা ওইভাবে দেখা হয়নি। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নও হচ্ছে দেরিতে, যার খেসারত দিতে হচ্ছে অর্থনীতিকে।

রেহমান সোবহান বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত অবকাঠামো খাতের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। অথচ এ দুটি খাত সরকারের অগ্রাধিকার তালিকায় অনুপস্থিত। তিনি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষায় অংশগ্রহণ প্রায় শতভাগ হয়েছে। তবে গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষা কতটুকু হচ্ছে, তা গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর শিক্ষার গুণগত মান নিয়েও প্রশ্ন আছে রেহমান সোবহানের।

শিক্ষার ব্যয়ের প্রসঙ্গটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও উঠেছিল। তখন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, শিক্ষা খাতে সরকারি ব্যয় মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ শতাংশের বেশি। তিনি শিক্ষাব্যবস্থার বিকাশে বেসরকারি খাত ভূমিকা রাখছে বলে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

বিষয়টি উদ্ধৃত করে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী সজ্জন ব্যক্তি। কিন্তু শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে সরকারি ব্যয়ের বিকল্প নেই। বেসরকারি খাত থাকবে এ খাতে পরিপূরক হিসেবে। ভারত ও নেপালে এ খাতে সরকারি ব্যয় জিডিপির ৫ শতাংশের বেশি। শিক্ষা খাতে সরকারি ব্যয়ের দিক থেকে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা এখন সমান।

এক প্রশ্নের জবাবে রেহমান সোবহান বলেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং ভারতের আদানি পাওয়ারের মধ্যে যে বিদ্যুৎ কেনাবেচার চুক্তি হয়েছে, তা অদ্ভুত। বাংলাদেশ বিষয়টি নিয়ে দক্ষতার সঙ্গে দর-কষাকষি করতে পারেনি।
‘রিজার্ভের প্রবণতা গুরুত্বপূর্ণ’

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘রিজার্ভ নিয়ে আমরা আত্মতুষ্টি দেখেছি। এ রিজার্ভ থেকে প্রকল্পের জন্য ডলার খরচ করা হয়েছে। অথচ ভুলে যাওয়া হয়েছে যে রিজার্ভের অর্থ বাজেটের কাজে লাগানো উচিত নয়।’ তিনি বলেন, রিজার্ভের পরিমাণ কত বেশি, তা বড় কথা নয়। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে প্রবণতাটা। এক থেকে দুই বছরে রিজার্ভ কত কমে যাচ্ছে, সেটা দেখতে হবে। কমে গেলে, কমে যেতে দেওয়া যাবে না।

বাংলাদেশ আইএমএফের ঋণ নিচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমে যাওয়ায়। দেশে ২০২১ সালের আগস্ট মাসে রিজার্ভ ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার (৪৮ বিলিয়ন) ছাড়িয়েছিল। ২০২২ সালে যা কমতে কমতে ৩ হাজার ৩০০ কোটি (৩৩ বিলিয়ন) ডলারের নিচে নেমে যায়। বিপরীতে ৮৬ টাকার ডলারের দাম ওঠে ১০৬ টাকায়।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘রিজার্ভ একবার কমে যাওয়া শুরু করলে নিয়মনীতির মধ্যে থেকে তা সামাল দেওয়া আমাদের মতো আমদানিনির্ভর দেশের জন্য কঠিন। দেশের রিজার্ভ একসময় ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারও ছিল। ফলে পরিমাণ অনেক সময় বড় কোনো সমস্যা নয়।’

কোভিড মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দুর্ভাগ্যজনকভাবে অর্থনৈতিক যুদ্ধে রূপান্তরিত হয়েছে উল্লেখ করে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, তবে নতুন বছর ততটা খারাপ যাবে বলে মনে করা হচ্ছে না, যতটা খারাপ আগে অনুমান করা হয়েছিল। যেমন চীনের অর্থনীতি খুলে গেছে। ভারতও ভালো করছে। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা সমস্যায় আছে। বাংলাদেশ কোনোভাবে মোকাবিলা করছে, যদিও মূল্যস্ফীতির কারণে দরিদ্র ও নতুন দরিদ্ররা কঠিন জীবন যাপন করছে।

ভারত ও চীনের মতো দুই বড় অর্থনীতির দেশ থেকে বাংলাদেশের বাণিজ্যবিষয়ক সুবিধা নেওয়ার আছে বলে উল্লেখ করে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, এ বিষয়ে সতর্কতাও চাই। দুই বড় দেশের চাপে না স্যান্ডউইচ হয়ে যেতে হয়, সেই অর্থনৈতিক কূটনীতির দক্ষতাও অর্জন করতে হবে।
সংকট বৈশ্বিক না অভ্যন্তরীণ

সানেমের সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ও স্বাগত বক্তব্য দেন। আরও বক্তব্য দেন সানেমের চেয়ারম্যান বজলুল হক খন্দকার ও গবেষণা পরিচালক সায়মা হক।

এতে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, অর্থনৈতিক সংকট যতটা না বৈশ্বিক সৃষ্টি, তার চেয়ে বেশি অভ্যন্তরীণ। এ নিয়ে অবশ্য বেশি কিছু বলেননি তিনি।

রাজনীতি ব্যবসায়ীদের হাতে চলে গেছে বলে যে সমালোচনা করা হয়, এ নিয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের রাজনীতি রাজনীতিবিদদের হাতেই আছে, তবে সংসদে অনেক সদস্যই ব্যবসায়ী।

সেলিম রায়হান বলেন, অর্থনীতিকে টেকসই করতে গেলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার উন্নতি, সামাজিক তথা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে শক্তিশালী করা এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা দরকার। কর, আর্থিক খাত, বাজেট ব্যবস্থাপনা, রপ্তানি বহুমুখীকরণ এবং বাণিজ্য নীতির সংস্কার দরকার।

বাংলাদেশে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল বলে উল্লেখ করে সেলিম রায়হান বলেন, আমলাতন্ত্রের গুণগত মান বৃদ্ধি, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে।

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:ফেব্রুয়ারী ০৫, ২০২৩

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ