Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

রবীন্দ্রনাথ নিয়ে কিছু কথা

Share on Facebook

রবীন্দ্রনাথ মোট ১৭ বার বিদেশ গিয়েছেন।১৮৭৮ সালে ১৭ বছর বয়সে প্রথম নিলাত যাত্রা আর শেষ ১৯৩৪ সালে শ্রীলঙ্কায় তিয়াত্তর বছর বয়সে।পোলান্ড বাদে ইউরোপের সব দেশে গিয়েছেন।অস্ট্রেলিয়া বাদে বাকি সব মহাদেশেই গিয়েছেন।উপমহাদেশের প্রায় সব প্রদেশেই গিয়েছেন।

বাংলার মধ্যে দিনাজপুর,মুর্শিদাবাদ,পুরুলিয়া,ফরিদপুর যাননি।আর সবচেয়ে বেশি গিয়েছেন নদীয়া,রাজশাহী ও পাবনায়।কারন তাদের জমিদারি পরগনা ছিল এখানে। রবীন্দ্রনাথ বাল্যকালে প্রথম শিলাইদহে আসেন জমিদার তনয় হিসেবে।১৮৯১ সাল থেকে আসেন জমিদার হিসেবে।শেষ আসেন ১৯৩৭ সালে পতিসরে।পশ্চিম বাংলায় তিনি শেষ যান মেদিনীপুর জেলায়- বিদ্যাসাগর স্মৃতিভবনের উদ্বোধন করতে।প্রত্যেক রবীন্দ্রানুরাগী জানেন রবীন্দ্ররচনার প্রথম অভিনন্দন আসে ঢাকা থেকে। ঢাকা থেকে প্রকাশিত ‘বান্ধব’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন কালীপ্রসন্ন ঘোষ। তিনি প্রথম রবির কৈশোর রচনার প্রশংসা করেন। ত্রিপুরার রাজা বীরচন্দ্র মানিক্য তো প্রথম রবীন্দ্র রচনানুরাগী।কবির লেখা ভগ্নহৃদয় কাব্য পড়ে তিনি সম্মান জানিয়েছেন পুত্রতুল্য কবিকে।১৯১৯ সালে কবির শ্রীহট্ট সফর নিয়ে কবি প্রনাম নামে সংকলন বার করা হয়। কুমিল্লা সফর নিয়েও ত্রিপুরা হিতসাধিনী সভা নানারকম প্রবন্ধ প্রকাশিত করেন। প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় কুমিল্লা ও ময়মনসিংহে কবির আগমন ও সেখানকার কথা ‘রবীন্দ্র জীবনী” তে আলোচনা করেছেন।

রবীন্দ্রনাথ জীবনে খুলনায় দুবার যান।প্রথমবার বিয়ের আগে এবং দ্বিতীয়বার ‘হুংকার’ নামে একটি কাগজের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হলে সম্পাদক রবীন্দ্রনাথকে ডেকে পাঠান। বরিশালের সাথে রবীন্দ্রনাথের যোগ দীর্ঘদিনের।পারিবারিক ও রাজনৈতিক। রবীন্দ্রনাথ তাঁর মেয়ে মীরার বিয়ে দেন বরিশালের নগেন্দ্রনাথের সাথে।এছাড়া দীপেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিয়ে হয় বরিশালেই।এছাড়াও বরিশালে রবীন্দ্রনাথ আখের ব্যবসা শুরু করেছিলেন।বরিশালের বসন্তকুমার গুপ্তকে তিনি লিখেছেন-“বরিশালের আখের কলের কাজ সম্বন্ধে টাকার খবর না পাইয়া নগেন্দ্রকে পাঠাইয়াছি।আমাদের বিস্তর কড়াই কেবল ফেলিয়া রাখিয়া নষ্ট হইয়াছে।আমাদের এই হতভাগ্য ব্যবসায় আমরা যাহার প্রতি নির্ভরশীল সেই আমাদের ক্ষতির কারন হইয়াছে।” ১৯০৬ সালে রবীন্দ্রনাথ বরিশাল যান।ব্রিটিশ শাসকের অত্যাচারে বরিশালবাসীরা আহবান করেন রাজনৈতিক সম্মিলনী সাথে সাহিত্য সম্মিলনী।আহবায়ক ছিলেন দিনেন্দ্রনাথের মামা দেবকুমার রায়চৌধুরী আর সভাপতি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ।পরে আবার বরিশাল যাবার আগে কুমিল্লা ও আগরতলায় রবীন্দ্রনাথ কয়েকদিন কাটিয়ে আসেন।ফেরার পথে তিনি বরিশালে নামবেন এমন চিন্তা থাকলেও তা হয় না কারন ববন্দেমাতরম ধ্বনি নিষিদ্ধ হওয়ার কারনে বরিশালে বিক্ষোভ হয়। সম্মেলনের কর্তারা বজরায় অবস্থানরত রবীন্দ্রনাথকে ফিরে যেতে বলেন। ১৯০৬ সালে মীরা দেবীর বিয়ের পর তিনি মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি বরিশালে রেখে চট্টগ্রামে যান।সেখানে কয়েকদিন কাটিয়ে আবার ফিরে আসেন।ঢাকায় রবীন্দ্রনাথ এসেছিলেন তিনবার।প্রথমে ১৮৯৮ সালে,এরপর ১৯২৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।এখানে এসে রমেশচন্দ্র মজুমদারের বাসায় এসে তিনি থাকেন।বলধার জমিদার নরেন্দ্রনারায়ণ রায়চৌধুরীর নিমন্ত্রন তিনি গ্রহন করেন। এছাড়া তিনি ঢাকার নবাবের ‘তুরাগ’ নামের হাউসবোটেও ছিলেন।দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৌত্রী এনা দেবীর বিয়ে হয়েছিল ঢাকায়। তার বাসায় কবি নৈশভোজ গ্রহন করেন। ঢাকা থেকে রবীন্দ্রনাথ নারায়নগঞ্জ,ময়মনসিংহ যান।নারায়নগঞ্জে নামার কোন প্রস্তুতি রবীন্দ্রনাথের ছিল না কিন্তু স্থানীয় লোকজনের ইচ্ছায় তিনি সেখানে নামেন এবং বক্তৃতা দেন। এরপর তিনি আতিথ্য গ্রহন করেছিলেন মুক্তাগাছার জমিদার শশীকান্ত আচার্যচৌধুরীর। শশীকান্ত ছিলেন ব্রাহ্ম।পরদিন কবিকে ব্রাহ্ম মন্দিরে সংবর্ধনা দেয়া হয়।ময়মনসিংহের অন্যান্য জমিদাররাও তাতে উপস্থিত হন।সকলে মিলে কবিকে দেড়হাজার টাকার তোড়া উপহার দেন। আনন্দমোহন কলেজের মাঠেও কবি একটি বক্তৃতা দেন।

রবীন্দ্রনাথ শ্রীহট্টে যান ১৯১৯ সালে।একবারই। শ্রীহট্টের ব্রাহ্মসমাজের প্রধান গোবিন্দনারায়ন সিংহ তাকে বরন করেন।পরদিন রবীন্দ্রনাথ শ্রীহট্টের জমিদার সুধীরেন্দ্রনারায়ন সিংহের বাড়িতে যান।ইনিও ব্রাহ্ম ছিলেন।রবীন্দ্রনাথ জমিদারবাড়িতে গিয়ে দেখেন দেয়ালে মহর্ষির পোর্ট্রেট।রবীন্দ্রনাথ সুধীরেন্দ্রনারায়ন সিংহের বাবা গোবিন্দনারায়ন সিংহকে বলেন,”আপনি মহর্ষিকে সামনাসামনি দেখেছেন? তিনি হাঁ উত্তর দেন।এই শ্রীহট্টে থাকতেই কবি গিয়েছিলেন মাছিমপুর নামের মণিপুরিদের গ্রামে।সেখানে তাদের কাজ দেখে কবি মুদ্ধ হন। ছেলেরা রাখাল নৃত্য ও মেয়েরা রাসনৃত্য দেখিয়ে কবিকে মুগ্ধ করে।সেই থেকে শুরু হয় মণিপুরী নৃত্যের জয়যাত্রা।কবি শান্তিনিকেতনে সাথে নিয়ে যান মণিপুরি বুদ্ধিমন্ত সিংহকে।সেখানেই প্রথম মনিপুরী নাচ শিক্ষা চালু করেন।সেই সাথে চালু করেন মনিপুরী তাঁতের কাজ।তারপর একে একে শ্রীহট্ট থেকে যান নীলেশ্বর মুখার্জি,আতম্বা সিংহ,বিহারী।মনিপুরী রাজপুত্র সেনারিক সিংহ শান্তিনিকেতনে পড়তে যান। সেই ১৯১৯ সালে রবীন্দ্রনাথের শ্রীহট্ট ভ্রমনই মনিপুরি নাচ ও কাজকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরে। এই শ্রীহট্টেই কবির বক্তৃতা শুনে মুগ্ধ হয়ে যান সৈয়দ মুজতবা আলি। তিনি বিশ্বভারতীর প্রথম মুসলিম ছাত্র।এছাড়াও শান্তিনিকেতনের ব্রহ্মচর্যাশ্রমের প্রথম শিক্ষক শিবধন ছিলেন এই শ্রীহট্টের অধিবাসী।এই শ্রীহট্টের জমিদার হাসন রাজা ও রবীন্দ্রনাথকে প্রভাবিত করেছেন নানাভাবে। ১৯৩০ সালে অক্সফোর্ডের হিবার্ট লেকচার দেবার সময় রবীন্দ্রনাথ হাসন রাজার একটি কবিতা পাঠ করে শোনান।

কবি শ্রীহট্টের কাছে নানাভাবে ঋনী ছিলেন।তিনি লিখেছেন-

মমতাহীন কালস্রোতে
বাংলার রাষ্ট্রসীমা হোতে
মির্বাসিতা তুমি
সুন্দরী শ্রীভূমি।
ভারতী আপন পুণ্যহাতে
বাঙালীর হৃদয়ের সাথে
বাণীমাল্য দিয়া
বাঁধে তব হিয়া।
সে বাঁধনে চিরদিন তরে তব কাছে
বাঙলার আশির্বাদ গাঁথা হয়ে আছে।

সূত্র: সংগৃহিত।

তথ্যসূত্রঃ

১/ ইসলাম,রবীন্দ্রনাথ ও অন্যান্য প্রসঙ্গে,অমিভাভ চৌধুরী,মিত্র ও ঘোষ পাবলিসার্চ,কোলকাতা,বৈশাখ,১৪০৫,(পৃষ্ঠাঃ৫১-৫৫)
২/রবীন্দ্রনাথের জমিদারগিরি,কুলদা রায়,BPL প্রকাশনী,ঢাকা,২০১৬,(পৃষ্ঠাঃ৮৯)।

তারিখ: ফেব্রুয়ারী ০১, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ