কাবুল বিমানবন্দর ছেড়ে যাচ্ছে মার্কিন বিমানবাহিনীর বিশাল এক বিমান। সঙ্গে ছুটছে মানুষের ঢল। যে যেভাবে পেরেছে, আঁকড়ে ধরেছে বিমানটিকে। কেউ কেউ চেষ্টায় আছেন আঁকড়ে ধরার। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনাটি ১৫ আগস্টের। তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া শুরু করলে তেমনই আরেকটি মার্কিন বিমানে ৮২৩ আফগানকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ছিল ১৮৩টি শিশুও।
বিশালদেহী বিমানটি ‘বোয়িং সি-১৭ গ্লোবমাস্টার থ্রি’ মডেলের। কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আফগান এবং অন্যান্য দেশের নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার যে বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে, তার কেন্দ্রে আছে চার ইঞ্জিনের পরিবহন বিমানটি। সঙ্গে অবশ্য অন্যান্য দেশের আরও বিমান আছে।
তবে একবারে ৮২৩ যাত্রী বহন করা সি-১৭ বিমানটির জন্য একটি রেকর্ড বটে। সঙ্গে চালক-ক্রু মিলিয়ে হুলুস্থুল কারবার বলতে হয়।
মার্কিন বিমানবাহিনীর জন্য ১৯৮০-এর দশকে তৎকালীন প্রতিষ্ঠান ম্যাকডনেল ডগলাস সি-১৭ বিমান বানানো শুরু করে। পরবর্তী সময়ে বোয়িংয়ের সঙ্গে ম্যাকডনেল ডগলাস একীভূত হলে বিমানটির নাম হয় বোয়িং সি-১৭ গ্লোবমাস্টার থ্রি।
বোয়িংয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ২৭৪টি সি-১৭ বিমান সচল আছে। সবচেয়ে বড় গ্রাহক মার্কিন সেনাবাহিনীর ১২টি বিমানঘাঁটিতে ২২৩টি, এর বাইরে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, কুয়েত, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ডজনখানেক দেশের দখলে আছে সি-১৭।
বিমানটি মূলত সৈনিক ও মালামাল এবং কখনো কখনো বিপদগ্রস্ত মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে ব্যবহার করা হয়। সাঁজোয়া যান, লরি এমনকি এম১ আব্রামস ট্যাংক অনায়াসে পেটমোটা বিমানটির পেটে ঢুকে যায়। মার্কিন বিমানবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, ৭৭ হাজার ৫১৯ কেজি পর্যন্ত মালামাল বহন করতে পারে এটি।
গত রোববার এক আফগান নারী সি-১৭ বিমানে শিশুকন্যার জন্ম দেন। জার্মানির রামস্টেইন বিমানঘাঁটির উদ্দেশে উড়ে যাওয়ার সময় বিমানেই প্রসববেদনা শুরু হয় তাঁর। অবতরণের পর মার্কিন সেনাবাহিনীর চিকিৎসক দল শিশুটির প্রসবে সহায়তা করেন। মা ও শিশু দুজনেই সুস্থ আছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য দীর্ঘ মেয়াদে ২০ হাজার আফগান শরণার্থীকে ঠাঁই দেওয়ার কথা বলেছে। কানাডাও একই পরিমাণ শরণার্থী নেবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানির মতো অনেক দেশ ঠিক কত জন শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে, তা পরিষ্কার করে জানায়নি।
সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: আগষ্ট ২৪, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,