Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

যুক্তরাষ্ট্র বিপজ্জনক রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে যে কারণে (২০২২)

Share on Facebook

লেখক: ইয়ান বুরুমা

গত মার্চ মাসে পিউ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ৬১ শতাংশ আমেরিকান মনে করেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গর্ভপাত বৈধ হওয়া উচিত। এরপরও যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট ১৯৭৩ সালে ‘রো বনাম ওয়েড’ মামলার রায়ে গর্ভপাতকে যে সাংবিধানিক অধিকার দেওয়া হয়েছিল, সেটা বাতিল করে দিয়েছে।

গর্ভপাত নিষিদ্ধকে ঘিরে চলমান বিতর্কে খুব কম গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে একটি বিষয়ে। সেটি হলো আমেরিকার জনজীবনে ক্যাথলিকবাদের একটি প্রতিক্রিয়াশীল ধরনের ধারাবাহিক উত্থান। অবশ্য ক্যাথলিকেরাও গর্ভপাতের অধিকারসহ অনেক ইস্যুতে অন্যদের মতো বিভক্ত। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, আইনসভার স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিসহ উদারপন্থী ক্যাথলিকদের মধ্যে ৫০ শতাংশ ডেমোক্র্যাটদের ভোট দিয়েছেন। তাঁরা গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকারকেও সমর্থন করেন। সুপ্রিম কোর্টের তিনজন উদারপন্থী বিচারপতির মধ্যে একজন সোনিয়া সোতোমায়ারের ক্ষেত্রেও এটা সত্য। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নয়জন বিচারপতির মধ্যে পাঁচজনই ক্যাথলিকবাদের অতিরক্ষণশীল মতাদর্শ ধারণ করেন। তাঁরা মনে করেন, ভ্রূণেরও আত্মা আছে।

গর্ভপাতের অধিকার নিষিদ্ধের রায়টির বেশির ভাগ মতামত লিখেছেন বিচারপতি স্যামুয়েল অ্যালিটো। সতেরো শতকের ইংরেজ বিচারক ম্যাথিউ হেলকে উদ্ধৃত করেন তিনি। ম্যাথিউ গর্ভপাতকে খুন বলে মনে করতেন, ডাইনিতেও বিশ্বাস করতেন তিনি। এই দৃষ্টিভঙ্গি মূলধারার আমেরিকানদের চিন্তাচেতনা থেকে অনেক পিছিয়ে। কিন্তু কট্টর ক্যাথলিকবাদের অনুসারীরা জোর করে আমেরিকাকে ৫০ বছর পেছনে নিয়ে গেল।

১৯৭৩ সালে রো–এর মামলার রায় যখন ঘোষিত হয়, সে সময় রক্ষণশীল প্রোটেস্ট্যান্টরাও সেটি সমর্থন দিয়েছিল। ১৯৭৩ সালে দ্য সাউদার্ন ব্যাপ্টিস্ট কনভেনশন বিবৃতি দিয়েছিল, ‘সুপ্রিম কোর্টের গর্ভপাতের অধিকারের এই সিদ্ধান্তে ধর্মীয় স্বাধীনতা, মানব–সমতা ও ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে অগ্রগতি হলো।’ কিন্তু এক দশক পরেই প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মপ্রচারকেরা মনে করতে শুরু করলেন, প্রগতিশীল সেক্যুলাররা তাদের জন্য হুমকি তৈরি করছে। তখন থেকে কট্টর ক্যাথলিকদের মতো প্রোটেস্ট্যান্টদের অনেকে গর্ভপাতের অধিকারকে তাঁদের প্রধান শত্রু হিসেবে দেখতে শুরু করলেন। দুই দলেরই প্রধান লক্ষ্য হয়ে উঠল, মার্কিন সংবিধানে চার্চ ও রাষ্ট্রের মধ্যে যে ব্যবধান সৃষ্টি করা হয়েছিল, সেটাকে ভেঙে ফেলা। অথচ সংবিধানপ্রণেতারা খুব সতর্কতার সঙ্গে এই ব্যবধান গড়ে দিয়েছিলেন।

এমনকি কিছু কট্টরপন্থী এখন বলতে শুরু করেছেন, চার্চ ও রাষ্ট্রের পৃথক্‌করণ কখনোই সংবিধানপ্রণেতাদের অভিপ্রায়ে ছিল না। কংগ্রেসের অতি ডানপন্থী রিপাবলিকান দলীয় নারী সদস্য লরেন বোবার্টের কথায় সেই ধারণার প্রতিফলন পাওয়া যায়। তিনি বলেছেন, ‘চার্চ ও রাষ্ট্রের পৃথক থাকার এই আবর্জনা নিয়ে কথা বলতে বলতে আমি ক্লান্ত। সংবিধানের কোথাও এর উল্লেখ নেই।’

সবকিছুই এখন দ্রুত ঘটছে। সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তে গর্ভপাতের অধিকার কেড়ে নেওয়ার পরের দিনই, ওয়াশিংটনের একজন ফুটবল কোচ খেলা শেষে তাঁর বিদ্যালয়ে প্রার্থনার আয়োজন করেন। বিদ্যালয়ের মতো একটা জনপরিসরে এ ধরনের চর্চার সমস্যা হলো, ধর্ম যে ব্যক্তিগত চর্চার বিষয়, সেই ধারণাকে ভেঙে দেওয়া।

‘ধর্মীয় স্বাধীনতা’র বিষয়ে কট্টরপন্থীদের যে আকাঙ্ক্ষা, এ ঘটনা তারই নজির। যদি একজন ফুটবল কোচ খেলোয়াড় পরিবেষ্টিত অবস্থায় প্রার্থনা করেন এবং সেটাতে যদি অন্যদের সম্মতি না থাকে, তাহলে তিনি কেবল তাঁর নিজের বাক্স্বাধীনতা ও ধর্মবিশ্বাসেরই চর্চা করলেন। আমেরিকার মতো গণতন্ত্রে রাষ্ট্র ও চার্চের মধ্যকার পৃথক্‌করণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ধর্মীয় স্বাধীনতাকে কঠোরভাবে সুরক্ষিত রাখা হয়েছে। আবার ফ্রান্সের ক্ষেত্রে এ ধারণার অর্থ হচ্ছে, যাজক সম্প্রদায় জনপরিসরে যেন নাক না গলায়। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ থেকে ধর্মীয় কর্তৃপক্ষকে কীভাবে রক্ষা করা যায়, তা নিয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েলি দার্শনিক আভিসাই মার্গালিট তাঁর অন কম্প্রোমাইজ অ্যান্ড রোটেন কম্প্রোমাইজ বইয়ে খুব সংক্ষিপ্তভাবে এ বিষয়টি তুলে ধরেছেন। রাজনীতির ক্ষেত্রে বস্তুগত স্বার্থ সবকিছুতেই দর–কষাকষির বিষয় হয়ে ওঠে। অন্যদিকে ধর্মের ক্ষেত্রে পবিত্রতা ধারণাটি সবকিছুর কেন্দ্রে চলে আসে। সে ক্ষেত্রে আলাপ–আলোচনার আর পথ থাকে না। এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্র এখন একটি বিপজ্জনক রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। সেক্যুলার বামপন্থী ও ধর্মীয় ডানপন্থীরা লিঙ্গ, বর্ণ ও যৌন পরিচয় নিয়ে যত বেশি সাংস্কৃতিক যুদ্ধে নামবে, ততই রাজনীতি আর দর–কষাকষির বিষয় থাকবে না। তখন প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙে পড়তে শুরু করবে এবং জনতুষ্টিবাদ ও রাজনৈতিক সহিংসতা সমাজে গেড়ে বসবে।

*****ইংরেজি থেকে অনূদিত, স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট

ইয়ান বুরুমা দ্য চার্চিল কমপ্লেক্স বইয়ের লেখক।

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: জুলাই ০৫, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ