মুঘলরাই শুধু গুরুত্ব পেয়েছে! মৌর্য, গুপ্ত, চোল রাজারা উপেক্ষিত ইতিহাসে, দাবি শাহের
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, ভারতের ইতিহাসে মুঘলদের গুরুত্ব দিতে গিয়ে উপেক্ষিত হয়েছেন অন্য রাজবংশের গুরুত্বপূর্ণ শাসকেরা!
ভারতীয় ইতিহাসবিদদের কাছে শুধু মুঘল শাসকরাই গুরুত্ব পেয়েছেন! উপেক্ষিত হয়েছেন অন্য রাজবংশের গুরুত্বপূর্ণ শাসকেরা! শুক্রবার এই অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
রাজপুতানার ইতিহাস সম্পর্কিত একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে শাহ বলেন, ‘‘ভারতের অধিকাংশ ইতিহাসবিদ পাণ্ড্য, চোল, মৌর্য, গুপ্ত এবং অহোমের মতো অনেক সাম্রাজ্যের গৌরবময় কাহিনি উপেক্ষা করে শুধু মাত্র মুঘলদের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করার বিষয়টিকে প্রধান্য দিয়েছেন।’’ সুলতানি ও মুঘল শাসকদের বিরুদ্ধে রাজপুতানা, অহম (অসম)-সহ ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের রাজাদের লড়াইকে ‘সংস্কৃতি, ভাষা এবং ধর্ম রক্ষার যুদ্ধ’ বলেও চিহ্নিত করেছেন শাহ। তিনি বলেছেন, ‘‘তাঁদের লড়াই বৃথা যায়নি। ভারত আবার বিশ্বের দরবারে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে।’’
পাণ্ড্য রাজাদের ৮০০ বছর এবং পল্লব ও চোল বংশের ৬০০ বছরের শাসনে দক্ষিণ ও মধ্যভারতের সংস্কৃতি ও সমৃদ্ধি প্রসারের গৌরবময় ইতিহাসকে ভারতীয় ইতিহাসবিদরা প্রাপ্য গুরুত্ব দেননি বলে দাবি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘মৌর্যরা সাড়ে ৫০০ বছর ধরে গোটা দেশ শাসন করেছে— আফগানিস্তান থেকে লঙ্কা পর্যন্ত। সাতবাহন শাসকেরা ৫০০ বছর রাজত্ব করেছেন। গুপ্তরা ৪০০ বছর। গুপ্ত সম্রাট সমুদ্রগুপ্ত প্রথম একটি অখণ্ড ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং সেই সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কিন্তু তাঁদের উপর তেমন কোনও বই নেই!’’
শক্তিশালী অহম নৃপতিরা বখতিয়ার খলজি, অওরঙ্গজেবের মতো আক্রমণকারীকে পরাজিত করে অসমকে স্বাধীন সার্বভৌম রাখলেও দেশের ইতিহাস সেই অধ্যায়কে প্রাপ্য গুরুত্ব দেয়নি বলে দাবি করেন শাহ। সেই সঙ্গে তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘আমাদের সত্য লেখা থেকে কেউ এখন আটকাতে পারবে না। আমরা এখন স্বাধীন। আমরা আমাদের ইতিহাস নিজেদের মতো করে লিখতে পারি।’’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন মন্তব্যে ইতিহাসের গেরুয়াকরণের বার্তা স্পষ্ট বলেই মনে করছে বিরোধীরা।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
তারিখ: জুন ১০, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,