Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

মিনাকারি নকশা

Share on Facebook

পারস্যের গয়না ও এর তৈরির পদ্ধতি নিয়ে রয়েছে আমাদের অশেষ মুগ্ধতা। অতীতের অনবদ্য এক পদ্ধতি হলো মিনাকারী। আজও রয়েছে এর সমান আকর্ষণ। মিনাকারি নকশা আবেদন এখনও অবিকল আছে এর রাজকীয় অভিজাত্য নিয়ে।

বিশ্বজুড়ে পারস্যের সৌন্দর্যকথা সুবিদিত। পারস্যের পোশাক-আশাক, বেশভূষা, সাজসজ্জা, গয়না আমাদের সব সময় মোহিত করে। মিল্টনের কথায়, ‘সৌন্দর্য প্রাকৃতিক মুদ্রা, যা কখনো মজুত করে রাখা যায় না।’ ঠিক তাই অনেক বিষয়েই পারস্যের সঙ্গে বাংলার সাযুজ্য দেখা যায়। পারস্যের সেই নান্দনিকতা, শৈল্পিক সৃষ্টি বিভিন্নভাবে রঙে-রূপে আমাদের নিজস্বতায় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।

পারস্যের গয়নার প্রতি আমাদের মুগ্ধতার শেষ নেই। অতীত ও বর্তমানে গয়নার জগতে সবচেয়ে রাজকীয় ও অভিজাত হলো মিনাকারি নকশা। গয়নায় মিনাকারির উৎপত্তি প্রাচীন পারস্যে।

মিনাকারি শব্দটি ফারসি শব্দ ‘মিনু’ থেকে এসেছে; এর অর্থ স্বর্গ। ষোড়শ শতাব্দীর শুরুর দিকে ইরানে এই হস্তশিল্পের কাজ শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে মোঙ্গলরা পারস্য দখল করলে এই সৃজনকর্মে তারা আকর্ষিত হয়। তখন থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশে মিনাকারির জয়জয়কারের শুরু। তবে এ উপমহাদেশে মিনাকারিকে ব্যাপক জনপ্রিয় করে তোলার কৃতিত্ব সম্রাট শাহজাহানের আমলে রাজস্থানের রাজা মানসিংহের। তিনিই মিনাকারি শিল্পের সিদ্ধহস্ত কারিগরদের লাহোর থেকে নিয়ে এসেছিলেন।

প্রাথমিক পর্যায়ে মিনাকারিকে পারস্যের রাজা-মহারাজরা স্থাপত্যশিল্পেই সীমিত রেখেছিলেন। সে সময় বিভিন্ন ধরনের প্রতিসম প্যাটার্ন ব্যবহার করা হতো, যার মধ্যে অন্যতম ছিল একটিমাত্র রং ব্যবহার করে সোনালি কিনারাযুক্ত অবয়ব। আজও প্রাচীন দালানকোঠার পিলার, দেয়াল, সিঁড়ি বা আঙিনা, রাজা-রানিদের ব্যবহৃত সিংহাসন, গয়নার বাক্স, চাবির গোছায় এই প্যাটার্নে শোভিত হতে দেখ যায়। অলংকার কিংবা পোশাক-আশাকে মিনাকারি নকশার সঙ্গে পরিচিত করান ভারতীয় উপমহাদেশে কারিগরেরা। রাজস্থান থেকে জনপ্রিয়তা লাভ করে পাঞ্জাব, দিল্লি, লক্ষ্ণৌ, এমনকি বঙ্গদেশেও প্রসার লাভ করে।
গয়না ও অলংকরণে মিনাকারি

মিনাকারির নকশার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার আগে এ অঞ্চলে সোনা ও রুপার গয়না অভিজাত নারীদের পছন্দের ছিল। কিন্তু মোগল আমলে সোনার ওপর মিনা করা গয়নাগুলো ছিল বেশ রঙিন, সমৃদ্ধ ও আভিজাত্যপূর্ণ। ফলে সোনা বা রুপার তৈরি একঘেয়ে গয়নার স্থান নিয়ে নেয় মিনা করা গলার হার, কানের দুল, কোমরবন্ধ, বালা, বাজুবন্ধ, টিকলি, সীতাহার, রানিহার, মাথাপাট্টি, কানের ও নথের টানা, নূপুর, আংটি, পাগড়ির ও শাড়ির ব্রোচ।

প্রথম দিকে সবকিছুতে লাল রংকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হতো। ধীরে ধীরে মিনা করার নকশা ও রং দুটোই পাল্টে যায়। সবুজ ও নীল রঙের অ্যানামেলিংয়ের কাজ লক্ষ্ণৌতে খুব প্রচলিত ছিল। আবার বেনারসের গয়নায় জনপ্রিয়তা পায় রোজগোল্ড বা হালকা রঙের মোটিফের কাজ করা পদ্ম।

আমাদের দেশে নারীদের মিনাকারির নকশা করা জুয়েলারির প্রতি বিশেষ টান রয়েছে। যেকোনো ছোটখাটো পার্টি হোক বা বিয়ে, বর্তমানে মিনাকারির গয়না বেশ সহজলভ্য এবং একই সঙ্গে আভিজাত্যপূর্ণ।

বর্তমানের নজরকাড়া কিছু মিনাকারি নকশার গয়না হলো পাউডার ব্লু বা ভেলভেট চোকার, জহরতখচিত হার, ময়ূরখচিত নেকলেস, সাদা সোনায় মিনা করা ঝুমকা, মিন্ট গ্রিন প্রিন্সেস নেকলেস, বেগুনি কলার নেকলেস, পদ্ম বা পাখি মোটিফের নেকলেস, বাজুবন্ধ, মিনা করা কানের দুল এবং টানা, মাঙ্গ টিকা এবং মাথাপাট্টি, কলকা মোটিফের নেকলেস, জহরতখচিত সাহারার কানের দুল, নীলকান্তমণি রঙের কানের ঝুমকা ইত্যাদি।

মিনাকারি নকশার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো বাহারি রং ও ডিজাইন। ব্যবহারকারীর মনের মতো সাজানো যায়। চাইলে বাজেট ফ্রেন্ডলিও করা যায়, আবার অনেক বেশি দামেরও করা যায়। ইচ্ছেমতো কাস্টোমাইজ করা যায় ব্রোঞ্চ, সিলভারের ফ্রেমে করে। আবার কুন্দন, জাদাউ, পল্কি, সোনার ফ্রেমে, বাহারি রঙিন দামি পাথর দিয়ে খচিত করে আড়ম্বরপূর্ণ করে তোলা যায়।
পোশাকে মিনা

সৌন্দর্যের পূজারি হতে কে না পছন্দ করে? আর সেই সৌন্দর্যের চর্চার বিষয়টা যদি নিজের হাতেই থাকে, তাহলে তো সোনায় সোহাগা। মিনাকারির নকশা শুধু গয়না, তৈজসপত্র কিংবা অন্য কোনো সজ্জা নয়, পোশাক-আশাকেও এর ব্যবহার করা যায়। আর তা হয়ে ওঠে আভিজাত্যপূর্ণ ও নজরকাড়া।

আমাদের দেশে ও উপমহাদেশে বিখ্যাত মিনা করা শাড়ি বেশি জনপ্রিয়। এর মধ্যে হাতে বোনা চান্দেরি সিল্কে মিনা করা শাড়ি, বেনারসি কাতানে পাটোলা বর্ডারে মিনা করা শাড়ি, বেনারসি বান্ধাই শাড়িতে মিনা, মিনা করা সিল্ক কাতান, মিনা কাজ করা সুতি শাড়ি, বর্ডারে মিনা কাজ বা ফ্লোরাল মোটিফ বেনারসি, বান্ধাই মিনা করা বেনারসি জর্জেট শাড়ি, শিফন জর্জেট মিনাকারি শাড়ি, কাঞ্জিভারাম সিল্ক শাড়িতে মিনাকারি, বিষ্ণুপুরি বালুচরি সিল্ক শাড়িতে কাতান, খাদি জর্জেট শাড়িতে মিনা, বেনারসি হাফ সিল্ক কাতান শাড়িতে মিনা এবং বান্ধেজ ও বেনারসি শাড়িতে জারি ও মিনার কাজ অন্যতম। এ ছাড়া বর্তমানে ওড়না, কাফতান, পাঞ্জাবি ও টু-পিসে দামি মিনা কাজ দেখা যায়।

মিনাকারিপ্রেমীদের এই নকশার প্রতি এত ভালোবাসার কারণ এর আলপনার মধ্যেই। তথ্যসূত্রে জানা যায়, ফারসিতে এই মিনার উৎপত্তি নীল রং থেকে, যা স্বর্গ বা আকাশকে নির্দেশ করে। মিনাকারি করা প্রতিটি জিনিস যেন একটুকরো আকাশ বা স্বর্গ। নান্দনিক, সুসজ্জিত বাহারি রঙের একেকটি স্বর্গ যখন আমাদের ভূষণে ব্যবহৃত হয়, রাজকীয় ভাব তখন আপনা-আপনিই চলে আসে!

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: এপ্রিল ১৬, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

,

ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪,সোমবার

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ