Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

মার্কিন সাংবাদিক ব্রিজের লেখা-যুদ্ধ শুরুর জন্য কেন নিষেধাজ্ঞায় পড়ে না যুক্তরাষ্ট্র–ন্যাটো (২০২২)

Share on Facebook

ইউক্রেনে হামলাকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সংবাদমাধ্যমেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। তবে পশ্চিমাদের এমন অবস্থানকে ভণ্ডামি বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন লেখক ও সাংবাদিক রবার্ট ব্রিজ। তিনি বলেন, বিশ্বে যুদ্ধ শুরু করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো ও পশ্চিমা দেশের ওপর কখনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি।

রাশিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম আরটির এক মন্তব্য প্রতিবেদনে ‘মিডনাইট ইন দ্য আমেরিকান এমপায়ার, হাউ করপোরেশনস অ্যান্ড দেয়ার পলিটিক্যাল সার্ভেন্টস আর ডেস্ট্রয়িং দ্য আমেরিকান ড্রিম’ বইয়ের লেখক রবার্ট ব্রিজ বলেন, আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়ায় যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য দায়ী পশ্চিমা বিশ্ব। ইউক্রেনেও তারা একই পরিস্থিতি তৈরি করতে চলেছে। পশ্চিমা বিশ্ব ভ্লাদিমির পুতিনের নেতিবাচক ভাবমূর্তি বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করছে। পশ্চিমা মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে ইউক্রেনে হামলার কারণে পুতিনকে জার্মানির নব্যনাৎসি হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর ভণ্ডামি তুলে ধরতে প্রথমেই কিছু বিষয় স্পষ্ট করা দরকার বলেছেন রবার্ট ব্রিজ। তিনি বলেন, ভণ্ডামি ও দ্বিমুখী অবস্থান কোনো দেশের সহিংস অবস্থানকে ন্যায্যতা দিতে পারে না। ন্যাটোর নিষেধাজ্ঞায় থাকা দেশগুলো ২০০১ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সহিংস কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। ন্যাটোর নিষেধাজ্ঞা থাকার অজুহাতে রাশিয়া বা কোনো দেশ কোথাও হামলা চালানোর জন্য নৈতিক অনুমোদন পায় না।

রবার্ট ব্রিজ বলেন, কোনো দেশে হামলা চালানোর পেছনে একটি দেশের অবশ্যই যৌক্তিক কারণ থাকতে হবে। রাশিয়া ইউক্রেনে কেন হামলা চালাচ্ছে বা রাশিয়ার উদ্দেশ্য কী, তা এখনো অনেকের কাছে বোধগম্য নয়। রাশিয়ার হামলার পেছনের কারণ বিবেচনার ভার পাঠকের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন রবার্ট ব্রিজ। তবে হামলার উদ্দেশ্য বুঝতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিকের বিশ্লেষণ জরুরি মনে করেছেন তিনি।

প্রায় এক দশকজুড়ে ন্যাটোর সম্প্রসারণ নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে মস্কো। ২০০৭ সালে মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে ভ্লাদিমির পুতিন পশ্চিমা বিশ্বের নেতাদের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বলেছিলেন, ‘আমাদের দেশের সীমান্তে সামরিক অবকাঠামো বাড়ানো কেন প্রয়োজন? কেউ কি এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন?’ পরে আরেক বক্তব্যে পুতিন বলেন, রুশ সীমান্ত পর্যন্ত সামরিক অবকাঠামো সম্প্রসারণের বিষয়টি কোনো রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক পছন্দের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। তবে পুতিনের এসব সমালোচনায় কর্ণপাত না করে ন্যাটো আরও চারটি দেশ আলবেনিয়া, ক্রোয়েশিয়া, মন্টিনিগ্রো ও উত্তর মেসিডোনিয়াকে জোটের সদস্য করে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো ইউক্রেনকে উন্নত অস্ত্র সরবরাহ করেছে। ন্যাটো জোটের সদস্য হতে আহ্বান জানিয়েছে। আর এটিই মস্কোর সতর্কতার কারণ। মস্কো মনে করেছে, ইউক্রেনকে রাশিয়ার জন্য হুমকি হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।

বারবার আপত্তি জানানোর পর গত ডিসেম্বরে মস্কোর ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়। রাশিয়ার পূর্ব সীমান্তে ইউক্রেন অথবা অন্য কোনো দেশে সামরিক সম্প্রসারণ বন্ধের দাবি জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোকে চুক্তির খসড়া পাঠায় মস্কো। খসড়া চুক্তিতে বলা হয়, ন্যাটো ইউক্রেন, পূর্ব ইউরোপ, দক্ষিণ ককেশাস ও মধ্য এশিয়ার কোনো দেশে সামরিক কর্মকাণ্ড চালাতে পারবে না। তবে পশ্চিমা নেতারা রাশিয়ার এসব প্রস্তাব আবারও কর্ণপাত করেননি।
যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো রাশিয়ার নিরাপত্তার দাবি মেনে না নেওয়ার পর কী?

রবার্ট ব্রিজ বলেন, পশ্চিমা গণমাধ্যম এমনভাবে তথ্য দিচ্ছে যাতে মনে হয়, ২৪ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মনে হয়েছে, ‘দিনটা সুন্দর, ইউক্রেনে হামলা চালানো যাক।’ কিন্তু ঘটনাটা এমন নয়। এ কথা কেউ বলতে পারবে না মস্কো আগে থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোকে নিরাপত্তা নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানায়নি। তবে এমনটাও বলা যেতে পারে ইউক্রেনে হামলা চালানোর অজুহাত হিসেবে রাশিয়া নিজের নিরাপত্তা নিয়ে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে দুই দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটোতে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের অনুগত দেশগুলো যে যুদ্ধবাজ আচরণ করেছে, সে ক্ষেত্রে এ রকম কোনো অজুহাত ধোপে টিকবে না।
যুদ্ধ শুরুর জন্য কেন নিষেধাজ্ঞায় পড়ে না যুক্তরাষ্ট্র–ন্যাটো

এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে কুখ্যাত উদাহরণ হতে পারে ২০০৩ সালে ইরাকে হামলার ঘটনা। পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো এই যুদ্ধকে ‘গোয়েন্দা ব্যর্থতা’ হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছে। রবার্ট ব্রিজ বলেন, ৯/১১–এর হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে গণ–বিধ্বংসী অস্ত্রের মজুত করার অভিযোগ তোলে।

জাতিসংঘের অস্ত্র পরিদর্শকেরা এই অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ইরাকে কাজ করছিলেন। তাঁদের সহযোগিতা করার পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, পোল্যান্ড যৌথভাবে ২০০৩ সালের ১৯ মার্চ ইরাকে বোমা হামলা চালায়। আন্তর্জাতিক আইনের এমন লঙ্ঘন ও যুদ্ধের ফলে ইরাকে ১০ লাখ মানুষ হতাহত হয় অথবা আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে।

ব্রিজ তাঁর বক্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের অলাভজনক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান দ্য সেন্টার ফর পাবলিক ইনটিগ্রিটির তথ্য তুলে ধরেছেন। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ২০০১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদেশ ইরাকের হুমকির বিষয়ে বুশ প্রশাসন ৯০০–এরও বেশি মিথ্যা বিবৃতি দিয়েছে। ইরাকে হামলার পক্ষে জনসমর্থন পেতেই এমন প্রচারণা চালিয়েছে বুশ প্রশাসন। তবে সে সময় পশ্চিমা গণমাধ্যমে ইরাকে হামলা নিয়ে নেতিবাচক কোনো তথ্য প্রচার বা প্রকাশ করা হয়নি।

ইরাকে হামলাকে পশ্চিমা গণমাধ্যম গোয়েন্দা ব্যর্থতা হিসেবে অভিহিত করলেও যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদেশগুলোর ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি বরং নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় ন্যাটোর সদস্যদেশ ফ্রান্সের বিরুদ্ধে। অথচ ফ্রান্স ও জার্মানি ইরাকে হামলায় অংশ নেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল। সে সময় আমেরিকার রাজনীতিবিদেরা ফ্রান্সের ওয়াইন ও বোতলজাত পানি বয়কটের দাবি তোলেন। রেস্তোরাঁগুলোতে জনপ্রিয় খাবার ফ্রেঞ্চ ফ্রাইসের নাম বদলে রাখা হয় ফ্রিডম ফ্রাইস।

ইরাক যুদ্ধের সময় ফ্রান্সের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদেশগুলোর এই আচরণকে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করা যাক। রাশিয়া বারবার বলেছে, ন্যাটো সম্প্রসারণকে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য তারা হুমকি বলে মনে করছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার কার্যকারণ নিয়ে ভাবতে গেলে অতীতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর অবজ্ঞাসূচক ভূমিকা অস্বীকার করা যাবে না।

রাশিয়ার বিভিন্ন ব্যক্তি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ফ্রান্সও রাশিয়ার অর্থনীতি ধ্বংস করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। এর পাশাপাশি রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর প্রকাশের ক্ষেত্রেও একধরনের নীরবতা বজায় রাখা হয়েছে। ফলে হামলার পেছনে রাশিয়ার অনেক উদ্দেশ্যই পশ্চিমের দেশগুলোর মানুষের কাছে অজানা থাকছে। ১ মার্চ ইউটিউবে রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি ও স্পুতনিক ইউরোপীয় ব্যবহারকারীদের জন্য নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।

পশ্চিমা গণমাধ্যমে ভ্লাদিমির পুতিন এবং রাশিয়াকে যেভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, তাতে অনেকে ভাববে রাশিয়া পুরোপুরি ভুলপথে পরিচালিত হচ্ছে।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে পশ্চিমা মাধ্যমে আলোচনার, বিতর্কের বা রাশিয়ার পক্ষে কোনো তথ্য প্রচারের জায়গা রাখা হয়নি। ব্রিজ বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব যদি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে না চায়, তাহলে তাদের উচিত হবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভণ্ডামিমূলক প্রচার, দ্বিমুখী অবস্থান বন্ধ করা। রাশিয়ার পক্ষ থেকেও মতামত শোনা, যদি তা বিদেশি গণমাধ্যমও হয়। সব পক্ষের তথ্য দিলে যেটা সত্য, মানুষ সেটাই বিশ্বাস করবে।

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ মার্চ ০৬, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ