বিএনপির সাত সংসদ সদস্যকে পদত্যাগের বুদ্ধি যাঁরা দিয়েছেন, তাঁরা অচিরেই পস্তাবেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ সরকারের এই মন্ত্রী বলেছেন, ‘বিএনপির সাতজন (সংসদ সদস্য) হলেন সিন্ধুর মধ্যে বিন্দু। এই বুদ্ধি যাঁরা দিয়েছেন, তাঁরা অচিরেই পস্তাবেন। এটা ঠিক নয়। লাভ হলো কী? সরকরের পতন হলো? মানুষের যখন পতন আসে তখন ইচ্ছার বিরুদ্ধেও ভুল করে।’
আজ রোববার বিকেলে মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির সাতজন সংসদ সদস্যের পদত্যাগে সংসদ অচল হবে না উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এখন ৩০১ জন, প্রয়োজন ১৫১ জন। তারপর ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, বিকল্পধারা, তরীকত ফেডারেশন, জাতীয় পার্টি আছে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র ও গণফোরামও আছে। তারা তো পদত্যাগ করেনি।’
সম্মেলনে বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচি নিয়ে সমালোচনা করেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে ফেলে দিলেন না? পল্টনে সমাবেশ করলেন না? পারলেন না? আমি কিন্তু দুদিন আগে বলেছি, সমঝোতা হবে। আমাদের আকাশে কালো মেঘ কেটে যাবে। ১০ ডিসেম্বর আতঙ্ক দূর হয়েছে। মানুষ স্বস্তি পেয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের শিকড় বাংলাদেশের মাটির অনেক গভীরে। এটাকে ধাক্কা দিয়ে কেউ ফেলে দিতে পারবে না, ১০ ই ডিসেম্বর তা আবার প্রমাণ হয়ে গেছে।
মানিকগঞ্জ শহরের সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আজ বিকেল তিনটার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন শুরু হয়
বিএনপির উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নোংরা ভাষায় কথা বলবেন না। নোংরা ভাষা যদি আমাদের পক্ষ থেকে বলা হয় তখন কিন্তু পালাবেন। আমরা কিন্তু নোংরা কথা বলিনি। আমরা বেগম খালেদা জিয়া— এই বলি, হাসিনা হাসিনা বলে বেয়াদবের মতো কথা বলি না। লন্ডন থেকে তারেক জিয়া বলে, বিএনপির নেতা-কর্মীরা ওই ভাষা ব্যবহার করেন। নোংরা কথা বললে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। কারা কারা নোংরা কথা বলছেন, সব নোট আছে।’
সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার বিষয়েও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘পুলিশের ওপর যখন হামলা হয়, যখন পুলিশ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তখন মানবাধিকার কোথায় থাকে? কিসের মানবাধিকার! যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন নারী ধর্ষণ হচ্ছে, তখন কি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় না? আন্তর্জাতিক টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএনে খবর প্রকাশিত হয়েছে এক বছরে কত নারী ধর্ষিত হয়েছে। একটি স্কুলের ১৯ জন শিশুকে এক দিনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। তখন মানবাধিকার কোথায় যায়? প্রতিদিন ফিলিস্তিনে দিনে কত রক্ত ঝরেছে! আপনারা কিছু করতে পেরেছেন?’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জাতিসংঘ এত বড় বড় কথা বলে, জাতিসংঘ কি ফিলিস্তিনে হত্যা বন্ধ করতে পেরেছে? ইউক্রেন যুদ্ধ কি বন্ধ করতে পেরেছে? নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আমাদের কষ্টে, বিপদে ফেলেছে। আমরা গরিব দেশ, উন্নয়নশীল দেশ হয়েছি। শেখ হাসিনার মতো সৎ ও আদর্শবান নেতা পেয়েছি বলেই সফলভাবে করোনা মোকাবিলা করতে পেরেছি। উন্নত দেশে অর্থ দিয়ে ভ্যাকসিন কিনতে হয়েছে, আর আমাদের দেশে বিনা পয়সায় শেখ হাসিনা জনগণকে ভ্যাকসিন দিয়েছেন।’
বাংলাদেশের জন্য শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে ওবায়দুল বলেন, ‘অর্জনে ও উন্নয়নে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। ’৭৫-এর পর এ দেশে তাঁর মতো সৎ নেতা আর আসেননি। বিএনপির আমলে পকেটের উন্নয়ন হয়েছে, মানুষের কোনো উন্নয়ন হয়নি। শেখ হাসিনার আমলে মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে। আমরা ঘুরে দাঁড়াব। মানুষ একটা কষ্টে আছে, ধৈর্য ধরেছে। তবে একটি মানুষও না খেয়ে মারা যায়নি। খাদ্য আমাদের আছে। খাদ্য মজুত আছে। কৃষি আমাদের ভালো আছে।’
সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:ডিসেম্বর ১১, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,