মানবতা দিয়ে যিনি বিশ্বকে জয় করেছিলেন সেই মাদার তেরেসার জীবন থেকে নেওয়া তাঁর লিখনীর কিছু অংশ তুলে ধরা হলো, যা আমাদেরকে একটি মানবিক জগতের পথ দেখায় –
প্রত্যেক দেশেই গরীব লোক আছে। নিশ্চিত ভাবে তা বলা যায় যে, দারিদ্রতা জাগতিকের চেয়ে বেশী- আত্মিক। দারিদ্রতা একাকীত্বতা, অনুৎসাহিতা জীবনকে অর্থহীন করে তুলে। আমি ইউরোপ ও আমেরিকাতে অনেক দরিদ্র লোককে খবরের কাগজের উপরে কিংবা ফুটপাতে শুয়ে থাকতে দেখেছি। এধরনের দরিদ্রতা লন্ডন, মাদ্রিদ এবং রোমেও দেখা যায়। এটা বলা খুবই সহজ অথবা, আমাদের ধারণায় নিয়ে আসা যেসব দরিদ্র আমাদের থেকে দুরে রয়েছে। আমাদের সকল দৃষ্টি পাশের দরিদ্রদের মধ্যে নিক্ষেপ করা খুবই কঠিন একটা কাজ।
যখন রাস্তা থেকে আমি একটা ক্ষুধার্থ লোককে তুলে নিয়ে আসি, তখন আমি তাকে ভাত ও রুটি দিই এবং যেকোন উপায়ে তাকে সন্তুষ্ট করি। কিন্তু যখন কোন লোক সমাজ থেকে বঞ্চিত হয়, নিগৃহীত হয়, ভালবাসা থেকে বঞ্চিত হয় তখন তার মধ্যে যে ক্ষুধা জন্ম নেয় তা নিবারণ করা কত কঠিন?
অন্যদিকে আপনি যখন রূহানিক ভাবে হত দরিদ্র থাকেন তখন তা শারীরিক বা বাহ্যিক দরিদ্রতার চেয়ে বেশী। এবং সত্যিকার ভাবে ধনীরা রুহানিক ভাবে আসলে দরিদ্র। আমি দেখেছি একজন ক্ষুধার্থ লোককে এক থালা ভাত দেওয়া খুবই সহজ, যার ঘুমাবার যায়গা নেই তাকে ঘুমাবার জায়গা দেওয়া, কিন্তু তার মনে যে তীক্ততা, রাগ এবং একাকীত্বতার সৃষ্টি হয়, যদি সে রুহানিক ভাবে বঞ্চিত থাকে। এটা দূর করার জন্য অনেক সময় প্রয়োজন।
কয়েক সপ্তাহ আগে, আমি একটা শিশুকে রাস্তা থেকে তুলে আনলাম, এবং তার চেহারা থেকে আমি বুঝতে পারলাম যে শিশুটি ক্ষুধার্থ। আমি জানি না এই ছোট্ট শিশুটি কতদিন যাবত খায়নি। তাই আমি তাকে একটুকরো রুটি দিলাম, সে রুটিটি নিল এবং অল্প অল্প করে খেতে থাকল। আমি তাকে বললাম, ‘খাও, রুটিটি শেষ কর। তুমিতো ক্ষুধার্থ।’ ছোট্ট শিশুটি আমাকে দেখে বলল, “আমি খুবই চিন্তিত, কখন এই রুটিটি শেষ হয়ে যাবে, তখন আমি আবার ক্ষুধার্থ হব।”
নোটঃ লেখাটির অনেক তথ্য ইন্টার নেট থেকে সংগ্রহিত এবং ছবিটিও।
তারিখ: সেপ্টম্বর ০৭, ২০১৬
রেটিং করুনঃ ,