Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

মাথাপিছু আয় ও ক্রয়ক্ষমতা যেভাবে ‘হাসজারু’ (২০২২)

Share on Facebook

লেখক: হাসান ইমাম।

দেশে গত ১৩ বছরে মানুষের মাথাপিছু আয় ৬০০ ডলার থেকে ২ হাজার ৬০০ ডলারে উন্নীত হয়েছে—তথ্যমন্ত্রী মহোদয়ের এ তথ্য সঠিক। অর্থাৎ মাথাপিছু আয় প্রায় সাড়ে চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ঢাকঢোল পিটিয়ে এলান করার মতো ঘটনা বৈকি। কিন্তু আগের তথ্যের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া মানুষের ক্রয়ক্ষমতা প্রায় তিন গুণ বৃদ্ধির অংশটা হাঁসের সঙ্গে শজারুর মিলমিশে কবিকল্পিত ‘হাঁসজারু’ হয়ে যাচ্ছে।

কল্পনার চোখে তাও না হয় কিম্ভূত প্রাণীটির একটা আদল ধরা পড়ে, কিন্তু ‘রক্ত-মাংস’ কষ্টকল্পনারও অধিক! কেননা, মাথাপিছু আয়ে যেমন আজদাহা ‘ফাঁকি’ আছে, ক্রয়ক্ষমতাও জিনিসের লাগামছুট মূল্যবৃদ্ধির পাল্লায় বেশ খানিকটা পিছিয়ে।

কোনো দেশের পুরো আয়কে দেশটির সব মানুষকে ভাগ করে দেওয়া হলে প্রত্যেকের ভাগে যা পড়ে, সেটিই মাথাপিছু আয়। অর্থাৎ একজন শিল্পপতি আর একজন ভিক্ষুকের আয় সমান! হিসাবটা এমনই যে টিসিবির ট্রাকের পেছনে ছুটতে থাকা মানুষের আয় এবং তাদের পাশ দিয়ে শাঁই শাঁই করে চলে যাওয়া কোনো পোরশে বা হ্যামার গাড়িতে থাকা ব্যক্তির আয়ও অভিন্ন হিসেবেই ধরা হয়। অর্থাৎ হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপি, দেশের অর্থ-সম্পদ লুণ্ঠনকারী, শেয়ারবাজার লুটেরাদের কুক্ষিগত টাকাও সমাজের আর দশজনের গড় সম্পদ বলে দিব্যি চালিয়ে দেওয়া হয় মাথাপিছু আয়ের হিসাবে। কৃষক, কামার-কুমার, জেলে-মাঝি, রিকশাচালক, হকার, ছোট চাকুরে, ফুটপাতের খুদে ব্যবসায়ী, গৃহকর্মী, পোশাক কারখানার মালিক, শ্রমিক, কুলি, এমনকি ভাসমান মানুষ—সবাই ‘মধ্যবিত্ত’ এবং সবারই মাথাপিছু আয় সমান!

বাংলাদেশের মতো দেশে, যেখানে আয়বৈষম্য প্রকট, সে দেশে মাথাপিছু আয়ের বিষয়টি শুধু প্রচ্ছদ, বইয়ের ভেতরে ‘কিছু’ নেই। ধনী তৈরিতে সারা বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশের সমীহ-জাগানিয়া অবস্থানই বলে দেয়, অর্থবিত্ত কীভাবে একশ্রেণির করায়ত্ত হচ্ছে। একজন পি কে হালদার বা সম্রাট অথবা সাবেক এক মন্ত্রীর ভাই খন্দকার মোহতেশাম তার নমুনামাত্র! সুতরাং মাথাপিছু আয় বেড়েছে কাগজে-কলমে, কিছু টাকা সাশ্রয়ের আশায় সারা দিন টিসিবির ট্রাকের পেছনে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলোর জীবনে তার ইতি বা নেতি—কোনো প্রভাবই নেই।

বাংলাদেশের মতো দেশে, যেখানে আয়বৈষম্য প্রকট, সে দেশে মাথাপিছু আয়ের বিষয়টি শুধু প্রচ্ছদ, বইয়ের ভেতরে ‘কিছু’ নেই। ধনী তৈরিতে সারা বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশের সমীহ-জাগানিয়া অবস্থানই বলে দেয়, অর্থবিত্ত কীভাবে একশ্রেণির করায়ত্ত হচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মজুরি সূচক বলছে, ২০১০-১১ অর্থবছরের তুলনায় ২০২০-২১ অর্থবছরে মানুষের মজুরি গড়ে ৮১ শতাংশ বেড়েছে। ২০১০ সালে গড় মজুরি ১০ হাজার থাকলে ২০২০-২১-এ তা বেড়ে হয়েছে ১৮ হাজার ৮৩০ টাকা। আর মূল্যস্ফীতি? সরকারি এই সংস্থার হিসাবেই তা মজুরি বৃদ্ধির চেয়ে বেশি। ২০১০-১১ অর্থবছরে ১০০ টাকায় যে পণ্য পাওয়া যেত, এখন তা কিনতে মানুষকে গুনতে হচ্ছে ১৮৪ টাকা। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতির কাছে হার মেনেছে মজুরি বৃদ্ধির হার। ক্রয়ক্ষমতা তিন গুণ বাড়ার তথ্যে গরিমার চেয়ে তাই ‘গরল’ বেশি।

মাথাপিছু আয়, ক্রয়ক্ষমতা—এসব ‘উচ্চতর অঙ্ক’ সাধারণ মানুষ বোঝে না, কিন্তু তাদের হিসাবে কাঁচা বলা যায় না। বরং তাদের বেঁচে থাকা অনেকটাই হিসাবনির্ভর; পান্তায় নুনের জোগানের প্রাত্যহিকতায় বাঁধা তাদের জীবন। তবু জীবনব্যাপী ‘ঘরের’ ও ‘বাইরের’—কোনো হিসাবই মেলে না তাদের। চাল-তেল-নুনের হিসাব কষে কষে জীবন টেনে নিতে তারা হিমশিম খায়। মাথাপিছু আয়, ক্রমক্ষমতা—এসব শুনে তাদের পিলে চমকে যায়! একইভাবে তাদের বুঝের বাইরে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে বাংলাদেশের উত্তরণ, ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ কিংবা কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ। কিন্তু মাথাপিছু আয়সহ বিভিন্ন সূচকে উন্নতির ফলে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে নাম কাটতে যাচ্ছে বাংলাদেশের। গরিবির খাতা থেকে কবে নাম কাটবে তাদের, তারা জানে না।

দেশের বয়স ৫০ পেরোল মানে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার-মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথাও এত দিন ধরে উচ্চারিত। রোজ ২৪ ঘণ্টাই রেকর্ড বাজান, দেশের সব মানুষের শুধু কানে নয়, মরমেও প্রবেশ করুক, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ার পথে এক কদমও এগোনো যাবে না। রাষ্ট্রব্যবস্থায় এর প্রতিফলন থাকতে হবে। ‘সোনার পাথরবাটি’তে ভাত বাড়া যায় না।

****হাসান ইমাম সাংবাদিক।

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ মার্চ ১১, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ