চলতি বিশ্বের সাথে তাল মিলাতে আমরা অনেকেই এখন আর পিছিয়ে নেই, গতকাল যার চল ছিল তা অনেক কিছুই এখন অচলের খাতায় নাম লিখিয়েছে। আমাদের আজ শহরের মানুষের সাথে সংস্পর্শ না থাকলে পিছিয়ে পড়ার দলে নাম লেখাতে হয়। চলতি বিশ্বের সাথে তাল মিলাতে গ্রামের ছায়া নীড় সবুজ সমারহো ত্যাগ করে শহর পানে মানুষ ছুটে আসছে। শহুরে জীবন ত্যাগ করে কেউ আর গ্রামের ছায়া নীড়ে ফিরে যেতে চায় না, আর যাচ্ছেও না এটা এখন একটি প্রবনতা। নিজেই বহু দিন ধরে শহুরে জীবন যাপন করে চলেছি, অন্য নাগরিকগনও তাই করবেন এটাই স্বাভাবিক।
ধরা যাক, শহুরে নাগরিক রফিক সাহেব ছয় তালার বারান্দায় দাড়িয়ে দাড়িয়ে ঢাকা শহর দেখেন অবসরে। খুব ধীরে ধীরে শহরের একটি পরিবর্তন হচ্ছে তা তিনি লক্ষ্য করেন। দুই তালা বা চার তালা বাড়িগুলি ভেংগে ভেংগে সেখানে গড়ে উঠছে বহু তল ভবন। আর রফিক সাহেবের দৃষ্টি সীমা সংক্রচিত হচ্ছে খুব ধীরে ধীরে পরিবর্তনের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। খুব আশ্বার্য মাঝে হয়ে যাচ্ছেন যখন দুরের জলাধার, সবুজ মাঠ যখন আর তিনি দেখতে পাচ্ছেন না। রফিক সাহেবের মত আমাদেরও একই ভাবে দূরে তাকানোর দৃষ্টি সীমা ছোট্ট হয়ে আস
গ্রামের ছায়া নীড় সবুজ সমারহো যা আমাদের পরাণ কাড়ে, সেখানেও কয়েক মাস পর পর বা ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে গ্রামে, গ্রামের মাঠে পরিবর্তন আসে প্রকৃতির সাথে মিল রেখে কখনো সবুজ, কখনো হলুদ কখনো বাদামি বা কখনো থৈ থৈ পানিতে একাকার আবার ফিরে যায় মাঠ সবুজে সবুজে ।
মূল কথায় আসি, শহুরে পরিবর্তনে আছে একঘেঁমিয়তা আছে বিরক্তি, হারিয়ে যাওয়ার শংকা, আমাদের গ্রামাঞ্চলের জীবনে আছে বৈচিত্র আছে সজীবতা, আছে প্রান হয়তো সেখানে নেই নাগরিক সুবিধা, তাই প্রাণের টানে আমাদের মনে আর একটি সজীব প্রাণে ছোঁয়া পেতে বার বার আমাদের গ্রামে ছুটে চলা, আর যারা আঁকড়ে থাকছেন শহরে ভাবছেন পাট শাক শুধু শাক খাওয়ার জন্য, রশিতে শুটকি জন্মায়, হলুদ চাষ শুধুই রূপ চর্চার জন্য তারা থাকুক আট্টলিকায়, নেটে, ডিসে আর কম্পিউটারের মনিটরে।
সহজ ও সরল একটি বিশ্বাসের সাথে গ্রামের মানুষদের বসবাস, প্রকৃতির অনেক কিছুর সাথে এখনও তাদের তাল মিলানো এখনও তাঁদের অ-জানা, বিশ্বায়নের এ যুগে কী তাদের চাহিদা বা চাওয়া-পাওয়া।
আগ্রার যমুনার এ পারে তিন শত, চার শত বা ছয় শত বছর ধরে আর খুব ধীরে ধীরে আগ্রা শহরের একটি পরিবর্তন হয়েছে, হচ্ছে, আর তা মাঠ, বাগান বদলিয়ে আজকের আগ্রা শহর। এই শহরের জীবনে যে ক্লান্তি আছে তা বেশ বলা যায়।
শহুরে জীবনটা আমাদের খুব দরকারি কিন্তু মন ক্লান্ত হয় বড় এখানে, মনে চাই সজীবতা তাই গ্রামের কথা কথা ভাবি।
গ্রামের মাঠের ধান থেকে চাল, সেই চাল দিয়ে ভাত খাওয়া, বিল নদীর মাছ খাওয়া, গরু ছাগল, মুরগীর মাংশ, বা মাঠের শাক সবজ্বি খাওয়া।
মাঠের ফুল দিয়ে ঘর সাজানো, গাছের কাঠ দিয়ে আসবাব বানিয়ে ঘর সাজানো আর গ্রাম থাকবে আমাদের থেকে বহু দূরে !! এ সব ভাবা এক ধরনের অন্যায় হওয়ার কথা।
আমরা যারা শহুরে আমাদের প্রতিক অনেকটা ইটের মত। আমাদেরকে কে বুঝাবে ! নিজেরাই বড় শিক্ষক নিজেদের।
আমরা যারা গ্রাম্য আমাদের প্রতিক কাদা মাটির মত আমাদেরকে বুঝানো যায়, সাজানো যায়, প্রকৃতির ছাত্র আমরা।
তারিখ : মার্চ ১৫, ২০১৩
রেটিং করুনঃ ,