05/12/2012
স্মৃতিতে আজও স্পষ্ট আশির দশকের কথা। আমার এক চাচা লন্ডন থেকে ঢাকা আসলেন। ধানমন্ডির বাসাটায়। আমার হাতে একটা প্যকেট দিয়ে বললেন ইউনূস সাহেব নামে একজন লোক আসবে প্যকেটটি দিয়ে দিও। বিকালে তিনি আসলেন। এখনকার চেয়ে বেশ লম্বা ও চিকন। আমাদের দেশের বাড়ি কোথায় জানতে চাইলেন। জিজ্ঞাসা করলেন ” ফাঁসিতলা চিনি কী না ” “না” সূচক উত্তর দিতেই বললেন বগুড়া পার হয়ে মোকারম তলা পার হলেই ফাঁসিতলা। ফাঁসিতলায় গ্রামীন ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন করে আসলাম।”
ঠিক তখন থেকে ড. ইউনূসকে চিনা এবং জানা। ফাঁসিতলার প্রাধান সড়কের উপরেই ফাঁসিতলা গ্রামীন ব্যাংকের শাখা। যতবারই বগুড়া পার হয়েছি তত বারই ফাঁসিতলার গ্রামীন ব্যাংকের শাখাটি দেখেছি। বাংলাদেশের বহু জায়গাতে গ্রামীন ব্যাংকের শাখা দেখেছি। কোন কোন এলাকার কোন পাকা দালান নেই অথচ একটি দালান। গ্রামীন ব্যাংক শাখার দালান।
ছোট্ট বেলা থেকেই পড়া – বেল তলার জরিমন, Banker to the Poor, My Life (Bill Clinton autobiography) এতে ড. ইউনূসকে নিয়ে অনেক লিখা।
হাজারো লিখে লেখা শেষ হবে না, ড. ইউনূসকে নিয়ে।
আমাদের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ এর ৫ই ডিসেম্বর আমাদের ডঃ মুহাম্মদ ইউনূসকে গরীবের রক্ত চোষা বললেন। গরীবের রক্ত চুষলে ধরা খেতেই হয়, তাও বললেন।
এর পর থেকে টুকটাক লেখা লেখি। যতটুকু জ্ঞান ছিল লিখেছি, সংক্ষেপে বলতে চেয়েছি। অনেকের নাম খুঁজতে চাইলেও আর খুঁজে পাওয়া যাবে না কোথাও একদিন। ইতিহাসের কলম শুধু লিখে যাবে শতকের পর শতক ধরে ড. মোঃ ইউনূসের নাম। বাংলাদেশের প্রথম নোবেল বিজয়ীর নাম। শান্তীতে নোবেল বিজয়ীর নাম।
আমাদের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন প্রতিনিধি দলের কাছে বিশ্ব ব্যাংককের প্রধান হিসাবে আমাদের নোবেল বিজয়ী ডঃ মুহাম্মদ ইউনূসের নাম প্রস্তাব করেছিলেন। আর তখনই আবারো The Economist লিখল আওয়ামী লীগ সম্পর্কে এতদিন যে ধারনা ছিল নিজের পায়ে কুঠারাঘাত করার এই মতবাদ হঠাৎ করে অচল হল।
বার বার এই দলটি নানান কারণে মানুষের মনে কুঠারাঘাত না করলেও আঘাত করেছে। আমাদের বুঝে উঠা হয়নি আমাদের ড. মোঃ ইউনূস কাদেরকে তিনি আঘাত করেছেন !! কোথায় আঘাত করেছেন !!!!
প্রবীণ আইনজীবী রফিক-উল হক আজ বললেন ” তিনি (সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম) একেবারে হাসির কথা বলেছেন। কত বড় বেকুবের দেশে আমরা আছি! একটি বৃহত্তম দলের বড় নেতা মনে করেন, শান্তিতে নোবেল পেতে হলে যুদ্ধ থামাতে হবে।’”
টিভি খবরে বার বার দেখলো শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া দু চোখ বন্দ করে মানুষকে ছালাম দেওয়ার মত করে ক্রমাগত হাত উঠিয়ে আর নামিয়ে কি কি সব বলেই যাচ্ছিলেন। এ সব শুনে মন অশান্ত হয়।
মন নানান কারণে অশান্ত হয়। আর মন অশান্ত হলে মন চলে যায় প্রসিদ্ধ ইরানী কবি ওমর খৈয়াম ফার্সী ভাষায় তাঁর বিখ্যাত রোবাইয়াৎ- এ।
” আন্ কাসর্ কেহ্ বাহরাম্ দারু জাম গেরেফতে্ ।
…………………………………
…………………………………
…………গুর বাহরাম্ গেরেফতে্ ।
বাংলায় অনুবাদ করলে দাঁড়ায় ” ঐ যে দেখ প্রাসাদ, বাহরাম্ সেখানে সূরা পানে মত্ত থাকতেন। এখন ওখানে হরিণ জন্ম দেয় তাদের শাবক, মাকড়াশার জাল আর তেলে পোকা, টিকটিকি খেলা করে। যে বাহরাম্ সারা জীবন বন্য গাঁধা শিকার করল, দেখেছ কেমন করে সে কবরে শিকার হয়েছে? ”
রেটিং করুনঃ ,