Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

মহামারির পর যুদ্ধ, এবার টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ (২০২২)

Share on Facebook

ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধের কারণে হঠাৎ নানামুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছে ভোগ্যপণ্য ও নির্মাণসামগ্রী খাত। সংকটের মধ্যে টিকে থাকতে নিজেদের মতো করে কৌশল নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। কী সেই কৌশল, সেটি জানিয়েছেন বেসরকারি খাতের ছয়জন উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাহাঙ্গীর শাহ, মাসুদ মিলাদ, মহিউদ্দিন ও শুভংকর কর্মকার

টিকে থাকতে নতুন নতুন কৌশল নিতে হচ্ছে
মোস্তফা কামাল, চেয়ারম্যান, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ (এমজিআই)

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগে থেকেই বিশ্ববাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তি ছিল। বিশেষ করে ভোজ্যতেলের দামে রেকর্ড হয়েছিল। যুদ্ধের পর দামে শুধু রেকর্ডই হয়নি, সহজে পণ্য হাতে পাওয়ার নিশ্চয়তাও কমেছে। অর্থাৎ ঋণপত্র খোলার পর আগের মতো স্বাভাবিক সময়ে পণ্য হাতে পাওয়া যাচ্ছে না।

বিশ্ববাজারে সয়াবিনের দাম প্রতি টন ১ হাজার ৮০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এক বছর আগে ছিল ৭০০ ডলার। শুধু সয়াবিনই নয়, সয়াবিন বীজ, পামতেল, গমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। আবার নিত্যপণ্যের পাশাপাশি নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দামও বেড়েছে। এটা শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের সব দেশেই যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে পণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখাটাই বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, পণ্যের সরবরাহ থাকলে বাজার খুব বেশি অস্থির হবে না।

দেড় দশক আগেও বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম চূড়ায় উঠেছিল। এরপর হঠাৎ কমে লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চাপ পড়েছে বিশ্ববাজারে। এমন পরিস্থিতিতে পণ্যমূল্যের দাম সামনে কোথায় দাঁড়ায়, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। এমন অনিশ্চয়তায় আমদানি করলে ঝুঁকি বাড়ে। লোকসানের ঝুঁকি জেনেও আমরা আমদানি অব্যাহত রেখেছি।

এটা ঠিক, যুদ্ধ যদি দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে টিকে থাকার জন্য কৌশল পরিবর্তন করতে হবে। আমার মনে হয়, ইতিমধ্যে টিকে থাকার যুদ্ধ শুরু হয়েছে আমাদের। তবে একটি কথা না বললেই নয়, স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ ঠিকই পুনর্গঠন হয়েছিল। ধীরে ধীরে আজকের এ অবস্থানে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ। ঠিক একইভাবে বৈশ্বিক এই সংকটও থেকে উত্তরণ হতে পারব বলে আশাবাদী। উদ্যোক্তা হিসেবে এমন সংকটেও ঘাবড়ে যাইনি। টিকে থাকতে নতুন নতুন কৌশল নিতে হচ্ছে।

জাহাজ চলাচলের কোনো রুট বন্ধ হলে সংকট ভয়াবহ হবে
ফজলুল হক, সাবেক সভাপতি, বিকেএমইএ

ইউক্রেনে রুশ হামলার কারণে সামগ্রিকভাবে তৈরি পোশাকশিল্পে বড় কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলেই মনে হচ্ছে। কারণ, রাশিয়ার ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ পোশাক আমদানি করে, সেটি বন্ধ হলেও সমস্যা বড় হবে না। তবে রাশিয়ানরা তো আর পোশাক কেনা বন্ধ করবে না। সে ক্ষেত্রে তুরস্ক ও পোল্যান্ডের মতো পার্শ্ববর্তী দেশের মাধ্যমে রাশিয়ায় পোশাক যাবে। তবে যুদ্ধের কারণে সরাসরিভাবে বাংলাদেশের ৪০-৫০টি তৈরি পোশাক কারখানা ঝামেলায় পড়েছে। চলমান ক্রয়াদেশের পণ্য পাঠাতে পারছে না। আগে পাঠানো অর্থও আটকে গেছে। ক্রেতারা পণ্য নিতে বিকল্প পথ খুঁজছে। সেটি খুঁজে পেতে হয়তো কিছু সময় লাগবে। কোনো কোনো ক্রেতা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে বিকল্প পেতে পণ্য পাঠাতেও নির্দেশনা দিতে শুরু করেছে।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ধাক্কা কাটানোর মতো সক্ষমতা আমাদের পোশাকশিল্পের রয়েছে। সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাগুলোও অন্য ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করছি। তবে যুদ্ধ যদি দীর্ঘ সময় ধরে চলে এবং তেল ও খাদ্যের দাম ব্যাপক হারে বেড়ে যায়, তাহলে আতঙ্ক তৈরি হবে। এর মধ্যে যুদ্ধ যদি অন্য দেশে ছড়িয়ে যায় কিংবা যুদ্ধের কারণে বাণিজ্যিক অস্থিরতা তৈরি হয়, তাহলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আবার পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের কোনো রুট যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলেও পোশাক রপ্তানিতে ভয়াবহ সংকট তৈরি হবে।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ কারখানার মালিকদের রাশিয়ার ক্রয়াদেশ নেওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। কারখানার মালিকেরা নিজ নিজ জায়গা থেকে অবশ্যই সেটি নজর রাখবেন। এর বাইরে আপাতত কিছু করার নেই। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের তীক্ষ্ণ নজরদারি রাখতে হবে।

যেকোনো সংকটে নতুন পথ খুলে দেয়
আবুল বশর চৌধুরী, চেয়ারম্যান, বিএসএম গ্রুপ

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের আগেই কৃষ্ণসাগর অঞ্চলের সাধারণ প্রোটিনযুক্ত গমের দাম বাড়তি ছিল। তার আগেই আমরা বিকল্প বাজার সন্ধান করি। বিকল্প উৎস হিসেবে আমাদের পছন্দের তালিকায় ছিল আর্জেন্টিনা। আবার ভারতে ভালো ফলন হওয়ায় গম আমদানির বড় উৎসে পরিণত হয়। তাতে স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি হওয়ায় চড়া জাহাজ ভাড়াও দিতে হচ্ছে না। যুদ্ধের আগেই রাশিয়া-ইউক্রেনের ওপর নির্ভরতা কমে আসায় গমের সরবরাহে সমস্যা হয়নি।

সংঘাত শুরুর পর এখন প্রতিনিয়ত বিশ্বের নতুন নতুন বাজারে খোঁজখবর নিয়েই পণ্য আমদানি করতে হচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে দানাদার পণ্য ২৮-৩০ শতাংশ সারা বিশ্বে সরবরাহ হতো। এই দুই জায়গা থেকে সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে দাম বেড়ে গেছে গম, তেলবীজসহ নানা পণ্যের। চীন ও তুরস্কের মতো দেশ আমদানি বাড়িয়ে নিজেদের খাদ্যপণ্যের সুরক্ষা বাড়াচ্ছে। আবার কেউ রপ্তানি কমিয়ে দিয়েছে। পণ্য আমদানিতে এখন চারদিকে অনিশ্চয়তা বাড়ছে।

যেকোনো সংকটে নতুন পথ খুলে দেয়। ছোট ছোট নতুন বাজার তৈরি হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে একসময় ৪০ শতাংশ গম আমদানি হতো বাংলাদেশে। এখন সেখান থেকে আমদানি বন্ধ। আবার যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে কৃষ্ণসাগর অঞ্চলের কাছাকাছি পোল্যান্ড, রোমানিয়া, মলদোভার মতো যেসব দেশ রয়েছে, সেসব দেশ থেকেও পণ্য আমদানি কঠিন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় এ মুহূর্তে সাধারণ প্রোটিনযুক্ত গমের বড় বাজার হয়ে উঠছে ভারত ও আর্জেন্টিনা। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিকল্প বাজারে যেতে হচ্ছে।

আবার যুদ্ধ থামলেও এই সংকট শিগগিরই শেষ হবে না। কারণ, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে। সে ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদে এই পরিস্থিতি থাকলে তৃতীয় দেশের মাধ্যমে কৃষ্ণসাগর অঞ্চল থেকে আমদানি করা যায় কি না, সেটিও ভাবা দরকার। বেসরকারি খাতে আমদানি হচ্ছে। পাশাপাশি সরকারি খাতেও এখন খাদ্যনিরাপত্তা গড়ে তুলতে আমদানি বাড়ানো দরকার। সরকারের কূটনৈতিক দূরদর্শিতা কাজে লাগিয়ে এটা করা যেতে পারে।

স্থানীয় বাজারে দাম ঠিক রাখতে শুল্ক-কর কমানো উচিত
মো. আলমগীর কবির, সভাপতি, বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমএ)

বাংলাদেশের সিমেন্ট খাতের যত কাঁচামাল প্রয়োজন হয়, তার সবই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সিমেন্ট খাতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে সমুদ্রগামী জাহাজভাড়া ও কাঁচামাল উৎপাদনে। সিমেন্টের মূল কাঁচামাল ক্লিনকার তৈরি করতে জ্বালানির প্রয়োজন হয়। যেমন কয়লা, গ্যাস। যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় কাঁচামালের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তাই বেশি দামে কাঁচামাল কিনতে হচ্ছে আমাদের। অন্যদিকে জাহাজভাড়াও বেড়েছে। এই দুটি কারণে ইতিমধ্যে সিমেন্ট উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২৩ শতাংশ। সিমেন্টের কাঁচামাল আমদানিতে খরচ বেশি হওয়ায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে সিমেন্ট রপ্তানি সাম্প্রতিক সময়ে ৫০ শতাংশ কমেছে।

এখানে বলা প্রয়োজন, সিমেন্ট উৎপাদনে সব ধরনের কাঁচামাল পরিবহনে সমুদ্রগামী জাহাজের ওপর নির্ভরশীল। আর মূলত চুনাপাথর আছে এমন দেশগুলো সিমেন্টের কাঁচামালের উৎস দেশ। বাংলাদেশের কোম্পানিগুলো এ জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এবং পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর ওপর নির্ভর করে। গত কয়েক বছর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ যেমন সৌদি আরব, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি হচ্ছে। এ ছাড়া স্লাগ লাইমস্টোন, ফ্লাই অ্যাশ, জিপসাম—এসব ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, জাপানের ওপর নির্ভরতা বেশি আমাদের।

বাংলাদেশে ছোট-বড় ৩৬টি সিমেন্ট উৎপাদনকারী কারখানা রয়েছে। বার্ষিক ৩ কোটি ৭০ লাখ মেট্রিক টন সিমেন্টের চাহিদার বিপরীতে কোম্পানিগুলোর উৎপাদনক্ষমতা ৮ কোটি ৬০ লাখ মেট্রিক টন। তাই সিমেন্টের বাজারটি তীব্র প্রতিযোগিতামূলক। যুদ্ধ ও অন্যান্য প্রেক্ষাপটে এ খাতে কিছু কর-সুবিধা দেওয়া উচিত। যেমন এই খাতে আমদানি পর্যায়ে ৩ শতাংশ অগ্রিম কর দিতে হয়, যা ফেরতযোগ্য নয় এবং চূড়ান্ত দায় হিসেবে বিবেচিত। এর ফলে ৩ শতাংশ অগ্রিম কর দিতেই হয়। এই অগ্রিম কর প্রত্যাহার করা হলে সিমেন্টে ব্যাগপ্রতি ১৫ টাকা কমতে পারে। অন্যদিকে এই খাতের কাঁচামালের ওপর আমদানি শুল্ক বেশি থাকায় ভ্যাটও বেশি আরোপ করা হয়। দুটো মিলে ২৫ শতাংশের শুল্ক-কর হয়, যা অন্য কোনো খাতের ওপর এত শুল্ক-কর বসে না। সব মিলিয়ে স্থানীয় বাজারে দাম ঠিক রাখতে ও রপ্তানি বাজার ধরে রাখতে অগ্রিম কর প্রত্যাহারের পাশাপাশি শুল্ক-কর কমানো উচিত।

যতটুকু কাঁচামাল দরকার, ততটুকুই আমদানি করছি
আমীর আলীহোসাইন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিএসআরএম

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগেই রড তৈরির কাঁচামাল স্ক্র্যাপের (পুরোনো লোহার টুকরো) দাম বাড়তি ছিল। আর যুদ্ধের পর কাঁচামালের দাম রেকর্ড ছাড়ায়। কারণ, রাশিয়া, ইউক্রেন ও বেলারুশের মতো দেশ থেকে লৌহ ও ইস্পাতপণ্য সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এই তিনটি দেশ বিশ্বে ইস্পাতপণ্যের বড় অংশ সরবরাহ করত। যারা এই তিন দেশ থেকে পণ্য আমদানি করত, তারা এখন অন্য দেশের বাজার থেকে আমদানি করছে। এতে দাম যেমন বেড়েছে, তেমনি সহজলভ্যতাও কমছে। কাঁচামালের দাম বাড়ার উদাহরণ দিই, যুদ্ধের আগে প্রতি টন স্ক্র্যাপের দাম ৫৭৫ ডলারে উঠেছিল। যুদ্ধের দুই সপ্তাহের মাথায় তা ১৪০ ডলার বেড়ে ৭১৫ ডলারে উন্নীত হয়েছে।

কাঁচামালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ায় এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত উদ্যোক্তারা সবাই ভয় পাচ্ছেন। কারণ, এই দর সব সময় থাকবে না। যুদ্ধ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বা রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে দাম কমে যেতে পারে। ফলে এখন অস্বাভাবিক দামে কাঁচামাল কিনে পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতের সময় যদি বিশ্ববাজারে দাম কমে যায়, তাহলে বড় ধরনের লোকসান গুনতে হবে। এটা এই শিল্পের জন্য বড় ঝুঁকি।

বিএসআরএম দেশের বড় প্রকল্পে রড সরবরাহ করছে। ফলে লোকসানের ঝুঁকি জেনেও আমদানি করতে হচ্ছে আমাদের। কারণ, দায়বদ্ধতা থেকেই বড় প্রকল্প ও গ্রাহকদের পণ্য সরবরাহ করতে হয়। ঝুঁকি যতটুকু সম্ভব কমিয়ে আনা যায়, সেই চেষ্টাই করতে হচ্ছে এখন। দাম বাড়লে চাহিদা কমে, এমন ধারণা থেকে যতটুকু কাঁচামাল আমদানি দরকার, ততটুকুই আমদানি করছি।

আপনারা দেখবেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানে এখন রডের দাম আমাদের চেয়ে টনপ্রতি ১২ থেকে ২২ হাজার টাকা বেশি। আমরা সেভাবে বাড়াইনি। খরচ অনুযায়ী দাম সমন্বয় করছি ধীরে ধীরে। প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় আমাদের এখানে তুলনামূলক দাম কম রয়েছে।

কাঁচামালের দাম বাড়লে খরচ বাড়ে গাণিতিক হারে। যেমন এখন ডলারের বিনিময়মূল্য দুই টাকা বেড়েছে। তাতে টনপ্রতি ৭১৫ ডলারে কাঁচামালে ডলারের বিনিময় মূল্যবাবদ খরচ বেড়েছে ১ হাজার ৪৩০ টাকা। আবার পুরোনো লোহার টুকরো থেকে রড তৈরি পর্যন্ত ১৩ থেকে ১৫ শতাংশ বর্জ্য হয়। এ হিসেবে প্রতি টনে ৯০ থেকে ১০০ ডলার পর্যন্ত দামের কাঁচামাল কোনো কাজে আসছে না। অর্থাৎ কাঁচামালের দামের সঙ্গে আনুষঙ্গিক খরচ বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে শুল্ক-করের হার কিছুটা কমানো হলে গ্রাহক পর্যায়ে দাম কিছুটা হলেও কমবে।

গভীর সমুদ্রে দ্রুত টার্মিনাল করা দরকার
আজম জে চৌধুরী, সভাপতি, লোয়াব (এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ)

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম ব্যাপক চড়েছে। বৈশ্বিক এ দাম নির্ধারণ করে সৌদি আরব। এটি সৌদি সিপি (কার্গো প্রাইস) নামে পরিচিত। দেশটি এখন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তৈরি সংকটের সুবিধা নিচ্ছে। শুধু এলপিজি নয়, জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রেও তারা এটি করছে। তারা একটা কূটনৈতিক খেলা খেলছে।

বাংলাদেশের মানুষের জন্য এমন চড়া দামে কেনা কঠিন। তবে কিছুদিন ধরে সিপি একটু কমেছে, যা খুব সামান্য। এটি আরও একটু কমবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। এলপিজির একটা অংশ আসে যুক্তরাষ্ট্রের শেল গ্যাস থেকে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু জাহাজ সেখান থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় আসার জন্য তৈরি হচ্ছে। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ায় মজুত করার বড় টার্মিনালে আসবে, সেখান থেকে জাহাজ বদল করে দেশে আনা হবে। এখনো দাম অনেক চড়া। আগামী আরও দুই মাস আমাদের কষ্ট করতে হবে। এর কোনো বিকল্প আপাতত নেই।

দেশে এলপিজির বাজার ৮০ হাজার টন থেকে ১২ লাখ টনে চলে এসেছে। ছোট ছোট জাহাজে করে এ চাহিদা পূরণ করা অনেক কঠিন। আর এ ধরনের সংকট যে আসতে পারে, এটি আমরা পাঁচ বছর ধরে বলে আসছি। দেশে সরবরাহ নিশ্চয়তার জন্য গভীর সমুদ্রে মজুতের জন্য একটি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা অনেক দিন ধরে আটকে আছে। এর ফলে দেশে সরবরাহ সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়নি। এতে করে সরবরাহ ধরে রাখা কঠিন। দক্ষিণ এশিয়ার বাজার থেকে চড়া দামে কিনে এনে বাজারে সরবরাহ ঠিক রাখা হচ্ছে।

আমাদের কোনো অবকাঠামো নেই, জাহাজ নেই; কিছুই নেই। ব্যবসা এত বিস্তৃত হলো, অথচ এটা কীভাবে পরিচালিত হবে, তার কোনো পরিকল্পনা নেই। কিছুই আসলে করা হয়নি। এখন স্বল্প মেয়াদে করার মতো কোনো রাস্তা নেই, দীর্ঘ মেয়াদে করার আছে সরকারের। ভবিষ্যতের সংকট মোকাবিলায় দ্রুততার সঙ্গে গভীর সমুদ্রে টার্মিনালটি করতে হবে। এ ছাড়া শেল গ্যাসে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। এতে সরবরাহের নিশ্চয়তা বাড়বে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ শেল গ্যাসে বিনিয়োগ করছে।

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: মার্চ ২১, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ