Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

মমতা–ঝড়ে মোদি কাত, বাম সাফ(২০২১)

Share on Facebook

একাত্তরে আগরতলা-কলকাতায় যখন-তখন শোনা যেত একটা স্লোগান—এপার বাংলা ওপার বাংলা/ সবাই বল জয় বাংলা। দুঃখ আর আবেগ এক বিস্ময়কর রাখিবন্ধনে বেঁধেছিল সব বাঙালিকে। বাঙালি শরণার্থী ও মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয় হয়েছিল ‘জয় বাংলার লোক’ হিসেবে। ৫০ বছর পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ভেসে গেছে জয় বাংলার জোয়ারে। এ এক অভিনব উদ্ভাসন।

প্রায় এক দশক হতে চলল, মোদি-ঝড়ে লন্ডভন্ড হচ্ছে ভারত। ১৯৯২ সালে অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ভেঙে রামমন্দির বানানোর রথযাত্রা থেকে ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতির যে মোক্ষম তিরটি ছুড়েছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) চতুর নেতৃত্ব, তা ঠিকমতোই বিঁধেছিল আমজনতার বুকে। তার ফসল তোলার জুড়িগাড়িতে প্রথমে অটলবিহারি বাজপেয়ি এবং পরে নরেন্দ্র মোদি সওয়ার হলেন। ভারতে একের পর এক রাজ্য তাঁদের হিন্দুত্ববাদের নিশানবরদার হলো।

ছোট্ট বাংলাদেশ সেঁধিয়ে আছে ভারতের পেটের ভেতরে। পুবে ত্রিপুরা আর উত্তরে মেঘালয়-আসাম। সব রাজ্যে পতপত উড়ছে বিজেপির গৈরিক ঝান্ডা। বাকি ছিল পশ্চিমবঙ্গ। সেটির দখল নিতে তুরুপের সব তাস ব্যবহার করেছে বিজেপি। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের ধোয়া তুলে, মমতার দল থেকে লোক ভাগিয়ে, উন্নয়নের ঢাক বাজিয়ে, দিল্লি থেকে পাত্র-মিত্র-সভাসদ নিয়ে বারবার পশ্চিমবঙ্গে এসে অগুনতি মিছিল-মিটিং করেছেন মোদিজি। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। রাজ্যের নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, খেলা হবে। ভাঙা পা নিয়ে হুইলচেয়ারে বসে বিজেপির জালে গোলবন্যা বইয়ে দিয়েছেন তিনি। বহুজাতিক ভারতের একটি রাজ্যে তিনি এখন নিঃসন্দেহে একজন জাতিবাদী নেতা।

মোদিজি নেহাতই ভদ্রলোক। কালবিলম্ব না করে টুইট বার্তায় মমতাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বাংলাদেশে আমরা এমনটা দেখি না। দুই দেশের মধ্যে সাংবিধানিক গণতন্ত্রচর্চার এই ফারাকটুকু চোখে পড়ার মতো।

ভারতের বিজেপি সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের আওয়ামী সরকারের গলায়-গলায় ভাব। একটা প্রচার আছে যে হাসিনা-মোদি যুগে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক শিখরে পৌঁছেছে। অন্যদিকে বিজেপির রাজনীতি নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ বেশ আতঙ্কে। এমন নয় যে কংগ্রেস সরকারের আমলে দুই দেশের মধ্যে গলায়-গলায় পিরিতি ছিল। দ্বিপক্ষীয় সমস্যাগুলোর যে কয়টির আজতক সুরাহা হয়েছে, তার সবই হয়েছে যখন দিল্লিতে ছিল অকংগ্রেসি সরকার। পশ্চিমবঙ্গে বাম জোট ক্ষমতায় থাকাকালে গঙ্গার পানি চুক্তি হয়েছে। কারণ, বাম নেতা জ্যোতি বসু এটা আন্তরিকভাবে চেয়েছিলেন। মমতার কারণে তিস্তা চুক্তি ভেস্তে গেছে। এভাবে দেখলে মমতাকে ভিলেন মনে হতে পারে। বাংলাদেশে অনেকেই ভেবেছিলেন, বিজেপি জিতলে হয়তো এর একটা হিল্লে হবে।
তারপরও বাংলাদেশের মানুষ মমতার জয়ে যত না খুশি হয়েছে, তার চেয়ে বেশি উল্লসিত হয়েছে বিজেপির পরাজয়ে। কারণ, সমস্যাটা শুধু জলের নয়, সমস্যাটা বিজেপির রাজনীতির।

বাংলাদেশের মানুষ যে সবাই সেক্যুলার, এটা মনে করার কারণ নেই। সব বড় দলের নেতাই নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন হজরত শাহজালালের মাজার জিয়ারত করে। ভোটারের অনুভূতিতে সুড়সুড়ি দিয়ে ভোট কবজা করার এ এক ফন্দি। কিন্তু বিজেপির উত্থানে বাংলাদেশের মানুষ বেশ খানিকটা অনিশ্চয়তা আর আতঙ্কে আছে। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি আসা মানে ঘাড়ের ওপর চড়ে বসা। আপাতত স্বস্তি মিলেছে।
এক অর্থে বিজেপি অনেক ভালো ফল করেছে। বিধানসভায় তাদের আসন বেড়েছে অনেক। রাজ্যে তারা এখন প্রধান বিরোধী দল। তাদের জনসমর্থন বেড়েছে। তাদের ভাগে ২৬ শতাংশ আসন জুটলেও ভোট পড়েছে ৩৮ শতাংশ। মমতা-মোদি ঝড়ে কংগ্রেস আর বাম একেবারে সাফ হয়ে গেছে। এটা একধরনের মেরুকরণ। এখানেই হয়তো লুকিয়ে আছে সংকট। অন্যদিকে বামেরা যে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে, তাদের কথা যে মানুষ বোঝেন না, এটা তাঁরা এখনো বুঝতে চান না।

কলকাতার দ্য টেলিগ্রাফ শিরোনাম করেছে—এন ইনক্লুসিভ ভোট। এর মাজেজা বাংলাদেশে বসে ভালোই টের পাওয়া যায়। ও দেশে এখনো ভোট হয়। মানুষ ভোট দিতে যান। তাদের ভোট গোনা হয়। ফলাফলে নাগরিক ইচ্ছার প্রতিফলন দেখা যায়। শত ঝগড়াঝাঁটি আর খুনোখুনির মধ্যে এটা একটা আশাজাগানিয়া ব্যাপার।

লেখক: মহিউদ্দিন আহমদ লেখক ও গবেষক
সূত্র: প্রথম আলো:
তারিখ: মে ০৩, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ