দুপুরে হোক, সকালে হোক বা রাতে হোক খালি চোখে আকাশকে সঠিক বা পুরাপুরি দেখা য়ায় না, এটা কোন নতুন কথা নয়, সকলের জানা কথা। বিজ্ঞানাগার থেকে আধুনিক সব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে বেশি করে আকাশকে দেখা যায়, এটা বিজ্ঞানের দাবি আর আমাদের সামনে নানান তথ্য উপাথ্য তুলে ধরেন।
বিজ্ঞান যখন সুক্ষ্ম ভাবে নানান তথ্যে, নানান তত্ব দিয়ে, প্রমান দিয়ে আমাদের সামনে তুলে ধরেন যে আকাশকে এবার আগের থেকে আরো বেশি করে দেখা যাচ্ছে তখন অনেক কিছুই আমাদের মনকে পুলোকিত করে না, মনকে দোলা দেয় না, আর এ কারণে বিজ্ঞানকে ছোট্ট করে দেখার কোন অবকাশ নেই। বিজ্ঞান আমাদের ধারনার, চেতনার বিকাশ ঘটায়। আমদের বুদ্ধিকে উর্বর করে। তবে বড় সমস্যা হলো বিজ্ঞানের কঠিন তত্বগুলি অনেকেরই বোধগম্য নয় যতখানি সাহিত্য আমাদের কাছে বোধগম্য। একটি কবিতা, গল্প বহু সংখ্যক মানুষের মনকে দোলা দেয়, সাড়া দেয়, চেতনা দেয় আমাদের ভিতরের চোখ দেখার জন্য খুলে দেয়। আমাদের অনেক কিছু দেখাতে সাহায্য করে।
বড় বড় আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে আকাশকে যত বেশি দেখা যায় তাঁর চেয়ে হয় তো আকাশকে আরো বেশি করে দেখা যায় যদি লিখা যায় কবিতার ভাষায় পরের কথা গুলি
“আকাশ পানে চেয়ে দেখি, তুমি তারার মালায় থাকো
সূর্য্য, চন্দ্রের অসীম সীমানায়, তুমি তোমার সীমানা আকোঁ”
আমরা আমাদের প্রিয় মানুষগুলিকে দেখি, তাদের সাথে কথা বলি। মানুষগুলিকে কত খানি দেখি !! হয়তো আমাদের সে দেখা আধুনিক সব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে আকাশকে যত খানি দেখা !!
প্রিয় মানুষগুলিকে শুধু দেখলে তো হবে না, আমাদের মনের রাজ্যে জায়গা করে দিতে হবে। ঠিক কতখানি জায়গার বরাদ্দ করে দিতে হবে তা আমাদের মাপা দরকার।
সন্মানিত পাঠক বলবেন আপনি এবার হাসালেন !! এ কেমন কথা যে মাপের ফিতা দিয়ে মনের জায়গা মাপবেন !! তবে যাই হোন না কেন মাপের ফিতা দিয়ে মনের জায়গা মাপাটা বড় জরুরী। খুব দরকার।
ধরুন, আমার এক প্রিয় মানুষকে আমার মনের মধ্যে বড় একটা জায়গা তাঁকে দিলাম থাকার জন্যে, কিন্তু বলা নাই, কোন নোটিশ নাই ওনার জায়গা ভালো লাগে নাই বলে তিনি আমার দেওয়া জায়গা ছেড়ে দিয়ে চলে গেলেন। ওনার তো কোন ক্ষতি নাই উনি অন্য কোথায় আরো হয়তো ভালো জায়গা পেয়েছেন তাই চলে গিয়েছেন। কিন্তু আমি জানি তিনি আমার বরাদ্দ কৃত জায়গা থেকে চলে গলেন, বরাদ্দকৃত জায়গাটায় একটি ক্ষত সৃষ্টি করে দিলেন, মনের ঐ জায়গাটায় কষ্টের একটা মেশিন তৈরী করে দিলেন, বেদনার চাদর দিয়ে জায়গটা ঢেকে দিলেন।
এই লেখাটা ব্লগের সন্মানিত পাঠকদের ভালো করে বুঝার কথা, আমরা আমাদের মনের রাজ্য থেকে কার জন্য কত খানি জায়গা বরাদ্দ করে দিচ্ছি !! আর কত দিনের জন্য!! সন্মানিত পাঠক হয় তো বলবেন আপনি কি মনের রাজ্যের বাড়ি ওয়ালা হয়ে গেলেন নাকি যে সবাইকে ভাড়াটিয়া ভাবছেন !!
মনের রাজ্যের বাড়ি ওয়ালা হয়েছি আজ এই জন্য যে, অনেকে বাড়ি ভাড়া না দিয়ে, মনে কষ্ট দিয়ে বেদনার চাদর দিয়ে এমন ভাবে ঢেকে দিয়েছেন যে আমি এখন শূন্য তাপ মাত্রায় দারজিলিং এ আছি।
হাসির কথা হোক আর ভারাক্রান্ত মনে কথা হোক, আমাদের জানা দরকার যে কারা কারা আমাদের মনের বাসিন্দা হচ্ছেন !! তাঁরা মন রাজ্যে কত দিন থাকবেন !! আর আমাদের মন রাজ্যের আয়তনই বা কত !!
আবারো সেই প্রশ্ন – মন রাজ্যের আয়তন মাপবো কোন ফিতা দিয়ে !!
মনের অনেক গভীরে একটি মোটা সিন্দুকে একটি শুদ্ধ মন থাকে ওটাই মনের আয়োতন মাপার ফিতা।
রেটিং করুনঃ ,