Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

ভয়াবহ আর্থিক সংকট চা দিয়ে তেলের দাম শোধ করতে চায় শ্রীলঙ্কা (২০২২)

Share on Facebook

চীনা ঋণের জালে আটকা পড়েছে শ্রীলঙ্কা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ঋণ পুনর্গঠনের অনুরোধ জানিয়েছেন। গত এক দশকে চীনের কাছ থেকে ৫০০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। সড়ক, বন্দরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নির্মাণে চীন এই ঋণ দিয়েছে শ্রীলঙ্কাকে।

কিন্তু সমালোচকেরা বলছেন, এই টাকা অপ্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় করেছে শ্রীলঙ্কা। ফলে এসব প্রকল্প থেকে তেমন সুবিধা মেলেনি। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, ‘দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় চীন সরকার ঋণ পুনর্গঠনে মনোযোগ দিলে আমরা বেশ স্বস্তি পাব।’

শুধু তা-ই নয়, শ্রীলঙ্কা চীন থেকে যেসব পণ্য আমদানি করে, সেই আমদানির ক্ষেত্রেও যেন তাদের ছাড় দেওয়া হয়। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। পাশাপাশি শ্রীলঙ্কা স্বাস্থ্যবিধি মান্য করা সাপেক্ষে চীনা পর্যটকদের আসার অনুমতি দিতে চায়। মহামারির আগে শ্রীলঙ্কায় আসা পর্যটকদের বড় একটি অংশই ছিল চীনারা। কিন্তু মহামারির কারণে চীনা পর্যটক আসা কমে যাওয়ায় মার খেয়েছে শ্রীলঙ্কা।

চীন শ্রীলঙ্কার চতুর্থ বৃহত্তম ঋণদাতা। তার আগে আছে এডিবি, জাপান ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ঋণ তহবিল। তবে চীন বেশ সহজ শর্তে শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দিয়েছে। কিন্তু শ্রীলঙ্কা নানা কারণে বৈদেশিক মুদ্রার সংকটে পড়েছে। অনেক বিশ্লেষক বলছেন, পরিস্থিতির এত অবনতি হয়েছে যে শ্রীলঙ্কার এখন খেলাপি হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

২০২২ সালে শ্রীলঙ্কাকে ৪৫০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ ঋণ পরিশোধ করতে হবে। শিগগিরই সেই পর্ব শুরু হবে। ১৮ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কার ৫০ কোটি ডলারের একটি সার্বভৌম ঋণের মেয়াদ শেষ হবে। শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক বারবার বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করেছে যে তারা ঋণ পরিশোধ করতে পারবে এবং চলতি মাসের এই ঋণ পরিশোধের অর্থ ইতিমধ্যে আলাদা করে রাখা আছে।

চীনের ‘অঞ্চল ও সড়ক’ শীর্ষক প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার শ্রীলঙ্কা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে চীন ইউরোপ মহাদেশের সঙ্গে যুক্ত হতে চায়। যদিও যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলো মনে করে, এটি কার্যত চীনের ঋণ ফাঁদ। অর্থাৎ ছোট ও দুর্বল দেশগুলোকে এই প্রকল্পের আওতায় এনে ঋণের ফাঁদে ফেলতে চায় চীন।

তবে বেইজিং যথারীতি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। তারা এ-ও বলেছে, পশ্চিমা বিশ্ব এসব কথা বলে তার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায়।

এদিকে ঋণ পরিশোধের নানা কায়দা খুঁজছে শ্রীলঙ্কা। ইরান থেকে তারা যে তেল আমদানি করেছে, তার অর্থ এখন চা দিয়ে পরিশোধ করতে চায়। ইরান শ্রীলঙ্কার কাছে ২৫ কোটি ১০ লাখ ডলার পাবে। শ্রীলঙ্কা প্রস্তাব দিয়েছে, প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ চা-পাতার বিনিময়ে এই ঋণ পরিশোধ করতে চায় তারা।

গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মুদ্রার ব্যাপক দরপতন ও খাদ্য মূল্যবৃদ্ধির কারণে শ্রীলঙ্কা অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা জারি করে। পরিস্থিতির অবনতি হলে তারা বাংলাদেশের কাছ থেকে কারেন্সি সোয়াপ বা মুদ্রা বিনিময়ের আওতায় ২৫ কোটি ডলার ঋণ নেয়।

কেন এই দুরবস্থা

প্রায় আড়াই দশকের গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত শ্রীলঙ্কা একসময় অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করতে বৈদেশিক ঋণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। এই নির্ভরশীলতা দিন দিন বাড়তেই থাকে।

১৯৯৭ সালে বিশ্বব্যাংক যখন শ্রীলঙ্কাকে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তখন নিম্ন আয়ের দেশ হিসেবে শ্রীলঙ্কা সহজ শর্তে যেসব বৈদেশিক ঋণ পেত, তা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তারা ঋণের জন্য নতুন মাধ্যম খুঁজতে শুরু করে।

২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য দেশটি প্রথমবার ৫০ কোটি ডলার সমমূল্যের সার্বভৌম বন্ড ছাড়ে। কিন্তু একসময় তারা এই বন্ডের মাধ্যমে ঋণ নেওয়ার দিকে অতিমাত্রায় ঝুঁকে পড়ে।

এই বন্ডের শর্তগুলো বেশ কঠিন। এই ঋণ শোধ করার জন্য সময় দেওয়া হয় ৫ থেকে ১০ বছর, সুদের হার ৬ শতাংশের ওপর। আর সময়সীমা পার হয়ে গেলে বিনা জরিমানায় ঋণ পরিশোধে অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয় না।

সবচেয়ে কঠিন শর্ত হলো, এই বন্ডের মূল বা আসল টাকা বন্ডের মেয়াদপূর্তির সময় একবারে পরিশোধ করতে হয়। অন্যান্য বন্ডের মতো কয়েক বছর মিলিয়ে শোধ করার সুযোগ নেই। তাই বন্ডের মেয়াদপূর্তির সময় ঋণগ্রহীতা দেশের ওপর বড় ধাক্কা আসে, শ্রীলঙ্কার বেলায় ঠিক তা-ই হয়েছে।

২০২০ সালের শেষে এসে দেখা যায়, শ্রীলঙ্কার মোট বৈদেশিক ঋণের অর্ধেকই এসেছে সার্বভৌম বন্ডের মাধ্যমে। এর আগে মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে কিছুটা উন্নতি করায় ২০১৯ সালের জুলাই মাসে শ্রীলঙ্কা উচ্চমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়। কিন্তু এর ঠিক পরের বছরের জুলাইয়ে বিশ্বব্যাংক মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশকে রেটিং করার নতুন মানদণ্ড নির্ধারণ করে, যার কারণে শ্রীলঙ্কা আবার নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে নেমে আসে।

শ্রীলঙ্কার জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে যায় যখন মাত্রাতিরিক্ত ঋণের কারণে আন্তর্জাতিক সার্বভৌম ঋণের রেটিংয়ে দেশটি আরও নিচে নেমে যায়। ফলে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তাদের নতুন করে ঋণ নেওয়ার সক্ষমতা কমে যায়।

২০২০ সালে ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি ফিচ শ্রীলঙ্কাকে ট্রিপল সি রেটিং দেয়, যার মানে হচ্ছে, নতুন ঋণ নিলে শ্রীলঙ্কার পক্ষে পরিশোধ করার সম্ভাবনার চেয়ে ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।

এই পরিস্থিতিতে ২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কার ৮৮ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি ২০১৯ সালে এসে কমে ৮৩ দশমিক ৯৭ বিলিয়নে নেমে আসে। ২০২০ সালে আরও কমে ৮০ দশমিক ৭ বিলিয়নে নেমে আসে। তার ওপর শুরু হয় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। পর্যটক হারিয়ে ধুঁকতে থাকে তারা। বৈদেশিক মুদ্রার সংকট এত তীব্র হয়ে যায় যে শ্রীলঙ্কার সরকার ২০২০ সালের মার্চে আমদানির ওপর অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

এখন পরিস্থিতি এতই করুণ যে তাকে ঋণ পুনর্গঠনের আবেদন করতে হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, ঋণ পরিশোধে তাকে এখন অর্থের বদলে চা দেওয়ার প্রস্তাব করতে হচ্ছে।

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ জানুয়ারী ১6, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ