Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

ভারতে ধর্মের নামে বিভেদ তৈরির কৌশল আর টিকবে না-শশী থারুর

Share on Facebook

লেখক: শশী থারুর জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

একটি দেশ সম্পর্কে যে ধারণা বহু আগে থেকে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে, তা মামুলি একটি জনমত সমীক্ষা দিয়ে নাড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা বিরল। তবে সেই বিরল ঘটনা ঘটিয়েছে পিউ রিসার্চ সেন্টার। তারা ভারতের অধিবাসীদের ধর্ম ও ধর্মচিন্তা নিয়ে সম্প্রতি একটি জরিপভিত্তিক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। জরিপে দেখা গেছে, ভারতের জনগণের একদিকে ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ও সহাবস্থানে বিশ্বাসী লোক যেমন আছে, অন্যদিকে ধর্মভিত্তিক শ্রেষ্ঠত্ববাদী চেতনার মানুষও আছে।

২৫ বছরের বেশি সময় ধরে আমি বলে আসছি (বিশেষ করে ১৯৯৭ সালে প্রকাশিত আমার ইন্ডিয়া: ফ্রম মিডনাইট টু দ্য মিলেনিয়াম অ্যান্ড বিয়ন্ড বইয়ে এ বিষয়ে বিশদ আলোচনা করেছি), যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে সেই রকমের একটি পাত্র, যার মধ্যে রাখা বিভিন্ন ধরনের খাবার মিলেমিশে গলে একেবারে একাকার হয়ে গেছে। অন্যদিকে ভারতের তুলনা হলো থালির মতো। ‘থালি’ হচ্ছে ভারতীয়দের আহারে ব্যবহার্য একধরনের বড় থালাবিশেষ। চ্যাপ্টা এই বিশেষ থালায় একই সঙ্গে ছোট ছোট বাটিতে ডাল, সবজি, মাছ, চাটনির মতো ভিন্ন ভিন্ন পদের খাবার রাখা হয়। খাবারগুলো একজনের পাতে একই সঙ্গে দেওয়া হয়, কিন্তু আলাদা আলাদা বাটিতে থাকার কারণে এক ঝোলের সঙ্গে ডাল বা মাছের সঙ্গে সবজি মিশে যাবে না।

পিউ রিসার্চের ‘ভারতে ধর্ম: সহিষ্ণুতা ও বিভেদ’ শীর্ষক এই গবেষণা আমার বহুদিন থেকে প্রচার করা সেই হাইপোথিসিকেই বাস্তব হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ভারত গভীরভাবে ধর্মানুরাগী। ৯৭ শতাংশ ভারতীয় বলেছেন, তাঁরা ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন এবং ৮০ শতাংশ ঈশ্বরের অস্তিত্বে নিশ্চিত বলে দাবি করেছে। পিউ রিসার্চ তাদের পর্যবেক্ষণে বলেছে, ‘ভারত শুধু বিশ্বের সবচেয়ে বেশিসংখ্যক হিন্দু, জৈন ও শিখের আবাসভূমিই নয়, ভারতে বিশ্বের অন্যতম মুসলিম জনবহুল দেশ। খ্রিষ্ট ও বৌদ্ধধর্মের মানুষও রয়েছে। এসব ধর্মাবলম্বীর প্রায় সবাই বলেছেন, নিজ নিজ ধর্মের উপাসনার ক্ষেত্রে তাঁরা স্বাধীন।’ ৫৩ শতাংশ বলেছেন, ধর্মের এই বৈচিত্র্য ভারতের জন্য মঙ্গলজনক হয়েছে। জরিপে দেখা যাচ্ছে, ৮৪ শতাংশ ভারতীয় বলেছেন, তাঁরা অপরের ধর্মচর্চার স্বাধীনতায় শ্রদ্ধা রাখাকে নিজ ধর্মবিশ্বাসের অঙ্গ বলে মনে করেন।

পিউ রিসার্চের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, ‘প্রধান প্রধান ধর্মের অনুসারীদের অধিকাংশ লোক বলেছেন, “সত্যিকার ভারতীয়” হতে হলে অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ তাঁরা মনে করেন, সহিষ্ণুতাও ধর্মাচারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

এ সত্ত্বেও দেখা যাচ্ছে, এখানে বিভেদের দেয়াল অত্যন্ত শক্ত। যেমন জরিপ বলছে, ৩৬ শতাংশ হিন্দু ধর্মাবলম্বী বলেছেন, তাঁরা প্রতিবেশী হিসেবে মুসলমানদের পছন্দ করেন না (অবশ্য তার মানে এই নয় যে বাকি ৬৪ শতাংশ হিন্দু প্রতিবেশী হিসেবে মুসলমানদের গ্রহণ করতে আগ্রহী)। একইভাবে ভারতীয়রা আন্তধর্মীয় কিংবা আন্তবর্ণে বিবাহেরও ঘোর বিরোধী।

খুবই দুঃখজনক বিষয় হলো, ভারতীয়দের মধ্যে নিজের ধর্মের বা নিজের সম্প্রদায়ের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়তে বেশি পছন্দ করে। ৬৪ শতাংশ হিন্দু মনে করে, ‘সত্যিকারের ভারতীয়’ হতে গেলে হিন্দু হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। উত্তর ভারতের হিন্দুরা আরও কট্টর। তাঁরা মনে করেন, ‘সত্যিকার ভারতীয়’ হতে হলে হিন্দিভাষী হওয়াও খুব জরুরি। এভাবে এখানে প্রতিটি ধর্ম ও একেকটি ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে থাকা অসংখ্য বর্ণ ও গোত্রের লোকেরা নিজেদের চারপাশে সাম্প্রদায়িক পরিচয়ের এক অদ্ভুত অদৃশ্য দেয়াল তুলে রেখেছেন।

এই বিষয়টাকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলে অনেক রাজনৈতিক দল ব্যবহার করে আসছে। ভারতীয় জাতীয়তাবাদের নতুন একটি চেহারা দিতে ক্ষমতাসীন বিজেপির সমর্থকেরা ‘হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্তান’ স্লোগানকে ছড়িয়ে দেওয়া শুরু করেছেন। তাঁরা মনে করেন, যাঁরা হিন্দু ও হিন্দিতে কথা বলতে সক্ষম, তাঁরাই প্রকৃত হিন্দুস্তানি।

এতেই বোঝা যায়, ভারতের সংখ্যালঘুরা বৈষম্যের ঝুঁকিতে আছেন। যেমনটি পিউ রিসার্চ বলেছে, ভারতীয় প্রতি পাঁচজন মুসলমানের একজন বলেছেন, তাঁরা ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে বৈষম্যের শিকার হয়ে থাকেন। ঠিক একই সঙ্গে ৯৫ শতাংশ ভারতীয় মুসলমান ভারতীয় নাগরিক হিসেবে গর্ববোধ করে থাকেন।

এই জরিপে আরেকটি দিক উঠে এসেছে। সেটি হলো, সব ধর্মের অনুসারীরাই কর্মসংস্থানের অভাব, দুর্নীতি ও মহামারি মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ। এসব ইস্যুতে তারা এক হচ্ছে। ফলে ধর্মের দোহাই দিয়ে বিজেপি সরকার ভারতীয় সমাজে বিভেদের দেয়ালকে শক্ত করে চলেছে, তা হয়তো খুব বেশি দিন আর টিকবে না। এটিই আপাতত আশার কথা।

ইংরেজি থেকে অনূদিত, স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট

শশী থারুর জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: আগষ্ট ১১, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

,

নভেম্বর ২২, ২০২৪,শুক্রবার

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ