Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

ভারতে ধর্মবিশ্বাস ও বিভাজন – পিউ রিসার্চের সমীক্ষা (২০২১)

Share on Facebook

লেখক: সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় নয়াদিল্লি

পিউ রিসার্চের সমীক্ষা
ভারতে ধর্মবিশ্বাস ও বিভাজন

যুক্তরাষ্ট্রের জনমত জরিপ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চ সেন্টার সম্প্রতি ভারতের ধর্মাচরণ–সম্পর্কিত এক সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে পারস্পরিক সন্দেহ, অবিশ্বাস এবং ধর্মাচরণ ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতার যে ছবি উঠে এসেছে, তা সনাতন ভারতের ধর্মগুরুদের শিক্ষার ফল কি না, সে প্রশ্ন উঠতেই পারে।

হিন্দুত্ববাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাত বছরের রাজত্বে হিন্দু–মুসলমান সম্পর্কে আড়ষ্টতা কতটা বেড়েছে অথবা ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার পারদ কতটা চড়েছে, তার কোনো গবেষণা হয়েছে বলে জানা নেই। যদিও এ কথা অনস্বীকার্য, এই সাত বছরে বেশ কিছু সরকারি সিদ্ধান্তে দুই সম্প্রদায়ের পারস্পরিক অবিশ্বাস ও দূরত্ব বেড়েছে। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা দেখাচ্ছে, ভারতের সব সম্প্রদায়ের অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন, এ দেশে ধর্মাচরণ অবাধ। ধর্মীয় সহিষ্ণুতা গণতান্ত্রিক ভারতের প্রধান বৈশিষ্ট্য। অধিকাংশ মানুষ অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু এই বিশ্বাসের আবডালে এমন মনোভাবও প্রকট হয়েছে যে ৬৪ শতাংশ মনে করেন, হিন্দু না হলে জাতীয়তাবাদী হওয়া যায় না।

সাম্প্রতিক কালের ঘোষিত সাম্প্রদায়িক রাজনীতির আলোয় ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষণের নিরিখে এ এক অদ্ভুত বৈপরীত্য!

বৈপরীত্যের বিস্ময়কর নমুনা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনমত জরিপ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চ সেন্টার সম্প্রতি ভারতের ধর্মাচরণ–সম্পর্কিত এক সমীক্ষার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোভিডের ঠিক আগে ভারতের প্রায় ৩০ হাজার নাগরিকের সঙ্গে আলাপচারিতা শেষে এই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে। সমীক্ষকেরা কথা বলেছেন ১৭ ধরনের ভাষাভাষী মানুষের সঙ্গে। এত দীর্ঘ সময় ধরে এত মানুষের সঙ্গে কথা বলে ভারতে ধর্মাচরণ ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতার যে ছবি প্রকট হচ্ছে, তা সনাতন ভারতের ধর্মগুরুদের শিক্ষার ফল কি না, সে প্রশ্ন উঠতেই পারে। কিন্তু এরই পাশাপাশি আরও এক সত্য দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে উঠছে—পারস্পরিক সন্দেহ ও অবিশ্বাস। তাই সহিষ্ণুতার প্রসঙ্গ যাঁরা কবুল করছেন, নির্দ্বিধায় তাঁরাই জানাচ্ছেন, নিজেদের গণ্ডির আবর্তে অন্য ধর্মানুসারীদের ছোঁয়া বাঁচিয়ে ছাড়া ছাড়া থাকতে তাঁরা বেশি পছন্দ করেন। যেকোনো রাষ্ট্রে সংখ্যালঘু মানসিকতা গোষ্ঠীবদ্ধ নিরাপত্তার যে গণ্ডি টেনে দেয়, ইংরেজিতে যাকে ‘ঘেটো’ বলে, ধর্মসহিষ্ণু ভারত তা থেকে মুক্ত হতে পারেনি। বৈপরীত্য তাই এতটাই বিস্ময়কর!

ধর্মীয় সহিষ্ণুতার যে প্রবাহ সনাতন ভারতে যুগ যুগ ধরে চলে আসছে, তা মানুষকে কর্মফলে বিশ্বাসী করে তুলেছে। সেই ধারাবাহিকতার পরশ এই সমীক্ষাতেও। নইলে পিউ রিসার্চ সেন্টারের গবেষণা কেন দেখাবে, ভারতের ৭৭ শতাংশ হিন্দু–মুসলমান কর্মফলে বিশ্বাসী। ৮১ শতাংশ হিন্দুর পাশাপাশি ৩২ শতাংশ খ্রিষ্টানের বিশ্বাস, পাপস্খলনের অদ্ভুত ক্ষমতা রয়েছে গঙ্গার। ৩২ শতাংশ মুসলমানও সুফি মতবাদের অনুসারী। সব ধর্মের মানুষ মনে করেন, প্রবীণদের সম্মান জানানো প্রকৃত ধর্মাচরণেরই অঙ্গ। ধর্মপালনের মহান ব্রত ও গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা।

এই সহিষ্ণুতা সত্ত্বেও ৬৬ শতাংশ হিন্দু ও ৬৪ শতাংশ মুসলমান মনে করেন, তাঁরা অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র। এই স্বতন্ত্রতার কারণে বিয়েশাদির মতো যাবতীয় সামাজিক অনুষ্ঠান নিজ নিজ নিজস্ব ধর্ম অনুযায়ী করে থাকেন। জরিপ অনুযায়ী, ৬৭ শতাংশ হিন্দু মনে করেন, তাঁদের ধর্মের নারীর অন্য ধর্মে বিয়ে করা উচিত নয়। ৬৫ শতাংশের রায়, হিন্দু পুরুষদেরও উচিত নয় বিধর্মী নারীকে বিয়ে করা। এই ক্ষেত্রে মুসলমান মনোভাব আরও অন্তর্মুখী। ৮০ শতাংশ চান না মুসলিম নারী অন্য ধর্মাবলম্বীকে বিয়ে করুন। ৭৬ শতাংশ মনে করেন, মুসলমান পুরুষদেরও অন্য ধর্মের নারীকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করা উচিত নয়।

এই স্বতন্ত্রতা অবশ্য প্রতিবেশী পছন্দের ক্ষেত্রে ততটা কঠোর নয়। বৈপরীত্য এখানেও। ৩৬ শতাংশ হিন্দু একেবারেই চান না তাঁর প্রতিবেশী মুসলমান হোন। ৪৫ শতাংশ অবশ্য প্রতিবেশী পছন্দের ক্ষেত্রে অতটা ঋজু নন। তবে এই আপত্তি শিখ বা জৈন ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে নেই। কিন্তু আন্তধর্ম বিবাহের মাধ্যমে বিভিন্ন ধর্মের মিশ্রণ ও সহাবস্থানের ক্ষেত্রে অধিকাংশেরই তীব্র আপত্তি। যেমন ৮২ শতাংশ হিন্দু যাঁরা মনে করেন, অন্য ধর্মাবলম্বীদের শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানোই ভারতীয় রীতি। তাঁরা মনে করেন, হিন্দু নারীর অন্য ধর্মে বিয়ে করা একেবারেই উচিত নয়। এই মানসিকতা কেন, তার কোনো ব্যাখ্যা পিউর গবেষণায় নেই। অন্যান্য রাষ্ট্রে যেখানে বৈবাহিক সূত্রে ভিন্ন ধর্মে সম্পর্ক স্থাপনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়, যাকে তারা ‘মেল্টিং পট’ হিসেবে দেখে, ভারতে তা অদৃশ্য। এখানে সহিষ্ণুতার অর্থ ভিন্ন সম্প্রদায়ের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক স্থাপন নয়। পিউর ভাষায় এটা ‘লিভ টুগেদার সেপারেটলি’। অর্থাৎ, একসঙ্গে থাকা। তবে নিজ নিজ ঘেরাটোপে।

মোদির হিন্দুত্বের বিকাশ

পরধর্ম সহিষ্ণুতা বজায় রেখেও স্বতন্ত্র জাগিয়ে হিন্দু্ত্বের বিকাশে নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার শুরু থেকেই সক্রিয়। প্রথম পাঁচ বছরে তাঁর সরকারের নজরে ছিল অযোধ্যার রাম মন্দির নির্মাণের কাঁটা সরিয়ে ফেলা এবং তিন তালাকের মতো প্রথার বিলুপ্তি।

বিজেপির অভ্যন্তরীণ জরিপ সরকারকে তিন তালাক প্রথা রদ করার পরামর্শ দিয়েছিল। তাদের জরিপে যে তথ্য উঠে এসেছিল, পিউর সমীক্ষাতেও আশ্চর্যজনকভাবে তারই প্রতিফলন দেখা গেছে। সমীক্ষার ফল অনুযায়ী, অধিকাংশ মুসলমান হানাফি ভাবাদর্শের অনুসারী, যা তিন তালাককে বিবাহবিচ্ছেদের উপায় হিসেবে মান্যতা দেয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেখা যাচ্ছে, ৫৬ শতাংশ ভারতীয় মুসলমান মনে করেন, একনিশ্বাসে তিনবার তালাক বলে সম্পর্কচ্ছেদ অন্যায়। ৬১ শতাংশ ভারতীয় মুসলমান নারীও এই প্রথার বিরুদ্ধে। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসে প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রথমেই এই প্রথা রদ করার দিকে মনোযোগী হন। ২০১৭ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট তিন তালাক প্রথাকে অসাংবিধানিক বলে রায় দেন। দুই বছর পর ভারতীয় সংসদ আইন প্রণয়ন করে সেই প্রথা নিষিদ্ধ করে। দ্বিতীয়বার জয়ের পর বিজেপির দাবি ছিল, মুসলমান নারীর বিপুল সমর্থন মোদি পেয়েছেন। তা কতটা সত্য, সেই বিতর্ক পাশে সরিয়ে বলা যায়, পিউর সমীক্ষা বিজেপির তৎকালীন অভ্যন্তরীণ জরিপের সঙ্গে সহমত।

সেই থেকে হিন্দুত্বের প্রসারে সংখ্যাগুরুর মেরুকরণে বিজেপির চেষ্টার অন্ত নেই। গোহত্যা বন্ধ, হিন্দু নারীর ধর্মান্তরকরণ রোধের পাশাপাশি জম্মু–কাশ্মীরের দ্বিখণ্ডকরণ ও সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের মতো কাজ শাসক দল বাধাহীনভাবে করে গেছে। মোদির দ্বিতীয় দফায় দায়িত্ব গ্রহণের পর হিন্দুত্বের সর্বাত্মক বিকাশে দল ও সরকার প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত সক্রিয়। জননিয়ন্ত্রণের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে আসাম ও উত্তর প্রদেশের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত সংখ্যাগুরু মেরুকরণে সহায়ক হবে বলে তাদের বিশ্বাস। আগামী বছরের ভোট বৈতরণি পেরোতে এই কর্মসূচি মুশকিল আসানের ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ কথা অনস্বীকার্য, মোদি সরকারের গত সাত বছরের রাজত্বে ধর্মভিত্তিক বিভাজনের পাশাপাশি হিন্দুত্বের বিকাশ মসৃণ হয়ে উঠেছে। পিউ রিসার্চ সেন্টারের সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে তারই প্রতিফলন।
হিন্দি, হিন্দু, হিন্দুস্তান

গত সাত বছরে প্রধানমন্ত্রী মোদির দৌলতে হিন্দু জাতীয়তাবাদী চেতনায় হিন্দি, হিন্দু ও হিন্দুস্তান প্রায় সমার্থক। ব্যাপারটা এই রকম, প্রকৃত জাতীয়তাবাদী ভারতীয় হতে গেলে হিন্দু ও হিন্দিভাষী হওয়া জরুরি। পিউর সমীক্ষায় সেটাই ধরা পড়েছে। ৬৪ শতাংশ হিন্দু মনে করেন, হিন্দু না হলে জাতীয়তাবাদী হওয়া মুশকিল। ৫৯ শতাংশের আবার ধারণা, শুধু হিন্দু হলেই হবে না, সেই সঙ্গে হিন্দিভাষী হওয়াও দরকার। কেননা, হিন্দু ও হিন্দি প্রায় সমার্থক। ৮০ শতাংশ ভারতীয় মনে করেন, সেই প্রকৃত ভারতীয়, যিনি হিন্দু ও হিন্দিভাষী। ২০১৯ সালের ভোটে যাঁরা বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৬০ শতাংশের বিশ্বাস, হিন্দুস্তানির অর্থ হিন্দু ও হিন্দি। পিউ দেখাচ্ছে, এই বিশ্বাসের ধারক ও বাহকেরা প্রধানত আর্যাবর্তের বাসিন্দা। বিন্ধ্য পর্বতের দক্ষিণে এঁদের উপস্থিতির হার নগণ্য। দাক্ষিণাত্যের মাত্র ৫ শতাংশ ভারতীয় হিন্দু, হিন্দি, হিন্দুস্তানে বিশ্বাসী।

বিজেপির অনুসারীদের মধ্যেও এই ধারণা প্রকট। ধর্ম এঁদের কাছে প্রধান। ৮৩ শতাংশ জনতা ধর্মবিরোধী কিছু করতে নারাজ। তা সে খাদ্য, পানীয় বা আচার–আচরণ—যা–ই হোক। ৯৫ শতাংশ মনে করেন, স্বধর্মে থাকাই জীবনের লক্ষ্য। এই বিশ্বাসীদের ৭৩ শতাংশ দৈনিক পূজা করেন। অথচ এঁরাই মনে করেন, ধর্মীয় বৈচিত্র্য ভারতের বৈশিষ্ট্য। লাভজনক। ২৪ শতাংশের মত যদিও ভিন্ন; যাঁরা মনে করেন, এত বৈচিত্র্য ভারতের পক্ষে ক্ষতিকর।
মুসলমান মানসিকতা

বৈচিত্র্য ও বৈষম্য সত্ত্বেও দেশের অধিকাংশ মুসলমান নিজেদের ভারতীয় সত্তায় গর্ববোধ করেন। ৯৫ শতাংশ মুসলমান বলেছেন, ভারতীয় হিসেবে তাঁরা গর্বিত। ভারতীয় সংস্কৃতি, যা কিনা পরধর্ম সহিষ্ণু, তাতে তাঁরা উৎসাহিত হন। ৮৫ শতাংশ মুসলমানের ধারণা, ভারতীয়রা নাগরিক হিসেবে হয়তো নিখুঁত নয়, কিন্তু ভারতীয় সংস্কৃতি অন্য সবার চেয়ে আলাদা।

এই মনোভাব সত্ত্বেও ভারতীয় মুসলমানদের প্রায় প্রতিক্ষণই তাঁদের ভারতীয়ত্ব অথবা জাতীয়তাবাদী চরিত্রের প্রমাণ দিতে হয়। তবে ক্ষেত্রবিশেষে তারতম্য রয়েছে। যেমন উত্তর ভারতে বৈষম্যের হাল সর্বাধিক। ৪০ শতাংশ। উত্তর–পূর্বাঞ্চলে ধর্মীয় বৈষম্য ৩৮ শতাংশ। পশ্চিম, মধ্য ও পূর্ব ভারতে বৈষম্যের এই প্রবণতা সবচেয়ে কম। ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ। দক্ষিণ ভারতে ১৯ শতাংশ। বৈষম্যের এই আঞ্চলিক বিন্যাস সামাজিক ক্ষেত্রেও প্রতিফলিত। লাভ জিহাদ বা গোরক্ষাকে কেন্দ্র করে বৈষম্য ও বিবাদের অধিকাংশ অকুস্থলই উত্তর ভারত। ৬৫ শতাংশ হিন্দু–মুসলমান একযোগে মনে করেন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ভারতের সবচেয়ে বড় সমস্যা। অথচ রাজনৈতিকভাবে এই বিবাদ ও বৈষম্যই হয়ে উঠেছে ভোট জয়ের প্রধান হাতিয়ার।

দেশভাগ ও হিন্দু–মুসলমান মনন

ভারত ভাগ হিন্দু–মুসলমান মানসিকতায় এক বিপুল পরিবর্তন ঘটিয়ে দিয়েছে। স্বাধীনতা আন্দোলন চলাকালে দেশভাগকে কেন্দ্র করে হিন্দু–মুসলমানের মধ্যে যে তিক্ততার জন্ম দেয়, রক্তক্ষয়ী যেসব দাঙ্গা যার সাক্ষী, দেশভাগের সাত দশক পর হিন্দু–মুসলমানের মধ্যে তা নিয়ে পরস্পরবিরোধী মনোভাব দানা বেঁধেছে। পিউর জরিপে রয়েছে সেই বৈপরীত্যের ঝলকানিও। অধিকাংশ ভারতীয় মুসলমান মনে করেন, হিন্দু–মুসলমান সম্পর্কের ক্ষেত্রে দেশভাগ শুভ হয়নি। ৪৮ শতাংশ মুসলমানের ধারণা, দেশভাগ সাম্প্রদায়িক সম্পর্কের হানি করেছে। তুলনায় ৩০ শতাংশ মনে করেন, দেশভাগ দুই সম্প্রদায়ের সম্পর্কের জন্য মঙ্গলদায়ক ছিল। যেসব মুসলমান প্রতিবেশী হিসেবে হিন্দুদের চান না, তাঁদের মধ্যে ৬০ শতাংশ আবার মনে করেন, এই দুই সম্প্রদায়ের সম্পর্কের ক্ষেত্রে দেশভাগ খারাপ ছিল।

একই মনোভাব শিখদেরও। পাঞ্জাব ভাগ হয়ে যাওয়ায় শিখেরা উদ্বাস্তু হয়ে ভারতে চলে আসতে বাধ্য হন। তাঁদের অধিকাংশ (৬৬ শতাংশ) মনে করেন, দেশভাগ হিন্দু–মুসলমান কারও জন্য মোটেই ভালো হয়নি। অবশ্য তরুণ শিখদের মনোভাব বয়স্কদের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন, যেহেতু তাঁদের স্মৃতিতে দেশভাগের কুফল নেই।
ধর্ম ও ধর্মাচরণ

জীবনযাপনের ক্ষেত্রে ভারতীয়দের কাছে ধর্মের বিশেষ স্থান রয়েছে। যেমন ৯১ শতাংশ মুসলমানের কাছে ধর্ম অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এতটা না হলেও ৮৪ শতাংশ হিন্দুরও সেই ধারণা। ৮৪ শতাংশ মুসলমানের দাবি, তাঁরা নিজের ধর্ম সম্পর্কে মোটামুটিভাবে ওয়াকিবহাল। হিন্দুদের ক্ষেত্রে সংখ্যাটি ৭৫ শতাংশ। সব ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেই দৈনন্দিন প্রার্থনার চল বিদ্যমান। মোটের ওপর ৯৭ শতাংশ ভারতীয়ই ঈশ্বরে বিশ্বাসী এবং ৮০ শতাংশ বিশ্বাস করেন, ঈশ্বর আছেন। বৌদ্ধরা অবশ্য এই প্রবণতা থেকে পৃথক। তাঁদের ধর্মবোধও অন্য ধর্মের চেয়ে আলাদা। তাঁদের এক–তৃতীয়াংশ মনে করেন, ঈশ্বর বলে কিছু নেই।

ভারতীয় মুসলমান, খ্রিষ্টান ও শিখ সম্প্রদায়ের অধিকাংশই একেশ্বরবাদী। হিন্দুরা আবার ঈশ্বরের বহুরূপে বিরাজমান হওয়ায় বিশ্বাস করেন। ৫৪ শতাংশের বিশ্বাস, ঈশ্বর এক কিন্তু তাঁর প্রকাশ নানাভাবে।

সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: আগষ্ট ০৭, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

,

নভেম্বর ২২, ২০২৪,শুক্রবার

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ