Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

ভারতের বর্তমান সংবাদমাধ্যম (২০২১)

Share on Facebook

ভারতে কয়েক মাস ধরে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর যেভাবে ধারাবাহিকভাবে আঘাত আসছে, তাতে নরেন্দ্র মোদির সরকারের আমলে দেশটির গণতন্ত্রের প্রকৃত দশা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠছে। এ দেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর সে অবস্থা নাটকীয়ভাবে মোড় নিয়েছে।

দিল্লিতে সহিংস বিক্ষোভের খবর প্রচারের কারণে গত জানুয়ারিতে কয়েকজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডযোগ্য রাষ্ট্রদ্রোহসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে পুলিশ মামলা করেছে। এই সাংবাদিকদের অপরাধ: তাঁরা নিহত বিক্ষোভকারীদের স্বজনদের অভিযোগ তুলে ধরেছিলেন, যেখানে ওই স্বজনেরা অভিযোগ করেছিলেন, পুলিশ গুলি করে তাঁদের স্বজনদের হত্যা করেছে। এ খবর সংবাদপত্রে আসার পর আমি তা নিয়ে একটি টুইট করেছিলাম। সে কারণে আমার বিরুদ্ধেও সেই একই মামলা করা হয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুর ঘটনাসংক্রান্ত ‘ভুল সংবাদ’ ছড়ানোর অভিযোগে আমি (একজন কংগ্রেস পার্টির এমপি) এবং ছয়জন সাংবাদিক অভিযুক্ত হয়েছি। মোদির বিজেপিশাসিত চারটি রাজ্যে আমাদের বিরুদ্ধে এসব মামলা হয়েছে। অনুসন্ধানী সংবাদভিত্তিক সাময়িকী দ্য ক্যারাভান-এর প্রকাশক, সম্পাদক এবং নির্বাহী সম্পাদকের বিরুদ্ধে পাঁচটি রাজ্যে দশটি মামলা হয়েছে এবং সরকারের নির্দেশে ওই সাময়িকীর টুইটার অ্যাকাউন্ট সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য স্থগিতও করা হয়েছিল।

আমাদের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে তা যে একেবারে নতুন ধরনের কিছু, এমন নয়। ফ্রি স্পিচ কালেকটিভ নামের একটি গবেষণা সংস্থার জরিপ বলছে, ভারতে শুধু ২০২০ সালেই ৬৭ জন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের মেয়াদে পেশাগত দায়িত্ব পালনের কারণে প্রায় ২০০ জন সাংবাদিকের ওপর শারীরিকভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৯ সালেই আক্রমণের শিকার হন ৩৬ জন সাংবাদিক।

উত্তর প্রদেশে একটি গণধর্ষণের ঘটনার ফলোআপ নিউজ করতে যাওয়ার সময় সেখানে একজন সাংবাদিককে আটক করা হয় এবং একটি মামলায় ফাঁসিয়ে তাঁকে ছয় মাসের জেল দেওয়া হয়। প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার দূরে কেরালা রাজ্যে ওই সাংবাদিকের মা মারা যাওয়ার পরই কেবল তাঁকে মায়ের মুখ দেখার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।

অথচ যে সংবাদগুলো সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল, অর্থাৎ যে খবরগুলো সরকারের পক্ষে যায়, সেগুলো যদি ভুল তথ্যনির্ভর, অশুদ্ধ ও

অতিরঞ্জিত হয়, বিশেষ করে তা যদি সংখ্যালঘু ও সরকারবিরোধীদের বিরুদ্ধে যায়, তাহলে সেই খবরের সত্যাসত্য যাচাই করা হয় না। মূলধারার গণমাধ্যম, তা

সে ছাপা হওয়া সংবাদপত্র কিংবা টেলিভিশনই হোক—সবার কাঁধেই এখন সরকারের অদৃশ্য জোয়াল তোলা আছে; সবাই মোদির সরকারের ‘চিয়ার লিডারের’ ভূমিকায় রয়েছে।

এখন ভারতে শতাধিক ২৪ ঘণ্টার খবরভিত্তিক প্রাইভেট টেলিভিশন আছে, যেগুলো একাধিক ভাষায় সংবাদ পরিবেশন করে থাকে। আমার রাজ্য কেরালায় এ ধরনের ১৩টি নিউজ চ্যানেল আছে।

কিন্তু দর্শক টানা এবং বিজ্ঞাপন রাজস্ব সংগ্রহের প্রতিযোগিতায় থাকতে গিয়ে এ চ্যানেলগুলো মানসম্মত সাংবাদিকতা থেকে অনেকখানি সরে এসেছে। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে সাংবাদিকতার যে ভূমিকা, তা ভারতে এখন দেখা যাচ্ছে না। সরকারের তোষামোদি ও তথ্যবিবর্জিত সুড়সুড়ি দেওয়ার প্রবণতা এ প্ল্যাটফর্মগুলোকে আচ্ছন্ন করে ফেলছে। যেভাবেই হোক তাদের ‘ব্রেকিং নিউজ’ তৈরি করতে হচ্ছে। আপাতত সরকার বা সরকারপন্থীরা তাদের লক্ষ্যবস্তু নয়; বরং বিরোধী দল, সুশীল সমাজ এবং ভিন্নমতাবলম্বী ব্যক্তিরাই এসব মিডিয়ার মূল লক্ষ্যবস্তু।

যেহেতু ভারতীয়দের মধ্যে শিক্ষার হার বেড়েছে, স্মার্টফোন তুলনামূলক সহজলভ্য হয়ে উঠেছে এবং ইন্টারনেটের খরচ কমেছে, সেহেতু মানুষ টেলিভিশনের পাশাপাশি অনলাইন সংবাদমাধ্যমের ওপর নজর রাখছে আগের চেয়ে বেশি। এতে প্রিন্ট সংস্করণের সংবাদপত্র অধিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে, কারণ যে পাঠকের কাছে ভোরে সংবাদপত্র পৌঁছায়, সে পাঠক আগের রাতেই হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিভিশন খবরের মাধ্যমে হালনাগাদ খবর পেয়ে গেছেন। এ কারণে সংবাদপত্রগুলো টিভি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সরবরাহ করা নিউজের বাইরেও কোনো নতুন নিউজ ‘ব্রেক’ করতে চায়। আর ভারতের সংস্কৃতিতে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কেলেঙ্কারি ও খুঁত বের করার মধ্যেই সবচেয়ে বেশি দৃষ্টি কাড়ার উপজীব্য থাকে। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিয়মিতভাবে বিরোধী নেতাদের চরিত্র হননের বা ভিন্নমতাবলম্বী প্রতিষ্ঠানগুলোর ত্রুটিবিচ্যুতির তথ্য–উপাত্ত এসব খবরের কাগজের কাছে সরবরাহ করে থাকে। এরপর সে সংবাদ ছাপতে তাদের বাধ্য করা হয়। অন্যদিকে সরকারদলীয় নেতা-কর্মীর নেতিবাচক সংবাদ ছাপতে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা আছে।

ভারতের গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখার স্বার্থে সংবাদমাধ্যমকে সরকারকে জবাবদিহি রাখতে যা করণীয় তাই করতে হবে; সরকারের পদলেহন তাদের কাজ নয়।

ভালো খবর হলো: এই কথা সংবাদমাধ্যমের সবাই এখনো ভুলে যাননি। ভারতের এডিটরস গিল্ড প্রধানমন্ত্রী মোদিকে বিতর্কিত তথ্যপ্রযুক্তি আইন (ইন্টারমিডিয়েরি গাইডলাইনস অ্যান্ড ডিজিটাল মিডিয়া এথিকস কোড) বাতিল করতে অনুরোধ জানিয়ে বলেছে, নতুন এ আইন সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে খর্ব করবে।

খারাপ খবর হলো: গণতন্ত্রের গতিবিধি পর্যালোচনা করা আন্তর্জাতিক সংস্থা ফ্রিডম হাউস (যেটি ভারতকে ‘মুক্ত’ থেকে ‘আংশিক মুক্ত’ দেশ হিসেবে অবনমিত করেছে) ও ভি-ডেম ইনস্টিটিউট (যেটি এখন ভারতকে ‘নির্বাচিত স্বৈরতন্ত্র’ বলে অভিহিত করে) ভারতের গণতন্ত্র নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ফ্রিডম হাউস বলেছে, বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল গণতান্ত্রিক দেশের সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হচ্ছে।

সংবাদমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে রাখতে মোদি সরকারের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো উপনিবেশ আমলে প্রণয়ন করা রাষ্ট্রদ্রোহের আইন। এ আইন দিয়ে গত সাত বছরে মোদি সরকার অগণিত মামলা করেছে।

মুক্তি ও উন্নয়নের সর্বোত্তম নিশ্চয়তা হলো সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা। মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন, সব জানালা খুলে দাও, যাতে গোটা বিশ্বের মুক্ত বাতাস ভারতবর্ষের গায়ে লাগে। সেই জানালাই হলো সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা। কিন্তু মোদি সরকার একের পর এক যে নিবর্তনমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে, তাতে সে জানালা বন্ধের আশঙ্কা ঘনীভূত হচ্ছে।

ইংরেজি থেকে অনূদিত, স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট

লেখক: শশী থারুর ভারতের কংগ্রেস পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য ও দেশটির সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: এপ্রিল ৩০, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ