হাজার বছরের ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের সূর্য কি ডুবতে বসেছে? আধুনিক গণতান্ত্রিক ব্রিটেনে শৌর্য ও শক্তির ঐতিহ্যের মুকুটধারী ব্রিটিশ রাজপরিবার এভাবে আর কতকাল টিকে থাকবে? সাম্প্রতিক দশকগুলোতে ঘুরেফিরে এসেছে এই প্রশ্ন। এ ছাড়া রাজপরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিভেদ, তাদের কারও কারও ব্যক্তিগত কেলেঙ্কারি প্রশ্নটিকে আরও শক্তিশালী করেছে। এবার এ নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করলেন দু’বার বুকারজয়ী ব্রিটিশ লেখিকা ডেইম হিলারি ম্যারি ম্যান্টেল। তিনি বলেছেন, দুই প্রজন্মের মধ্যে শেষ হতে পারে ব্রিটিশ রাজতন্ত্র।
রাজতন্ত্রের সমর্থক না হলেও হিলারি ম্যান্টেল ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রতি বিদ্বেষী নন। তার সাড়া জাগানো ট্রিলজি ‘উলফ হল’। ইংল্যান্ডের রাজা অষ্টম হেনরির রাজদরবারের ঘটনা নিয়ে লেখা তার এই উপন্যাস ত্রয়ী। এতে বর্ণিত হয়েছে কামারের ছেলে টমাস ক্রমওয়েলের রাজা অষ্টম হেনরির মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ওঠা এবং তার পতন ও মৃত্যুদণ্ডের ঘটনা। ব্রিটিশ রাজপরিবারের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে সচেতন লেখিকা হিলারি ম্যান্টেল রাজতন্ত্রের বিষয়ে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টাইমসে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। গত শনিবার সেটি প্রকাশিত হয়েছে। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কারণ, সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, তার ধারণা প্রিন্স উইলিয়ামের পুত্র প্রিন্স জর্জ সিংহাসনে বসতে পারবে না। তার আগেই সমাপ্তি ঘটবে ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের।
ব্রিটিশ রাজপরিবারের ভাষ্য, তাদের ইতিহাস ১০৬৬ সালে উইলিয়াম দ্য কনকোয়ারের ইংল্যান্ড আক্রমণের সময় থেকে শুরু হয়। তবে এর আগে থেকেই ওই অঞ্চলে বিস্তৃত বিভিন্ন রাজ্য ও রাজত্বের সঙ্গে তাদের মিত্রতাও ছিল।
রাজপরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান হলেও রানী এলিজাবেথ ও সিংহাসনের উত্তরাধিকারী যুবরাজ প্রিন্স চার্লসের রাজতন্ত্রের প্রতি আনুগত্যকে শ্রদ্ধার চোখে দেখেন হিলারি ম্যান্টেল। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘আমি মনে করি, একজনের পক্ষে যতটা সম্ভব তারা ততটাই ভালো করছেন, একজনের পক্ষে (রাজকার্য) যতটা গুরুত্বসহকারে নেওয়া সম্ভব, ততটাই নিয়েছেন।’
রাজতন্ত্র আর কতদিন টিকে থাকবে- এমন প্রশ্নের উত্তরে ৬৯ বছর বয়সী হিলারি ম্যান্টেল বলেন, ‘আমার হিসাবে আর মাত্র দুই প্রজন্ম।’ তবে তিনি এ-ও বলেন, ‘আধুনিক বিশ্বে যখন মানুষকে শুধু সেলিব্রেটি হিসেবে দেখা হয়, তখন রাজতন্ত্রের অন্তরালে কী চিন্তাভাবনা চলছে, তা বোঝা খুব কঠিন।’ খবর রয়টার্সের।
সূত্রঃ সমকাল।
তারিখঃ সেপ্টম্বর ১৩, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,