যাঁরা নিয়মিতভাবে প্রচুর কেনাকাটা ও ঘোরাঘুরি করতেন, তাঁরা খরচের হাত গুটিয়ে রেখেছেন। প্রবাসীরা পর্যাপ্ত পরিমাণে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় পাঠাচ্ছেন। তাঁদের পাঠানো ডলার ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে কিনে নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বিপরীতে নগদ টাকা দিচ্ছে। এভাবে ব্যাংকগুলোতে গচ্ছিত নগদ টাকার পরিমাণ বাড়ছে। আমানতের সুদহার কম হলেও সব টাকাই বিভিন্ন ব্যাংকে জমা হচ্ছে।
কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি প্রণোদনার বাইরে ব্যাংকগুলোর তেমন ঋণ বিতরণ হচ্ছে না। কারণ, ব্যবসায়ীরা নতুন বিনিয়োগে যাচ্ছেন না। তাঁরা অনুকূল সময়ের অপেক্ষায় আছেন। ফলে ব্যাংকগুলোতে অলস তারল্যের পরিমাণ বেড়েই চলেছে।
ব্যাংকগুলো এখন জমতে থাকা টাকা সরকারের বিভিন্ন বন্ড ও অন্যান্য ব্যাংকের বন্ডে বিনিয়োগ করে আমানতের খরচ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে সেখানেও চাহিদামতো বিনিয়োগ করতে পারছে না। ঋণের চাহিদা না থাকায় অনেক ব্যাংক ঋণের সুদহার কমিয়ে ৭ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। যদিও সুদের হার কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণের সুদ সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল। আবার অনেক ব্যাংক ঋণের সুদ কমানোর পাশাপাশি আমানতের সুদহারও কমিয়ে আড়াই শতাংশ করেছে। এতে সুদ আয়ের ওপর নির্ভরশীল আমানতকারীদের খরচ মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ব্যাংকগুলোও তারল্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কঠিন সময় পার করছে।
ব্যাংকাররা বলছেন, করোনার কারণেই ব্যাংক খাতে উপচে পড়া তারল্য পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অর্থনীতির গতি যে শ্লথ হয়ে পড়েছে, এটা তারই ইঙ্গিত। দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
জানতে চাইলে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল কাশেম মো. শিরিন প্রথম আলোকে বলেন, সারা বিশ্বে চাহিদা না বাড়লে এই পরিস্থিতি ঠিক হবে না। চাহিদা বাড়লেই কেবল নতুন প্রকল্প হবে, নতুন ঋণ বিতরণ হবে। তখন আমানতের সুদও বাড়বে।
নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোকে গ্রাহকের গচ্ছিত আমানত থেকে ১৭ শতাংশ পরিমাণ অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সিআরআর (নগদ জমা) ও এসএলআর (সংবিধিবদ্ধ জমা) হিসেবে রাখতে হয়। বাকি টাকা ঋণ দিতে পারে ব্যাংকগুলো। ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে এই হার সাড়ে ৯ শতাংশ।
সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: জুলাই ০৭, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,