02/24/2013
বেশি কথা বলা !!
নারীর মস্তিষ্কে বিশেষ ‘ল্যাঙ্গুয়েজ প্রোটিন’ বেশি পরিমাণে থাকে। এ জন্য তারা পুরুষের তুলনায় বেশি কথা বলে। যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ুবিজ্ঞান ও মনস্তত্ত্ব গবেষকেরা এ তথ্য জানিয়েছেন, আর এ এটিকে খবর হিসাবে আজ ছাপিয়ছেন প্রথম আলো।
বিষয়টি আমার কাছে বেশ ভালো মনে হল। মনে হল, নারীরাই অনেক মানসিক জটিল বিষয়কে সরল করে দেয় বেশি কথা বলে।
ধরা যাক, ট্রেনে চেপে লম্বা একটি যাত্রা পথে চলেছি, আমি ট্রেনের জানালার পাশে আর আমর সম্মুখে অপর জানালার পাশে একজন তরুণী মুখোমুখি বসা। নারীর মস্তিষ্কে যদি বিশেষ ‘ল্যাঙ্গুয়েজ প্রোটিন’ বেশি পরিমাণে থাকে সেই কারণে যদি নারীরা বেশি কথা বলে তবে তো আমার সামনে বসা তরুনীটি আমার সাথে বেশি বেশি কথা বলার কথা।
ধরা যাক, তরুনীটিও জানে প্রায় দশ ঘন্টা ট্রেনে একই অবস্থানে বসে থাকতে হবে, আর তরুনীটির সামনে বসা আমিও প্রায় দশ ঘন্টা বসে থাকব। জার্নাল অব নিউরোসায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, নারীর মস্তিষ্কে ফক্সপিটু নামের ‘ল্যাঙ্গুয়েজ প্রোটিন’ বেশি থাকে। নারীরা প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার শব্দ উচ্চারণ করে। এ সংখ্যা পুরুষের তুলনায় অন্তত ১৩ হাজার বেশি। অর্থাৎ আমি ৭টি শব্দ উচ্চারণ করলে তরুনীটি উচ্চারণ করবে ২০টি। তরুনীটির সামনে আমি প্রায় দশ ঘন্টা বসে থাকব আথচ তাঁর সাথে একটিও কথা হবে না এটা একটি ব্যর্থ ভ্রমন কাহিনী হওয়ারই কথা।
এটা খুবই স্বাভাবিক যে, তরুণীটি আমার সম্পর্কে নানান কথা ভাবেত শুরু করেছেন !! যেমন আমি বিবাহিত কিনা, কয় সন্তানের জনক, নাকি এখনও শিক্ষা জীবনে বলবদ আছে, নাকি চাকুরী !! নাকি ব্যবসায়!!, নাকি স্ত্রীর টানে ট্রেনে চেপে বসেছি। যাত্রা পথে কোন গন্ডগোল বেঁধে গেলে আমি তাঁকে সাহায্য করব কিনা বা ভারি ব্যাগটি নামানোর সময় সাহায্য করব কিনা !!
তরুণীটিকে নানান ভাবে আমিও ভাবতে শুরু করেছি, ঝিক ঝিক করে এর মধ্যে নানান ষ্টেশনের মধ্যে দিয়ে ট্রেন ছুটে চলেছে, পড়নে শাড়ি পড়া থাকলে তরুণীটিকে নিয়ে কৌতহল হয়তো অনেক কমে আসত, একে বারে সামনে বসা অথচ কথা না বলা এমন এক তরুণীকে নিয়ে কোন পুরুষের কৌতহল কম হবে, নানান ভাবনার গাঁথুনি গাঁথা হবে না এমনটি আমার বিশ্বাসে আসে না। তরুণীটিকে নিয়ে নানান কৌতহলের মাঝে ভাবতে সে প্রতি মিনিটে মিনিটে বড় সুন্দরী হয়ে আসছিল আমার কাছে। কেমন যেন একটি শক্তি আমার মধ্যে প্রবেশ করে যাচ্ছে, নিজেকে বেশ মেধাবী, বিত্তশালী একজন সাহসী আর যোদ্ধা যোদ্ধা মনে হচ্ছে আর সেই সাথে নিজে বড় পরিপাটি আর বিনয়ী ধরণের হয়ে যাচ্ছিলাম আর মাথায় খেলা করে যাচ্ছিল এই বুঝি কোন ছলে বা কথা বা ঘটনার ছল ধরে আমার সাথে কথা বলা শুরু করে দিবে।
নানান ভাবনার মধ্যে থেকে এমনি করে কোন কথা বিনিময় না হয়ে প্রায় পাঁচ ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে গেল, আর বাকি পথ উভয়ের মধ্যে কোন কথা হবে কিনা তাও আমার জানা নাই, আমাকে হয়তো তরুণীটি একজন সন্ত্রাসী, একজন নিচুমানের পুরুষ বা একজন পশু মনের পুরুষ বা একজন যুদ্ধাপরাধীর বংশধরও ভাবতে পারে। তবে চুপচাপ পাশাপাশি বসা আমাদের মধ্যে নানান কথা হলে আমাদের মধ্যে আমাদের অবস্থান পরিস্কার হত সত্যিই আমি সু-পুরুষ কিনা বা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান কিনা !!
নারী বেশি কথা বলুক আর পুরুষ বেশি বা কম বলুক !! নারী আগে কথা বলুক আর পুরুষ বলুক – এটি কোন বড় বিষয় না, কথা বন্ধ না রেখে খোলা মেলা কথা বলা উচিত ভ্রমনে, পাশাপাশি থেকে, একই কাতারে, একই মন্চে একই সারিতে যখন আমারা থাকি। বরং কথা বন্ধ রেখেই জীবনকে, আমাদের সামনে চলাকে আমরাই করেছি জটিল।
রেটিং করুনঃ ,