Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

বেনিতো মুসোলিনির আদর্শের পথে কি ইতালির জর্জিয়া মেলোনি (২০২২)

Share on Facebook

লেখক:জ্যান ভার্নার ম্যুলার।

ফ্যাসিস্ট নেতা বেনিতো মুসোলিনির রোম অভিমুখে যাত্রা এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রী পদে তাঁর আরোহণের ঠিক এক শতাব্দী পরে ইতালিতে জর্জিয়া মেলোনি নামের এমন একজন রাজনীতিবিদ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন, যাঁর রাজনৈতিক দলটির আদর্শিক শিকড় দেশটির আদি ফ্যাসিস্ট দলের আদর্শে প্রোথিত। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, আমরা কি তাহলে ১৯২২ সালের পর ইতালির বাইরেও ছড়িয়ে পড়া মৃদু ফ্যাসিবাদের প্রত্যাবর্তন দেখতে পাচ্ছি?

যদিও এ প্রশ্ন করার মধ্যে কোনো ভুল নেই, তারপরও কট্টর দক্ষিণপন্থী নেতারা আমাদের এ প্রশ্ন করাকেই অযৌক্তিক প্রমাণের উদ্দেশ্যে বলে বসতে পারেন, সমালোচনকারীরা বরাবরই বাড়িয়ে বলেন এবং তাঁরা মেলোনির প্রধানমন্ত্রী হওয়াকে অতিরঞ্জিত চেহারা দিয়ে ফ্যাসিবাদের জয় হিসেবে দেখাতে চাইছেন; এটি অবশ্যই গণতন্ত্রের হুমকিকে বাড়িয়ে দিচ্ছে।

আগেই যেটি অনুমান করা হয়েছিল, ঠিক সেভাবেই মেলোনি পার্লামেন্টে দেওয়া তাঁর প্রথম বক্তৃতায় ফ্যাসিবাদ থেকে নিজের অবস্থানকে দূরবর্তী রাখতে অনেক কায়দা–কসরত করছিলেন।

তবে আজকের দিনের আধুনিক ফ্যাসিবাদের প্রশ্নটি মাথায় রেখে সবাইকে মনে রাখতে হবে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফ্যাসিবাদও ভিন্ন ভিন্ন ধাপ পার হয়ে ভিন্ন ভিন্ন চেহারা নিয়ে আমাদের সামনে এসেছে।

এ কথা ঠিক যে আজকের দিনে ইউরোপে বা আমেরিকায় সরাসরি কোনো ফ্যাসিবাদী শাসন নেই। তবে সেখানে অবশ্যই এমন কিছু দল আছে (যে দলগুলোর কোনোটি ক্ষমতাসীনও আছে), যেগুলো আদর্শিক দিক থেকে ফ্যাসিবাদকে অনুসরণ করে এবং ধীরে ধীরে একপর্যায়ে তারা কট্টর ফ্যাসিবাদী দিকে চলে যেতে পারে।

যেকোনো রাজনৈতিক বিশ্বাস-ব্যবস্থার মতো ফ্যাসিবাদও বিবর্তিত হয় বলে ধরে নেওয়া যায়। আজ আমরা যে লিবারেলিজম বা উদারনৈতিকতাবাদ দেখছি, তা ১০০ বছর আগে এমন আদলে ছিল না।

একইভাবে রক্ষণশীলতা আগেকার মতো এখন ‘আর কট্টর প্রতিক্রিয়াশীল’ কিংবা ‘গোঁড়া অবস্থান’কে বোঝায় না। এটি এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই মৌলিক মান স্বীকৃত হওয়াটাই এই ব্যবস্থাগুলোকে সংজ্ঞায়িত করে।

আধুনিক সমাজে সোজা কথায় বলা যায়, উদারপন্থীরা মুক্তি ও স্বাধীনতার কথা বলে। অন্যদিকে রক্ষণশীলেরা সামাজিক ব্যবস্থা ও মূল্যবোধের চটজলদি পরিবর্তনের মধ্যে বিপদের আশঙ্কা দেখে।

আর ফ্যাসিস্টরা? তারা সবাই জাতীয়তাবাদী, যারা জাতীয়তাবাদের পুনরুত্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে, অর্থাৎ তাদের ভাষায় দেশকে তারা ‘আবার মহান করার’ প্রত্যয় লালন করে থাকে। তবে সব জাতীয়তাবাদী কিন্তু ফ্যাসিস্ট নয় এবং তাদের মধ্যে অনেক রাজনীতিবিদ কোনো না কোনো ধরনের স্থানীয় ঐতিহ্য পুনর্জন্মের প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন। ঐতিহাসিকভাবে যা ফ্যাসিবাদীদের অন্যদের থেকে আলাদা করেছে তা হলো, তাদের সহিংস সংগ্রাম এবং সামরিক বীরত্বের গৌরব। তারা কঠোরভাবে লিঙ্গ, জাতীয় এবং জাতিগত শ্রেণিবিন্যাসেরও (হায়ারার্কি) প্রচার করে থাকে।

আজকের অতি ডানপন্থীরা নিঃসন্দেহে ঐতিহ্যবাহী লিঙ্গভেদ এবং সমাজের একেক মানুষের একেক অবস্থানের শ্রেণিবিন্যাস পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে থাকে। আদতে তাদের শক্তির মূল উৎস হলো বর্জনের রাজনীতি। তাদের মূল কথা হলো জাতির কাছে যারা বিদেশি বলে চিহ্নিত, তাদের অবশ্যই সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের নীতিনির্ধারণী অবস্থান থেকে দূরে রাখতে হবে, পাছে তারা শেষ পর্যন্ত প্রভাবশালীদের জায়গা দখল করে নিজেরাই সেখানে গেড়ে বসে।

তাদের বাইরে আরেকটি গ্রুপ আছে। তারা হচ্ছে ‘উদারপন্থী অভিজাত গোষ্ঠী’। উগ্র ডানপন্থী লোকজনকে অর্থাৎ ট্রাম্পের ভাষায় ‘রিয়েল পিপল; বা ‘প্রকৃত জনগণ’কে তারা নিজেদের লোক বলে মনে করে না।

শেষোক্ত শ্রেণিটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কথিত গণসংহতি থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। সেটিকে মুসোলিনি ‘ট্রেন্সোক্রেসি’ বলে প্রশংসা করেছিলেন। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর মুসোলিনির অনুসারীরা দেশের অভ্যন্তরে সহিংসতা চালিয়েছিল। একইভাবে হিটলারের উত্থান জার্মানিতে রক্তপিপাসু ডানপন্থী মিলিশিয়াদের জন্ম দিয়েছিল। এখন যে উগ্র জাতীয়তাবাদীরা রাজনৈতিক পরিবেশকে উত্তপ্ত করছে, তাদের একটি বড় অংশই প্রবীণ। তারা উদার সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন মানতে পারছে না, ভিনদেশিদের উড়ে এসে জুড়ে বসাকে মেনে নিতে পারছে না।

বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ রবার্ট প্যাক্সটন দেখিয়েছেন, ফ্যাসিবাদ বিভিন্ন চেহারা নিয়ে আসে। বিংশ শতাব্দীতে যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত গণতন্ত্রগুলোকে ফ্যাসিবাদী সহিংস অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মেরে ফেলা হয়েছিল, সেখানে একবিংশ শতাব্দীর গণতন্ত্রগুলোকে উচ্চাকাঙ্ক্ষী কর্তৃত্ববাদীদের কাছে নিগৃহীত হতে হচ্ছে। এখনকার কর্তৃত্ববাদীরা এমন সূক্ষ্ম আইনের কারসাজি করেন, যার ফলে তাঁদের অপসারণ করা কার্যত অসম্ভব হয়ে ওঠে।

ফ্যাসিবাদ সহিংসতাকে মহিমান্বিত করলেও ফ্যাসিবাদীদের সব সময়ই লক্ষ্য অর্জনের জন্য সহিংসতায় জড়িত হতে হয়নি। মুসোলিনি নিজে রোমের দিকে অগ্রসর হননি। ইতালির রাজা এবং ঐতিহ্যবাহী অভিজাতরা তঁাকে ক্ষমতা হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে তিনি মিলান থেকে স্লিপার গাড়িতে করে গিয়েছিলেন। ক্ষমতাসীনেরা মুসোলিনির হাতে ক্ষমতা দিতে চেয়েছিলেন এই আশায় যে তিনি এমন একটি রাজনৈতিক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিকে সামাল দিতে পারবেন, যা আর কারও পক্ষে সম্ভব হবে না।

মুসোলিনি ইতালির গণতন্ত্রের কাঠামোর মধ্যে বছরের পর বছর শাসন করেছিলেন। এমনকি তাঁর মন্ত্রিসভায় প্রচুর স্বঘোষিত উদারপন্থীও ছিলেন। তিনি যে শাসনপদ্ধতিতে সরকার চালিয়েছিলেন, তাকে আজ প্রায়ই ‘অটোক্রেটিক লিগালিজম’ বা ‘স্বৈরতান্ত্রিক বৈধতাবাদ’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়।

এটা অনেকে ভুলে গেছে, মুসোলিনি ইতালির গণতন্ত্রের কাঠামোর মধ্যে বছরের পর বছর শাসন করেছিলেন। এমনকি তাঁর মন্ত্রিসভায় প্রচুর স্বঘোষিত উদারপন্থীও ছিলেন। তিনি যে শাসনপদ্ধতিতে সরকার চালিয়েছিলেন, তাকে আজ প্রায়ই ‘অটোক্রেটিক লিগালিজম’ বা ‘স্বৈরতান্ত্রিক বৈধতাবাদ’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়।

তিনি আইনের ভাষাকে অনুসরণ করতেন কিন্তু আইনের ‘স্পিরিট’ বা ‘চেতনা’কে লঙ্ঘন করতেন। তিনি এমনভাবে আইন প্রণয়ন করেছিলেন, যা পদ্ধতিগতভাবে সঠিক ছিল কিন্তু প্রায়োগিক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছিল সেটি আইনের শাসন নয়, বরং ব্যক্তির শাসনকে নিশ্চিত করছে।আজকের আধুনিক ফ্যাসিবাদীরা ঠিক সেই পদ্ধতি অনুসরণ করছে।

স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট, ইংরেজি থেকে অনূদিত

*****জ্যান ভার্নার ম্যুলার প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির রাজনীতি বিষয়ের অধ্যাপক এবং সম্প্রতি প্রকাশিত ডেমোক্রেসি রুলস বইয়ের লেখক।

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:নভেম্বর ১০, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ