১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো হত্যাকাণ্ড এখনো রহস্যই রয়ে গেছে। পাকিস্তানের ‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’ পত্রিকার অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর রাওয়ালপিন্ডির লিয়াকত বাগে নির্বাচনী সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বেনজির ভুট্টো। আজ সোমবার এ হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পূর্ণ হলো।
১৪ বছরেও এই হত্যার রহস্য উন্মোচন করা যায়নি। হত্যাকাণ্ডের মূল হোতারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
মামলাটি এখন লাহোর হাইকোর্টের রাওয়ালপিন্ডি বেঞ্চে বিচারাধীন।
হামলার ঘটনায় বেনজির ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) ২০ জন নেতা-কর্মী নিহত হন, আহত হন প্রায় ৭০ জন।
বেনজির ভুট্টো হত্যার ঘটনায় চারটি তদন্ত হয়। তদন্তকারীদের মধ্যে ছিল পুলিশের যৌথ তদন্ত দল (জেআইটি), কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফআইএ), জাতিসংঘ (ইউএন) ও স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। তারা হত্যার রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা করলেও কোনো ফল আসেনি।
মামলায় মোট ১২টি নথি দাখিল করা হয়, ৩৫৫টি হাজিরা রেকর্ড করা হয়। ১০ জন বিচারক পরিবর্তিত হন। ৬৮ জন প্রসিকিউশন সাক্ষীসহ মোট ১৪১ জন সাক্ষ্য দেন।
মামলায় ১৬ জনকে আসামি করা হয়, তাঁদের মধ্যে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
হত্যার প্রধান অভিযুক্ত তালেবান কমান্ডার বায়তুল্লাহ মেহসুদ ড্রোন হামলায় নিহত হন।
অন্য পাঁচ অভিযুক্ত নাদির খান, নাসরুল্লাহ, আবদুল্লাহ, ইকরামুল্লাহ, ফয়েজ মুহাম্মদ কাসকাত বিভিন্ন স্থানে গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে এনকাউন্টারে নিহত হন।
বেনজির ভুট্টোর ওপর আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীর নাম সাঈদ, তিনি বিস্ফোরণে নিহত হন।
পুলিশ পাঁচজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা হলেন আইতজাজ শাহ, শের জামান, রশিদ আহমেদ, রাফাকাত ও হাসনাইন গুল।
পরে এফআইএ এই মামলায় সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মোশাররফ, সাবেক সিটি পুলিশ অফিসার সৌদ আজিজ ও পুলিশ সুপার রাওয়াল খুররম শেহজাদকে আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করে। যদিও পরে তাঁরা হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।
২০১৭ সালের ৩১ আগস্ট বিশেষ সন্ত্রাসবিরোধী আদালতের (এটিসি) বিচারক মুহাম্মদ আসগর খান রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে পাঁচ আসামিকে খালাস দেন বিচারক। পারভেজ মোশাররফকে পলাতক ঘোষণা করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে স্থায়ী গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ করা হয়।
প্রমাণ ধ্বংস ও নিরাপত্তা ভঙ্গের দায়ে পুলিশ কর্মকর্তা সৌদ আজিজ ও খুররম শেহজাদকে ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া তাঁদের প্রত্যেককে ১০ লাখ রুপি করে জরিমানা করা হয়।
তবে তিন মাস পর হাইকোর্ট এ সাজা স্থগিত করে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেন।
অভিযুক্ত ও বাদীর আপিল চার বছরের বেশি সময় ধরে লাহোর হাইকোর্টের রাওয়ালপিন্ডি বেঞ্চে বিচারাধীন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে হাইকোর্টে এ মামলার শুনানি হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ ডিসেম্বর ২৭, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,