সরকারের দেওয়া প্রতিবেদনে শর্ত পূরণের দাবি। ওদিকে আরেকটি পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর অনুরোধ সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির।
বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির বার্ষিক সাধারণ সভা ১৬ জুলাই চীনে শুরু হয়েছে। চলবে ৩০ জুলাই পর্যন্ত।
১৯৯৭ সালে ইউনেসকো সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেয়। আশপাশে কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র এই স্বীকৃতি ঝুঁকিতে ফেলেছে।
সুন্দরবন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় থাকবে কি না, সে সিদ্ধান্ত আগামী বছর নেওয়ার সুপারিশ করেছে জাতিসংঘের বিজ্ঞান, শিক্ষা ও ঐতিহ্যবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর বিশেষজ্ঞ কমিটি। তবে এই সুপারিশ গ্রহণ করা হবে কি না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৪৪তম বার্ষিক সাধারণ সভায়। তবে সাধারণত বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হয়।
সভাটি ১৬ জুলাই চীনের ফুজোউ শহরে শুরু হয়েছে। চলবে ৩০ জুলাই পর্যন্ত। এর আগে ২০১৯ সালে কমিটির ৪৩তম সাধারণ সভায় সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় রাখতে ৯টি শর্ত দেওয়া হয়েছিল। সেই শর্তগুলো কতটা পূরণ করা হয়েছে, তা পর্যালোচনা করে এবারের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল।
আশঙ্কা ছিল, বাংলাদেশ শর্তগুলো পূরণ না করলে সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্য বা লাল তালিকাভুক্ত করা হবে। তবে বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ইউনেসকোর কমিটির কাছে শর্ত পূরণ নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বেশ কিছু শর্ত পূরণ করেছে এবং বাকি শর্ত পূরণের কাজ করোনা পরিস্থিতির কারণে বিলম্বিত হয়েছে।
সবকিছু বিবেচনা করে ইউনেসকোর বিশেষজ্ঞ কমিটি তাদের খসড়া প্রস্তাবে এ বছর সিদ্ধান্ত না নেওয়ার সুপারিশ করে বলেছে, আগামী সম্মেলনের আগে বাংলাদেশকে তার অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে। উল্লেখ্য, আগামী সম্মেলন হবে ২০২২ সালের জুলাইয়ে। বাংলাদেশকে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে আগামী বছর ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে।
ইউনেসকোর সঙ্গে সুন্দরবন বিষয়ে বাংলাদেশের যে দলটি কাজ করছে, তার অন্যতম সদস্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ইউনেসকোর সব শর্ত পূরণ করছি। উল্টো শর্তের বাইরেও সুন্দরবন রক্ষায় অনেকগুলো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করি, আমাদের গর্ব এই বন নিয়ে কোনো ভুল সিদ্ধান্ত হবে না।’
ইউনেসকো ১৯৯৭ সালে সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেয়। তবে বনের আশপাশে কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রসহ নানা স্থাপনা নির্মাণের কারণে সুন্দরবনের ওই তালিকায় থাকা ঝুঁকিতে ফেলেছে।
সবকিছু বিবেচনা করে ইউনেসকোর বিশেষজ্ঞ কমিটি তাদের খসড়া প্রস্তাবে এ বছর সিদ্ধান্ত না নেওয়ার সুপারিশ করে বলেছে, আগামী সম্মেলনের আগে বাংলাদেশকে তার অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে। উল্লেখ্য, আগামী সম্মেলন হবে ২০২২ সালের জুলাইয়ে। বাংলাদেশকে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে আগামী বছর ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে।
ইউনেসকোর সঙ্গে সুন্দরবন বিষয়ে বাংলাদেশের যে দলটি কাজ করছে, তার অন্যতম সদস্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ইউনেসকোর সব শর্ত পূরণ করছি। উল্টো শর্তের বাইরেও সুন্দরবন রক্ষায় অনেকগুলো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করি, আমাদের গর্ব এই বন নিয়ে কোনো ভুল সিদ্ধান্ত হবে না।’
ইউনেসকো ১৯৯৭ সালে সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেয়। তবে বনের আশপাশে কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রসহ নানা স্থাপনা নির্মাণের কারণে সুন্দরবনের ওই তালিকায় থাকা ঝুঁকিতে ফেলেছে।
জাতীয় কমিটির চিঠিতে সমীক্ষার দায়িত্ব পাওয়া প্রতিষ্ঠান সিইজিআইএস নিয়েও আপত্তি তোলা হয়। বলা হয়, এটি কোনো নিরপেক্ষ ও স্বাধীন প্রতিষ্ঠান নয়। বরং সরকারেরই একটি প্রতিষ্ঠান। সংস্থাটি ২০১০ সালে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা (ইআইএ) করেছিল। সমীক্ষাটি ছিল অত্যন্ত নিম্নমানের। বাংলাদেশের পরিবেশ আইন অনুযায়ী সব পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা সিইজিআইএসের ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত করার শর্ত থাকলেও তা পূরণ করা হয়নি উল্লেখ করে জাতীয় কমিটির চিঠিতে বলা হয়, এমন প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে এসইএ করানো বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির শর্তের লঙ্ঘন।
সিইজিআইএস পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান। পদাধিকারবলে এর চেয়ারম্যান হন মন্ত্রণালয়ের সচিব। জাতীয় কমিটির অভিযোগ, সরকার বিতর্কিত প্রকল্পগুলোর পরিবেশগত সমীক্ষা এই সংস্থাকে দিয়ে করিয়ে নেয়।
অবশ্য সিইজিআইএসের নির্বাহী পরিচালক মালিক ফিদা আবদুল্লাহ খান অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক মান ও নিয়ম অনুসরণ করে এসইএ করছি। আর রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ তালতলি ও কুয়াকাটা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইআইএ করে আমরা সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছি। সমীক্ষাগুলোতে কোনো নিয়ম লঙ্ঘন ও ভুল তথ্য নেই।’
ইউনেসকোকে দেওয়া চিঠিতে জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, রামপাল কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বের হওয়া নাইট্রোজেন অক্সাইড, পারদ, কারসিওজেনিক ডাইঅক্সিন, কয়লার বিষাক্ত ছাইসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী জোয়ার-ভাটা এলাকায় ফেলা হবে, যা ভেসে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীতে গিয়ে পড়বে। এতে সুন্দরবনের গুরুতর ক্ষতি হবে।
সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক সুলতানা কামাল বলেন, ‘আমরা বিশ্বের খ্যাতনামা বিদ্যুৎকেন্দ্র ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের দিয়ে গবেষণা করিয়ে তা সরকারের কাছে তুলে ধরেছি। কিন্তু সরকার আমাদের গবেষণার ফলাফল আমলে নেয়নি। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ চলছেই।’
লেখক: ইফতেখার মাহমুদ
সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: জুলাই ১৮, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,