গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচন, নারী শিক্ষা, শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণে অনেক এগিয়ে গেলেও নারী-পুরুষ সমতা নিশ্চিত করতে যেসব সংস্কার প্রয়োজন, সেসব সংস্কার বাস্তবায়নে পিছিয়ে আছে। সে জন্য বিশ্বব্যাংকের ‘উইমেন, বিজনেস অ্যান্ড দ্য ল ২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুসারে, নারী-পুরুষ সমতার ক্ষেত্রে বিশ্বের ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৪।
চলাচলের স্বাধীনতা, কর্মক্ষেত্র, বেতন, বিবাহ, অভিভাবকত্ব, উদ্যোক্তা, সম্পদ ও পেনশন—এই আটটি সূচকের ওপর ৩৫টি প্রশ্নের ভিত্তিতে এই স্কোর নির্ণয় করা হয়েছে। তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৪তম; স্কোর ১০০-এর মধ্যে অর্ধেকের কম, ৪৯ দশমিক ৪। ২০২১ সালেও বাংলাদেশের স্কোর একই ছিল।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এই স্কোর ছিল ৩৫। সেই হিসাবে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও আর্থিক সুযোগের সমতায় বাংলাদেশের নারীদের অবস্থানে খুব বেশি পরিবর্তন আসেনি।
বাংলাদেশের উন্নয়নে নারীদের ভূমিকার কথা অর্থনীতিবিদেরা বরাবরই প্রশংসা করেন। বিশ্বব্যাংকের এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নারীরা পুরুষের মতো সুযোগ পেলে শ্রমশক্তিতে তাঁদের অংশগ্রহণ বাড়বে। এতে অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে। আর নারী-পুরুষের আইনি সমতা থাকলে উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হয়।
বিজ্ঞাপন
৩৮ দশমিক ১ স্কোর নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের চেয়ে খারাপ অবস্থানে আছে একমাত্র আফগানিস্তান। দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের গড় স্কোর রেকর্ড করা হয়েছে ৬৩ দশমিক ৭। এই অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে নেপাল, তাদের স্কোর ৮০ দশমিক ৬।
একমাত্র নারীদের চলাচলের স্বাধীনতা সূচকে শত ভাগ স্কোর করেছে বাংলাদেশ। আর কোনো সূচকে ৮০-এর বেশি স্কোর করতে পারেনি।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ৭৫। নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে ওঠার সূচকে এই স্কোর পেয়েছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি এ বিষয়ে সরকারের কিছু সিদ্ধান্তে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে।
বাংলাদেশ সবচেয়ে খারাপ করেছে অভিভাবকত্ব সূচকে। এই সূচকে স্কোর ছিল মাত্র ২০। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে উন্নতি করতে পরামর্শ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
এ জন্য সরকারি উদ্যোগে দেশের নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ শত ভাগ আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি পিতৃত্বকালীন ছুটি বেতনসহ মঞ্জুর করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অন্তঃসত্ত্বা নারী কর্মীদের চাকরি থেকে বরখাস্ত না করার জন্য বলেছে বিশ্বব্যাংক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ৮৬টি দেশের নারীরা চাকরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়ে থাকেন। আর ৯৫টি দেশে একই কাজের জন্য পুরুষের চেয়ে কম মজুরি পান নারীরা।
তবে বাংলাদেশে ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে (জরিপের সময়) এ-সংক্রান্ত আইনের সংস্কার হয়নি।
সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ মার্চ ০৫, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,