Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

বিবিসির বিশ্লেষণ-শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে বিপর্যয়, যে ছয়টি কারণে এই দুর্দশা (২০২২)

Share on Facebook

চরম এক সংকটকাল অতিক্রম করছে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। দেশটিতে এখন শুধু হাহাকার। জ্বালানী তেল এবং খাদ্য কেনার জন্য উর্ধ্বশ্বাসে ছুটছে সাধারণ মানুষ। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে কখনো এতোটা দুরাবস্থায় পড়েনি দেশটি। বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র সংকট বেসামাল করে তুলেছে দ্বীপরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে।

বৈদেশিক ঋণের ভারে জর্জরিত শ্রীলঙ্কা। পরিস্থিতি এমন অবস্থায় ঠেকেছে যে তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারছে না। জিনিসপত্রের দাম এখন আকাশছোঁয়া। কাগজের অভাবে দেশটির স্কুল পর্যায়ের পরীক্ষা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। কারণ, কাগজ আমদানি করার মতো বৈদেশিক মুদ্রা তাদের কাছে নেই।

জ্বালানী তেলের তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে দেশটিতে। তেল সংগ্রহের জন্য হাজার-হাজার মানুষ লাইনে ভিড় করেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশের পেট্রোল পাম্পগুলোতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে দেশটির সরকার। কারণ, জ্বালানী তেল আমদানি করার জন্য বৈদেশিক মুদ্রা নেই শ্রীলঙ্কার কাছে।

ইরানের কাছ থেকে জ্বালানী তেল আমদানি বাবদ আড়াইশ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। এর বিনিময়ে প্রতিমাসে পাঁচ মিলিয়ন ডলারের চা ইরানে রপ্তানি করবে শ্রীলঙ্কা। এভাবে ধীরে ধীরে সে টাকা পরিশোধ করা হবে।

দেশটির বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন উৎস থেকে শ্রীলঙ্কা ঋণ নিয়েছে। বিপুল অর্থ খরচ করা হলেও অনেক প্রকল্প অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হয়নি।

লম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক শ্রিমাল আবিরত্নে বলেন, কিছু বড় বড় প্রকল্প শ্রীলঙ্কার জন্য ‘শ্বেতহস্তীতে’ রূপান্তরিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হাম্বানটোটা সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দর।

ঋণের ভারে জর্জরিত

শ্রীলঙ্কার এ সমস্যা রাতারাতি তৈরি হয়নি। গত ১৫ বছর ধরে এ সমস্যা পুঞ্জীভূত হয়েছে। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে দেদারছে ঋণ নিয়েছে শ্রীলংকার বিভিন্ন সরকার। এর মধ্যে অন্যতম উৎস্য হচ্ছে সার্বভৌম বন্ড। ২০০৭ সাল থেকে দেশটির সরকার অর্থ জোগাড়ের জন্য সার্বভৌম বন্ড ইস্যু করেছে।

অর্থনীতিবিদরা বলেন, একটি দেশের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হলে এ ধরণের সার্বভৈৗম বন্ড বিক্রি করা হয়। আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজারে এ ধরণের বন্ড বিক্রি করে অর্থের জোগান দেয়া হয়। শ্রীলঙ্কা সেটাই করেছে। কিন্তু এই অর্থ কীভাবে পরিশোধ করা হবে সে ব্যাপারে খুব একটা চিন্তা-ভাবনা করেনি।

ঋণ পরিশোধে বেহাল অবস্থা

আন্তর্জাতিক সার্বভৈৗম বন্ড বাবদ শ্রীলঙ্কার ঋণ রয়েছে এখন সাড়ে বারো বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়া দেশীয় উৎস থেকেও সরকার ঋণ করেছে। সব মিলিয়ে চলতি বছর শ্রীলংকাকে প্রায় সাত বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এ সাত বিলিয়ন ডলার ঋণের মধ্যে বৈদেশিক ঋণ (আন্তর্জাতিক সার্বভৌম বন্ড) দেড় বিলিয়ন ডলার। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, চলতি বছর এসব ঋণ শোধ করতে পারবে না দেশটি।

কিন্তু শ্রীলংকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এসব ধারণা সঠিক নয়। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরো জানিয়েছে, গত দুই বছরে আন্তর্জাতিক সার্বভৌম বন্ড বাবদ যে ঋণ নেয়া হয়েছে সেখান থেকে আড়াই বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। সর্বশেষ জানুয়ারি মাসে পাঁচশ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে শ্রীলঙ্কা। ফলে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়েছে। যে কারণে দেশটি জ্বালানী তেল এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করতে পারছে না।

কর কমানো

দুই হাজার উনিশ সালের নভেম্বর মাসে ক্ষমতাসীন হবার পরে শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট দেশটিতে ভ্যাট এবং ট্যাক্স কমানোর সিদ্ধান্ত নেন। এ ধরণের পদক্ষেপে অনেক বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন। ভ্যাট প্রদানের হার ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আট শতাংশে আনা হয়। ভ্যাট-ট্যাক্স কমানোর মূল কারণ ছিল অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করা।

দুই হাজার নয় সালে শ্রীলংকায় গৃহযুদ্ধ শেষ হবার পরে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসে (বর্তমান প্রেসিডেন্টের ভাই) একই ধরণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এর ফলে তখন যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অর্থনীতিতে গতি এসেছিল। সে আলোকেই বর্তমান প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসেও একই পদক্ষেপ নেন। কিন্তু এর কয়েকমাসের মধ্যেই বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হয়।

ট্যাক্স কমানোর ফলে সরকারের আয় কমে যায়। আবার করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্যদিকে সরকারকে ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতাও মেনে চলতে হয়। সবমিলিয়ে প্রচন্ড চাপ তৈরি হয় অর্থনীতির উপর।

পর্যটন ও রেমিট্যান্স খাতের বিপর্যয়

শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে বিপর্যয়, যে ছয়টি কারণে এই দুর্দশায় বৈদেশিক মুদ্রার বড় জোগান আসে দেশটির পর্যটন খাত থেকে। করোনাভাইরাস মাহারির কারণে প্রায় দুই বছর পর্যটন শিল্পে কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকায় চরম সংকটে পড়েছে দেশটি। মহামারি শুরুর আগে শ্রীলংকায় সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসতো চীন থেকে। কিন্তু চীনে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ কঠোর থাকায় চীন থেকে পর্যটক আসতে পারেনি। এর ফলে দেশটির পর্যটন খাতে বিপর্যয় নেমে আসে।

অর্গানিক চাষে বিপর্যয়

দুই হাজার উনিশ সালে ক্ষমতাসীন হবার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে দেশে অর্গানিক কৃষি চালু করেন। সেজন্য কৃষিক্ষেত্রে রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। এর অংশ হিসেবে শ্রীলঙ্কায় সার আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল কৃষিক্ষেত্রে। এতে চালের উৎপাদন ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।

একসময় চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ শ্রীলংকা বাধ্য হয় ৪৫০মিলিয়ন ডলারের চাল আমদানি করতে। চালের দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। অর্গানিক কৃষির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল দেশটির চা উৎপাদনের ক্ষেত্রে। চা রপ্তানি করে শ্রীলংকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। সেখানেও বড় ধাক্কা লাগে।

কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে আনার জন্য সরকার ২০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়। দেশজুড়ে একই সাথে খাদ্যঘাটতিও প্রকট আকার ধারণ করে।

সংকট সামাল দেবার চেষ্টা

বর্তমান সংকট সামাল দিতে শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন বৈদেশিক মুদ্রা। সেজন্য অনেকের দ্বারস্থ হচ্ছে দেশটি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ-এর সাথে আলোচনা করছে দেশটি। আইএমএফ-এর কাছ থেকে ঋণ পেতে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত মুদ্রার অবমূল্যায়ন করেছে দেশটি। বর্তমানে মার্কিন এক ডলারের বিপরীতে শ্রীলঙ্কার ২৩০ রূপি। এছাড়া চীন ও ভারতের কাছে আরো ঋণের আবেদন করেছে শ্রীলঙ্কা।

জরুরি কিছু খাদ্য, ঔষধ এবং জ্বালানী কেনার জন্য গত সপ্তাহে ভারত শ্রীলঙ্কাকে এক বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে। যেভাবে শ্রীলংকার উপর ঋণের স্তুপ হয়েছে, সেখান থেকে সহসা দেশটি বেরিয়ে আসতে পারবে না বলে মনে করছেন দেশটির পর্যবেক্ষকরা।

সূত্র: সমকাল।
তারিখ: মার্চ ২৭, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ