Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

বিনিয়োগকারীর মুনাফায় হাত (২০২১)

Share on Facebook

লেখক: ফখরুল ইসলাম, ঢাকা।

সুদ ব্যয় বেশি হয়ে যাচ্ছে—এমন যুক্তি দিয়ে গতকাল সঞ্চয়পত্র ও বন্ডের মুনাফা কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।

২০১৫ সালের ২৩ মের পর গতকাল নতুন প্রজ্ঞাপন জারি হলো।

ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারণ হিসাব, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড এবং ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডের মুনাফার হার কমানো হয়নি।

সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর নির্ভর করে যাঁরা সংসার চালান, তাঁদের জন্য দুঃসংবাদই এটি। পাঁচটি সঞ্চয় কর্মসূচি ও একটি বন্ডে মুনাফার হার কমিয়ে দিয়েছে সরকার। প্রথমবারের মতো সরকার মুনাফার হারের আলাদা স্তরও করেছে। সঞ্চয় কর্মসূচির স্তর করেছে তিনটি, আর বন্ডের চারটি। সে অনুযায়ী কম টাকা বিনিয়োগকারীর মুনাফার হার বেশি, আর বেশি টাকা বিনিয়োগকারীর মুনাফার হার কম।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) গতকাল মঙ্গলবার এ নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। মুনাফার হার নিয়ে আগের প্রজ্ঞাপনটি জারি হয়েছিল ছয় বছর আগে অর্থাৎ ২০১৫ সালের ২৩ মে। নতুন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যাঁরা নতুন করে সঞ্চয়পত্র কিনবেন, শুধু তাঁদের জন্য পরিবর্তিত হার কার্যকর হবে।

সঞ্চয়পত্রের গ্রাহক অবসরপ্রাপ্ত অনারারি ক্যাপ্টেন এমদাদুল হক মৃধা এই সিদ্ধান্ত বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ ও সংসার চালাতে এমনিতেই কষ্ট হয়। কোভিড-১৯ কষ্ট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কোভিড পুরোপুরি চলে যাওয়ার পর সরকার সিদ্ধান্তটি নিতে পারত। নতুন প্রজ্ঞাপনে অবসরভোগী, নারী ও মধ্যবিত্তের আয় কমবে।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এক রকম হার, ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এক রকম হার এবং ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরেক রকম হার করা হয়েছে। তবে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার হারে সরকার হাত দেয়নি।

যে ছয় সঞ্চয় কর্মসূচির জন্য নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, তার মধ্যে চারটি হচ্ছে সঞ্চয়পত্র। এগুলো হচ্ছে পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, ৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র এবং পরিবার সঞ্চয়পত্র। এগুলোর মুনাফার হার কমানো হয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক-সাধারণ হিসাব ও ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক মেয়াদি হিসাব। এ দুটি হচ্ছে সঞ্চয় কর্মসূচি। সাধারণ হিসাবের সুদের হার আগেরটাই আছে। তবে মেয়াদি হিসাবেরটি কমানো হয়েছে।

আগের কেনা সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কেউ পুনর্বিনিয়োগ করলে তখন তার নতুন বিনিয়োগের অংশটুকুর ক্ষেত্রে নতুন মুনাফার হার কার্যকর হবে। শুধু ব্যক্তি নয়, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্যও প্রযোজ্য হবে নতুন এ মুনাফার হার। গতকাল প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার আগপর্যন্ত যাঁদের যে বিনিয়োগ আছে, তাঁরা আগের হারেই মুনাফা পেয়ে যাবেন।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, সঞ্চয়পত্রের বিক্রি যেভাবে বাড়ছিল, তাতে সরকারের ওপর ক্রমান্বয়ে চাপ সৃষ্টি হচ্ছিল। ব্যাংক খাতেও সুদের হার এখন কম। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে মনে হয় সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত ঠিক আছে। তবে অনেক অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর নির্ভরশীল। তাঁদের কথা চিন্তা করে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিদ্যমান মুনাফার হার বজায় রাখতে পারে সরকার।

এদিকে আইআরডি সূত্রে জানা গেছে, আইআরডি সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সম্প্রতি একটি সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে। এতে বলা হয়েছে, সঞ্চয়পত্রের মুনাফা দিতে গিয়ে সরকারের সুদ ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এতে অর্থনীতিতে তৈরি হচ্ছে ভারসাম্যহীনতা। সঞ্চয় কর্মসূচিতে অতিমাত্রায় বিনিয়োগ এবং বিনিয়োগের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি রোধ করা প্রয়োজন। আরও বলা হয়েছে, পাঁচ বছরে সরকারের সুদ ব্যয় দ্বিগুণ হয়ে গেলেও সঞ্চয় কর্মসূচির বিপরীতে এ ব্যয় হয়ে গেছে তিন গুণ। ভবিষ্যতে তা আরও বাড়বে।

জানতে চাইলে আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারের সুদ ব্যয় বেশি হয়ে যাচ্ছিল। আর স্বল্প আয়ের লোকেদের মুনাফার হারে হাত দেওয়া হয়নি।’ নতুন সিদ্ধান্তে মধ্যবিত্ত বিশেষ করে অবসরভোগীদের আয় তো কমে যাবে—এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, সার্বিক বিবেচনায় দেশের সুষ্ঠু অর্থনীতি বজায় রাখার স্বার্থে সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে।

পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র

এ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলে এত দিন মেয়াদ শেষে মুনাফা পাওয়া যেত ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ হারে। নতুন হার অনুযায়ী, যাঁরা ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত এ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করবেন, তাঁরা ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ হারেই মুনাফা পেয়ে যাবেন। ১৫ লাখ ১ টাকা থেকে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার হার হবে ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ, ৩০ লাখ ১ টাকা থেকে তার বেশি অঙ্কের ক্ষেত্রে ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ। সঞ্চয়পত্রের মোট বিক্রির ১৩ শতাংশ এটি থেকে আসে।

তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র

তিন বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে বর্তমানে মেয়াদ শেষে মুনাফার হার ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার হার একই থাকছে। ১৫ লাখ ১ টাকা থেকে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তা কমিয়ে করা হয়েছে ১০ শতাংশ, বিনিয়োগ ৩০ লাখ ১ টাকা থেকে বেশির ক্ষেত্রে মেয়াদ শেষে মুনাফা দেবে সরকার ৯ শতাংশ হারে।

পেনশনার সঞ্চয়পত্র

পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্রে মেয়াদ শেষে এত দিন ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ হারে মুনাফা পাওয়া যেত। ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও একই হার থাকছে। বিনিয়োগ ১৫ লাখ টাকার বেশির ক্ষেত্রে মুনাফা পাবেন ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে। আর ৩০ লাখ টাকার বেশির ক্ষেত্রে মুনাফার হার ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। সঞ্চয়পত্রের মোট বিক্রির ৭ শতাংশ পেনশনার সঞ্চয়পত্র থেকে আসে।

পরিবার সঞ্চয়পত্র

পাঁচ বছর মেয়াদি এই সঞ্চয়পত্রে মেয়াদ শেষে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ। ১৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ পর্যন্ত এ হার একই থাকছে। ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ হলেই মুনাফার হার হয়ে যাবে ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ। আর ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে হবে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ। সঞ্চয় অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে সরকার যে অর্থ সংগ্রহ করে, তার ২৫ শতাংশই আসে এ সঞ্চয়পত্র থেকে।

ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক

ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক মেয়াদি হিসাবে (তিন বছর) বর্তমানে মুনাফার হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে একই হার থাকছে। ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার হবে ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে হবে ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ। ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারণ হিসাবে বর্তমানে মুনাফার হার ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, এতে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।
বিজ্ঞাপন

ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড

প্রবাসীদের জন্য চালু থাকা পাঁচ বছর মেয়াদি ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ডের মুনাফার হারও কমিয়েছে সরকার। যাঁরা কাজের সুবাদে বা পারিবারিকভাবে বিদেশে অবস্থান করেন, তাঁরা এসব বন্ডে বিনিয়োগ করেন। আগের কেনা বন্ডে মেয়াদ পূর্তি না হওয়া পর্যন্ত আগের হারেই মুনাফা দেওয়া হবে। নতুন বিনিয়োগ করা বন্ড থেকে শুধু মুনাফা কমবে।

ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড পাঁচ বছর মেয়াদি। মেয়াদ শেষে এর মুনাফার হার ১২ শতাংশ ছিল এত দিন। এখন ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে মুনাফা ১২ শতাংশই থাকছে। ১৫ লাখ ১ টাকা থেকে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে তা ১১ শতাংশ। ৩০ লাখ ১ টাকা থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ১০ দশমিক শতাংশ। আর ৫০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মেয়াদ শেষে মুনাফার হার হবে ৯ শতাংশ।

প্রবাসীদের জন্য চালু তিন বছর মেয়াদি অন্য দুই বন্ড অর্থাৎ ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ডের ও ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডের মুনাফার হার কমানো হয়নি। বর্তমানে প্রিমিয়াম বন্ডে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ইনভেস্টমেন্ট বন্ডে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ মুনাফা দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদার গত রাতে প্রথম আলোকে এ নিয়ে বলেন, ‘এই সময়ে সরকারের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হয়নি। যাঁরা সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় চলেন, তাঁরা এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ সেপ্টম্বর ২২, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ