Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

বিদেশি সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ, পরিস্থিতি শান্ত মনে হলেও সংকট কেটে যায়নি (২০২৪)

Share on Facebook

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোসহ বিদেশি সব সংবাদমাধ্যম সতর্ক দৃষ্টি রেখেছে বাংলাদেশের দিকে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রতিদিন অসংখ্য রিপোর্টে সয়লাব ইন্টারনেট, ডিজিটাল সংস্করণ, টেলিভিশন চ্যানেলগুলো এবং সংশ্লিষ্ট মাধ্যমগুলোর অনলাইন। এসব প্রতিবেদনে তুলে ধরা হচ্ছে বাংলাদেশে পরিবর্তিত পরিস্থিতি। মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ। প্রতিবাদ বিক্ষোভ ছিল শান্তিপূর্ণ। এখন পরিস্থিতি শান্ত মনে হলেও আমি মনে করি সংকট কেটে যায়নি। বৃটেনের বিখ্যাত দ্য ইকোনমিস্ট ম্যাগাজিনে রিপোর্টের শিরোনাম- ‘শেখ হাসিনা ফেসেস হার বিগেস্ট ক্রাইসিস ইন ইয়ার্স’। প্রজেক্ট সিন্ডিকেটের সংবাদের শিরোনাম- ‘অ্যান আরব স্প্রিং ফর বাংলাদেশ?’। টিআরটি ওয়ার্ল্ডের সংবাদ শিরোনাম ‘বাংলাদেশ রেজেস’। আল জাজিরার শিরোনাম-‘বাংলাদেশ মিনিস্টার অন গভর্নমেন্টস রেসপন্স টু ডেডলি অ্যান্টি-কোটা’।

অন্যদিকে ডয়েচে ভেলের সংবাদ শিরোনাম- ‘বাংলাদেশ ডিপ্লোয়েস ইউএন-মার্কড ভেহিক্যালস টু কুয়েল স্টুডেন্টস প্রোটেস্ট’।

বিজ্ঞাপন
আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেছেন, তিনি সংকটের সময় ঢাকায় ছিলেন। ‘এক ভোরে দেখি প্রচুর মানুষ। মাথায় হেলমেট। হাতে বাঁশের লাঠি।’ বাংলাদেশ থেকে ফিরে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেছেন। ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতার মেয়াদে এই মাসে বাংলাদেশে যে ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে তা অপ্রত্যাশিত। সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ বিক্ষোভ বের করলে তা থেকে এই সংকট বৃদ্ধি পায়। পুলিশ এবং ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র বিষয়ক সংগঠনের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। তারা ঢাকার রাজপথ নিয়ন্ত্রণে নেয়। হামলা চালানো হয় রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে। অন্যদিকে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে প্রায় অর্ধেকে ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা। জবাবে সশস্ত্র সেনাদের নামায় সরকার। ২০শে জুলাই থেকে সারা দেশে কারফিউ জারি করে। দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় ইন্টারনেট সেবা। বাকি বিশ্ব থেকে ১৭ কোটি ১০ লাখ মানুষের এই দেশটিকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। ২৩শে জুলাই অবশ্য আংশিক ইন্টারনেট পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। ততক্ষণে ঢাকা শান্ত হয়ে এসেছে।
নিত্যপ্রয়োজনে দু’ঘণ্টার জন্য প্রথমদিকে প্রতিদিন শিথিল করা হয় কারফিউ। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই প্রায় ২০০ বিক্ষোভকারী এবং পথচারী নিহত হয়েছেন। এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। অনেকে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রীর ১৫ বছরের নিরবচ্ছিন্ন শাসনের এটাই সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। কয়েক দিনের সহিংসতায় কমপক্ষে ৬১ হাজার মানুষকে অভিযুক্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। এর বেশির ভাগই বিরোধী দলের। দেশে কোনো কিছু ঘটলেই তার সবকিছুর জন্য সরকার সব সময় তাদেরকে দায়ী করে। যোগাযোগ ও চলাচল বন্ধ করে রাখায় অর্থনীতি হুমকিতে পড়েছে। কিন্তু বিক্ষোভের নেপথ্যে শুধু ‘ক্রিমিনালদের’ ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছে সরকার। ফলে বর্তমান সরকারের ক্ষমতার ১৫ বছরে অবকাঠামো খাতে বড় বড় উন্নতি হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনে জালিয়াতি, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে হেয় করা এবং ক্ষমতাসীন দলের ও তার ব্যবসায়িক ঘনিষ্ঠদের মধ্যে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের। কেউ সমালোচনা করলে তাদেরকে শীর্ষ মহল থেকে অভিযুক্ত করা হয় ‘রাজাকার’ বলে। প্রাইভেটলি তার মিত্ররা পর্যন্ত স্বীকার করেন এক্ষেত্রে সরকার ভুল করছে। কিন্তু তা সরকার প্রধানের সামনে তুলে ধরার সাহস দেখাতে পারেন না কোনো মন্ত্রী। ওদিকে প্রজেক্ট সিন্ডিকেটের রিপোর্টে বলা হয়, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সরকারি চাকরিতে সমান সুযোগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সহিংস দমন-পীড়ন চালিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বিক্ষোভকে নিয়ন্ত্রণ করতে কর্তৃপক্ষ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়, কারফিউ আরোপ করে এবং ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। রাস্তায় টহল দিচ্ছে হাজারো পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য। এই সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৭০ জন।

বাংলাদেশের তরুণ সমাজের এই উত্থান, যাকে আরব বসন্তের সঙ্গে তুলনা করা যায়। এতে প্রতিফলিত হয় যে, কীভাবে দুর্নীতি, আত্মীয়করণ এবং অসমতা সৃষ্টি হয়েছে। এক্ষেত্রে শাসকগোষ্ঠী ক্রমশ কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে উঠেছে। এই রিপোর্টে আরও বলা হয়, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসেন আওয়ামী লীগের নেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু প্রতিশ্রুত কর্মসংস্থানে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে এটা সত্য গত দুই দশক ধরে বেসরকারি খাতে শ্রমশক্তির বিস্তার হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের সুবিধাও বৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু এই চাকরি এখন রাজনীতির বিষয় হয়ে উঠেছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়, কয়েক লাখ বেকার ও বেকার তরুণদের শ্রম বাজারে অঙ্গীভূত করা প্রয়োজন বাংলাদেশে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপক্ষে এক তৃতীয়াংশ গ্রাজুয়েট গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করার এক বা দুই বছর পরও বেকার। আরও খারাপ হলো বাংলাদেশের শতকরা প্রায় ৪০ ভাগ যুবক-যুবতী শিক্ষায়, চাকরিতে বা প্রশিক্ষণে নেই। বৈশ্বিক গড়ের দ্বিগুণ বাংলাদেশের এই সংখ্যা। টিআরটি ওয়ার্ল্ডে উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়ান পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ। প্রতিবাদ বিক্ষোভ ছিল শান্তিপূর্ণ। এখন পরিস্থিতি শান্ত মনে হলেও আমি মনে করি সংকট কেটে যায়নি। ওদিকে কলকাতার সংবাদ প্রতিদিনের রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সমর্থনে সেখানে ৪টি বাম ছাত্র সংগঠন বিক্ষোভ করেছে সম্প্রতি। তারা মিছিলে ‘লাল সেলাম, লাল সেলাম’ স্লোগান দেন। এআইডিএসও রাজ্য সভাপতি মণিশঙ্কর পট্টনায়েক বলেন, বাংলাদেশে নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক দাবি, ভারতবর্ষের ছাত্রসমাজের দাবি। এ সময় তিনি নিহতদের শহীদ হিসেবে অভিহিত করেন।

আনন্দবাজার পত্রিকাকে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেছেন, তিনি সংঘর্ষের সময় ঢাকায় ছিলেন। ২২শে জুলাই ফিরেছেন। একাডেমিক কারণে তিনি ঢাকায় এসেছিলেন। বলেন, ভোরে গিয়ে দেখি প্রচুর মানুষ। মাথায় হেলমেট। হাতে বাঁশের লাঠি। ১৬ই জুলাই জাহাঙ্গীরনগরে গুলি হয়। ৬/৭ জন মারা গেছে শুনতে পাই। তখন বোঝা গেল আন্দোলন ছাত্রদের মধ্যে নেই। চারদিন ঘরবন্দি ছিলাম মোহাম্মদপুরের একটি বাসায়। রাস্তায় হট্টগোল শুনেছি। সাইরেন, হেলিকপ্টারের আওয়াজ শুনতে পেতাম। গুলির আওয়াজ পেতাম। একপর্যায়ে গুজব ছড়ানো হয় যে, প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়েছেন, হাসপাতালে ভর্তি বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া মারা গেছেন। ছাত্রদের ওপর গুলি চালালো পুলিশ।
আল জাজিরায় ‘হাউ বাংলাদেশ রিকশাপুলারস সেভ্‌ড লাইভস অ্যামিড কোটা প্রটেস্ট ক্ল্যাসেস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৬ থেকে ২০শে জুলাই পর্যন্ত পাঁচদিন বাংলাদেশ ছিল টালমাটাল। এ সময় সরকার কোটা আন্দোলন দমনে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে কঠোর অভিযান পরিচালনা করে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৯৭ জন নিহত হন। ১৮ই জুলাই ব্যাপক প্রাণহানির পর ঢাকাসহ গোটা দেশে উত্তাল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তখন সরকার কঠোর অবস্থানে ছিল। ইন্টারনেট ক্যাবল পোড়ানোর দায়ে সারা দেশের ইন্টারন্টে সেবা বন্ধ করে দেয় সরকার। ১৯শে জুলাই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষে কমপক্ষে ৫৬ জন নিহত হওয়ার পর সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার যা বর্তমানে শিথিল হতে শুরু করেছে।

দেশের এমন টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে জীবিকার শঙ্কায় পড়েন নগরীর লাখ লাখ রিকশাচালক। এদের অনেকেই বিক্ষুব্ধ ওই পরিস্থিতির মধ্যেই তাদের জীবিকার বাহন রিকশা নিয়ে নেমে পড়েন ঢাকার মহাসড়কগুলোতে। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আনুমানিক প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় লাখ রিকশা ঢাকার বিভিন্ন সড়কে চলাচল করে। বিক্ষোভের ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন চালকরা। এ ছাড়া বিক্ষোভ দমনে সরকারের জারি করা কারফিউতে তাদের উপার্জনে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। ঢাকার এক রিকশাচালকের সঙ্গে কথা বলেন আল জাজিরার এক প্রতিবেদক। ওই রিকশাচালকের নাম শাহীন। তিনি জানান, এই জরুরি পরিস্থিতির মধ্যে তার দৈনিক আয় মাত্র ১৫০ টাকায় নেমেছে। যেখানে তাকে রিকশার মালিককে প্রতিদিন ১২০ টাকা দিতে হয়। এক্ষেত্রে তার অসামান্য ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ওই রিকশাচালক।

১৯শে জুলাই পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে বেঁচে থাকার তাগিদে রাজধানীর সড়কগুলোতে রিকশার সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মেহেন্দিগঞ্জ থেকে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় আসেন স্বপন নামের একজন। তিনিও ঢাকায় এসে রিকশা চালাতে শুরু করেন। তিনি বলেন সেদিন দক্ষিণ ঢাকার বনশ্রী থেকে গুলিবিদ্ধ এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সে সময় ওই ব্যক্তি রক্তাক্ত অবস্থায় ছিলেন। তিনি বলেন, আমি তাকে গোড়ান টেম্পো স্ট্যান্ডে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। তার সঙ্গীদের একটি অটোরিকশা নেয়ার পরামর্শ দিই, যেন তারা দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেন। কিন্তু সে সময় আশপাশে তেমন কোনো রিকশা ছিল না।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের এক রিকশাচালক কাশেম। কমপক্ষে পাঁচ আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছেন। তাদের মধ্যে দুই-একজন শিক্ষার্থী ছিলেন। সাধারণ মানুষকেও আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যান কাশেম। তিনি অভিযোগ করেন, বিক্ষোভকারীদের হাতে লাঠি এবং ইট-পাটকেল ছিল। কিন্তু পুলিশ বেসামরিক ছাত্রজনতার ওপর গুলি চালিয়েছে। এতে অল্প সময়ের মধ্যে হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যায়। নিজে থেকেই আহতদের রিকশায় তুলে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়ার কথা জানিয়েছেন মোহাম্মদপুরের ওই রিকশাচালক। শাহাবুদ্দিনের মতো কাশেমও একই মন্তব্য করেছেন। সংঘর্ষের ভয়ের চেয়ে ক্ষুধা আরও বেশি ভয়ঙ্কর। যদিও এ সময় তারা ভালো আয় করতে পারেননি। শাহাবুদ্দিন জানিয়েছেন তিনি সেদিন মাত্র ৫০ টাকা রোজগার করতে পেরেছিলেন। যা দিয়ে তিনি মালিকের ভাড়াই পরিশোধ করতে পারেননি।

সূত্র:মানবজমিন।
তারিখ: জুলাই ২৭, ২০২৪

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ