Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

বিজেপি জোট ২৮৬ ও কংগ্রেস জোট ২০২; এবার জোটের ওপর ভর করতে হচ্ছে মোদিকে (২০২৪)

Share on Facebook

লেখক: সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০১৪ সালে ২৮২ আসন পেয়ে সরকার গড়েছিলেন মোদি। পাঁচ বছর পর পেয়েছিলেন ৩০৩ আসন।

জোট সরকার চালানোর কোনো অভিজ্ঞতা মোদির নেই। এবারই প্রথম তাঁকে জোট সরকার গঠন করতে হচ্ছে।

সব আসনের চূড়ান্ত ফল: বিজেপি ২৪০, কংগ্রেস ৯৯

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ৫৪৩টি আসনের সবগুলোর চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতের নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফল অনুযায়ী, ২৪০ আসনে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। ৯৯টি আসনে জয় পেয়েছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। অন্য দলগুলোর মধ্যে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ৩৭টি, তৃণমূল কংগ্রেস ২৯টি, ডিএমকে ২২টি, তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ১৬টি, জনতা দল (জেডি-ইউ) ১২টি, শিবসেনা (উদ্ভব) নয়টি, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপিএসপি) আটটি ও শিবসেনা (এসএইচএস) সাতটি আসনে জয় পেয়েছে।

পাঁচটি আসন পেয়েছে লোক জনশক্তি পার্টি (রাম বিলাস)। চারটি করে আসনে জয় পেয়েছে কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মার্ক্সিস্ট)- সিপিআই (এম), ওয়াইএসআরসিপি ও রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)।

আম আদমি পার্টি, ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) ও ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগ (আইইউএমএল) তিনটি করে আসন পেয়েছে।

আরও একবার প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি। এই নিয়ে টানা তৃতীয়বার। স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর পাশে নিজের নামটিও তিনি খোদাই করতে চলেছেন। যদিও নেহরুর মতো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে তিনি ব্যর্থ হলেন। পারলেন না ‘চার শ পার’ স্লোগান সার্থক করে রাজীব গান্ধীর রেকর্ড টপকে যেতে।

গতকাল মঙ্গলবার লোকসভা নির্বাচনের ফল মোদির দল বিজেপি এককভাবে সর্বোচ্চ সংখ্যক আসন পেলেও তাদের এনডিএ তিন শ আসনও ছুঁতে পারল না। প্রবলভাবে উঠে এল কংগ্রেসের উদ্যোগে গড়া ‘ইন্ডিয়া’ জোট। টানা এক দশক পর তারা মোদির বিজেপির একদলীয় শাসনের অবসান ঘটাল। সরকার গড়লেও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদিকে এখন থেকে হতে হবে পরমুখাপেক্ষী। তাঁর ঘাড়ে প্রতিনিয়ত শ্বাস ফেলবে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া।

ভারতের নির্বাচন কমিশন ও গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ২৮৬ আসন পেয়েছে। ইন্ডিয়া জোট পেয়েছে ২০২টি আসন। বিজেপি একা সরকার গঠনের জন্য ২৭২ ম্যাজিক ফিগারের কাছে পৌঁছাতে ব্যর্থ। দলটি পেয়েছে ২৪০ আসন। কংগ্রেস পেয়েছে ৯৯টি। এর অর্থ, বিজেপিকে সরকার গড়তে হলে নির্ভর করতে হবে প্রধানত দুই শরিক নীতীশ কুমারের জেডি–ইউ ও অন্ধ্র প্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডুর দল তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) ওপর। এই দুই দলের সম্মিলিত আসন ২৮টি।

কংগ্রেস স্বভাবতই এই ফলে উৎফুল্ল। গতকাল বিকেলে দলীয় দপ্তরে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল ও প্রিয়াঙ্কাকে পাশে নিয়ে সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই ফল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক ও নৈতিক পরাজয়। গোটা নির্বাচনটাই বিজেপি লড়েছিল মোদির নামে। যাবতীয় গ্যারান্টিও দিয়েছিলেন মোদি। এটা ছিল তাঁর পক্ষে অথবা বিপক্ষের গণভোট। জনতা তাঁর বিরুদ্ধেই মত দিয়েছে।

খাড়গে ও রাহুল দুজনেই জানিয়েছেন, ইন্ডিয়া জোটের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হবে বুধবার (আজ)। সবার সঙ্গে আলোচনা করে সেখানে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। ওয়েনাড ও রায়বেরিলি, দুই জেতা আসনের কোনটি রাখবেন কোনটি ছাড়বেন—সেই সিদ্ধান্তও সবার সঙ্গে আলোচনার পর নেবেন বলে রাহুল জানান। দুই নেতাই বলেন, এই জয় জনতার জয়।

এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই, আগামী দিনগুলোয় প্রশাসক নরেন্দ্র মোদিকে নতুনভাবে আবির্ভূত হতে হবে। সেই ভূমিকা কোনো দিন তিনি পালন করেননি। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর সরকার ছিল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ। কারও ওপর নির্ভর করতে হয়নি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও তাঁর নেতৃত্বাধীন বিজেপিকে কখনো অন্য কারও মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়নি। ২০১৪ সালে সরকার গড়েছিলেন ২৮২ আসন পেয়ে। পাঁচ বছর পর পান ৩০৩ আসন। এবার এক ঝটকায় তা ২৪০– এ নেমেছে। সরকার গড়ার এই যে ৩২টি আসন ঘাটতি, তা মেটাতে হবে জেডি–ইউ, টিডিপি, শিবসেনার শিন্ডে গোষ্ঠী, চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি ও উত্তর প্রদেশের জয়ন্ত চৌধুরীর আরএলডির মতো দলগুলোর সমর্থন নিয়ে। এদের কাউকেই উপেক্ষা বা অবজ্ঞা করার মতো অবস্থায় মোদির বিজেপি থাকবে না; বরং সারাক্ষণ তাদের গুরুত্ব দিতে হবে। দাবি মানতে হবে। পছন্দের মন্ত্রিত্বও দিতে হবে। না হলে জোট ছাড়ার প্রচ্ছন্ন শঙ্কার মধ্যে থাকতে হবে। নীতীশ কুমার ও চন্দ্রবাবুর অতীত মোদির জানা। বারবার তাঁরা জোটে এসেছেন, বেরিয়েও গেছেন। নাইডু এবার আরও শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান। অন্ধ্র প্রদেশে একার ক্ষমতাতেই সরকার গড়ার মতো অবস্থায় তিনি। মোদি তাঁকে এতটাই গুরুত্ব দিচ্ছেন যে গণনা চলাকালীনই তাঁকে ফোন করে জানিয়ে দেন, তাঁর শপথে নিজে উপস্থিত থাকবেন। চন্দ্রবাবু শপথ নেবেন ৯ জুন, ওই দিনটিই মোদি বেছে রেখেছিলেন তৃতীয়বার শপথ নেওয়ার জন্য।

জোট সরকার চালানোর কোনো অভিজ্ঞতাই মোদির নেই। জোটের ধর্ম কেমন, তা–ও তাঁর অজানা। টানা ১০ বছর দাপিয়ে তিনি শাসন করেছেন। কারও তোয়াক্কা না করে সরকার চালিয়েছেন। পুরোপুরি নিজের ইচ্ছেমতো। সেই উঁচু মাথা হেঁট করে অনমনীয় চরিত্র নমনীয় করে শরিকদের যাবতীয় আবদার মেনে শাসন করার কায়দা তাঁকে শিখতে হবে। আত্মমগ্ন ও কর্তৃত্ববাদী কোনো শাসকের পক্ষে রাতারাতি এই রূপান্তর কঠিন। সেই কঠিন কাজই মোদিকে রপ্ত করতে হবে। এমন মোদিকে কেউ কখনো দেখেনি। সে দিক দিয়ে তিনি নিজেই চমকপ্রদ দ্রষ্টব্য হয়ে উঠবেন।

এই ভোট ও তার ফল নরেন্দ্র মোদির কয়েকটি স্বপ্নও খানখান করে দেবে। যেমন তাঁর সাধের ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি। তিনি ভেবেছিলেন, প্রথম দুবারের মতো একক ক্ষমতায় তৃতীয়বার সরকারে এলে এই নীতি চালু করে দেবেন। ইন্ডিয়া জোট শুরু থেকেই ওই নীতির বিরোধী। এনডিএর শরিকদেরও তাতে মত থাকবে কি না, সন্দেহ। একইভাবে বানচাল হয়ে যাবে বহু প্রচারিত অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার বিষয়টিও। দুটি সিদ্ধান্ত বলবৎ করতে গেলে সংবিধান সংশোধন জরুরি। সে জন্য প্রয়োজন সংসদের দুই–তৃতীয়াংশ সমর্থন; এই ফলের পর যা আশা করা বৃথা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাতিল হওয়া ‘ইলেকটোরাল বন্ড’ কিছুটা পাল্টে নতুন করে আনার পরিকল্পনা মোদির ছিল। সেই আশাও জলাঞ্জলি দিতে হবে। ‘পিএম কেয়ার্স’ তহবিলও এরপর সরকারি অডিটের আওতার বাইরে রাখা মোদির পক্ষে সম্ভবপর হবে কি না, বলা কঠিন। বিরোধীদের উপস্থিতি সোয়া দুই শর বেশি হওয়ায় অর্ধেক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যানের পদ তাদের দিতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, গত পাঁচ বছর হীনবল বিরোধীদের যে দাবি মোদি কর্ণপাত করেননি, তা এবার মেনে নিয়ে লোকসভার ডেপুটি স্পিকারের পদটি দিতে হবে বিরোধীদের। ৯৯ আসন পাওয়া কংগ্রেসকে দিতে হবে বিরোধী নেতার পদ, যা পেতে গেলে ৫৫ আসন জিততে হয়। গতবার যা ছিল মোদির দাক্ষিণ্য।

দেখার বিষয় আরও আছে। পাঁচ বছর ধরে মোদি সরকার ইডি, সিবিআই, আয়কর বিভাগ, এনআইএর যথেচ্ছ ব্যবহার করেছে। তাদের দল ভাঙানো ও দল গঠনের মতো কাজে লাগিয়েছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। রাহুল নিজেই গতকাল বলেছেন, কংগ্রেসকে বিপদে ফেলতে তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছিল। তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর শক্তিশালী বিরোধীদের চাপে এই প্রবণতা কতটা বজায় থাকে, সেটাও দেখার। স্পষ্টতই এত দিন মোদির সরকার এদের যেভাবে ব্যবহার করে এসেছে, তাতে তাদের রাশ টানতেই হবে। এত দিন ধরে যে বিশেষণে মোদি ভূষিত হয়েছেন, সেই ‘স্বৈরতন্ত্রী’ তকমা বজায় রাখতে তিনি পারবেন কি?

এই ফল জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসের প্রাসঙ্গিকতা নতুন করে ফিরিয়ে আনল। হিন্দি বলয়ে যে দল প্রায় মুছে গিয়েছিল, কিছুটা হারানো জায়গা তারা ফিরিয়ে আনল। বিশেষ করে উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, রাজস্থান ও বিহারে। পাঞ্জাবের প্রতিষ্ঠিত সব কংগ্রেস নেতা বিজেপিতে চলে গেলেও একার ক্ষমতায় তারা অধিকাংশ আসন জিতেছে। মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা ও কর্ণাটকে জমি খুঁজে নিয়েছে। ব্যর্থতা তাদের অবশ্যই আছে। মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, ওডিশা, অন্ধ্র প্রদেশে কিছুই প্রায় করতে পারেনি। কিন্তু আসনসংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ করে ১০০ ছুঁই ছুঁই অবস্থায় পৌঁছে যাওয়া দলটাকে চনমনে করে তুলবে। বিশেষ করে উত্তর প্রদেশে পায়ের তলার জমি আরও শক্ত করতে প্রিয়াঙ্কাকে রায়বেরিলি থেকে জিতিয়ে আনার পরিকল্পনা যখন রয়েছে।

গতকাল সন্ধ্যায় মহা ধুমধামের সঙ্গে বিজেপি তাদের দলীয় দপ্তরে বিজয় দিবস উদ্‌যাপন করল। দৃশ্যত উৎফুল্ল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহাস্য মুখে অভিবাদন গ্রহণ করলেন। যদিও মনে খচখচানি তাঁর থাকারই কথা। দলের ৩৭০ পাওয়া তো দূরের কথা, জোটকে ৩০০ পাইয়ে দিতেও তিনি ব্যর্থ। শুধু কি তাই? যে বারানসি থেকে গতবার তিনি সাড়ে ৪ লাখের বেশি ব্যবধানে জিতেছিলেন, সেখানে পিছিয়ে পড়েও জয় পেয়েছেন মাত্র দেড় লাখ ভোটে। নরেন্দ্র মোদির কাছে দুটোর কোনোটাই সম্মানের নয়।

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: জুন ০৫, ২০২৪

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ