ভুটানের সঙ্গে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বাণিজ্য না হলেও দেশটির সঙ্গে পিটিএ সই অবশ্যই একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এই পিটিএর ইতিবাচক অভিঘাত সীমিত। তারপরও অন্তত আন্তর্জাতিক একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তির অভিজ্ঞতা তো হলো। এটা ইতিবাচক দিক। কেউ আর বলতে পারবে না যে কারও সঙ্গেই আমাদের পিটিএ নেই। যদিও কারও সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নেই—এ কথা বলার লোক রয়েই গেল।
ভুটানের সঙ্গে পিটিএ করে থেমে থাকলেই চলবে না। এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে হবে। যেসব দেশের সঙ্গে বেশি পরিমাণে বাণিজ্য হয়, সেসব দেশের সঙ্গে চুক্তি করার দিকে যেতে হবে। তবে এটা ঠিক, দক্ষিণ এশীয় মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল (সাফটা) চুক্তির আওতায় এমনিতেই বাংলাদেশ-ভুটান কিছু বাণিজ্যসুবিধা ভোগ করে আসছিল। পিটিএর ফলে এখন সুবিধার আওতা আরেকটু বাড়বে। এমনকি সেবা খাতের বাণিজ্যও বাড়তে পারে এই পিটিএর কারণে।
তবে বাণিজ্যসুবিধাকেই এখন আর অত বড় করে দেখা হয় না। বিনিয়োগের প্রসঙ্গও এখন গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)। উভয় পক্ষের লাভ (উইন-উইন) বিবেচনায় রেখে এখন করতে হবে সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারি। এটা এখন যুগের দাবি, সময়ের দাবি।
যতটুকু জানি, ভুটান বাংলাদেশের মোংলা বন্দর ব্যবহার করতে চায়। এটা ভালো খবর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেমন বললেন চাইলে সৈয়দপুর বিমানবন্দরও তারা ব্যবহার করতে পারে। দেশটির সঙ্গে রেল ও সড়কপথের যোগাযোগেরও উদ্যোগ রয়েছে। অবশ্যই এগুলো ইতিবাচক খবর।
কিন্তু বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের (বিবিআইএন) মধ্যে পারস্পরিক ভূখণ্ড ব্যবহার করে যাত্রী ও পণ্যবাহী যান চলাচলের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তা আটকে আছে ভুটানের কারণে। বাংলাদেশ এখন এই আলোচনা এগিয়ে নিতে পারে। দেখার বিষয়, বাংলাদেশ কতটা দক্ষতার সঙ্গে আলোচনাটা সামনে আনতে পারে।
*** মোস্তাফিজুর রহমান: বিশেষ ফেলো, সিপিডি
সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: ডিসেম্বর ০৭, ২০২০
রেটিং করুনঃ ,