Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্ক ব্যক্তির সঙ্গে বন্ধুত্ব নয়, জাতীয় স্বার্থ পররাষ্ট্রনীতি ঠিক করে দেয়-(২০২৪)

Share on Facebook

লেখা: হিন্দুস্তান টাইমস দিল্লি।

বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল, শেখ হাসিনার ক্ষমতা হারানো, ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে কেমন হতে পারে ভারতের প্রতিক্রিয়া। দিল্লি এখন পুরোনো বিশ্বস্ত বন্ধুকে অগ্রাধিকার দেবে, নাকি নিজের জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেবে—এসব নিয়ে ১২ আগস্ট হিন্দুস্তান টাইমসে লিখেছেন হ্যাপিমন জ্যাকব। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি পড়ান তিনি। কাউন্সিল ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডিফেন্স রিসার্চের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। লেখাটি তাঁর ব্যক্তিগত মতামত।

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সপ্তাহে যখন ভারতে পালিয়ে এলেন, তখন এখানে একটি শক্তপোক্ত মনোভাব গড়ে উঠেছিল। সেটা হলো—ভারতের অবশ্যই বন্ধুর পাশে দাঁড়াতে হবে। এর অর্থ দুইভাবে করা যায়। এক, হাসিনার প্রতি মানবিক মনোভাব দেখানো। দুই, বাংলাদেশের সবকিছু ঠিকঠাক রাখতে হস্তক্ষেপ করা।

শেখ হাসিনা ভারতের একজন বিশ্বস্ত বন্ধু। তাঁর প্রতি মানবিকতা দেখানোার অর্থ শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় দেওয়া। তখন এটার ওপরই জোর দেওয়া হয়েছে। হস্তক্ষেপবাদীদের যুক্তি হলো, ভারত একটি আঞ্চলিক শক্তি। ক্রমেই পরাশক্তি হয়ে উঠছে। তাই অবশ্যই প্রতিবেশী দেশের ভারতের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন সরকারপ্রধানকে ক্ষমতাচ্যুতি থেকে রক্ষায় ভূমিকা রাখতে হবে। তা না হলে এটাই প্রতীয়মান হবে যে ভারত আসলে কিছুই করেনি।

পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্য অর্জনের পথে বন্ধুত্বের কিছু অন্তর্নিহিত বিষয় রয়েছে। প্রথমত, বন্ধু রাষ্ট্রগুলো কখনো নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে একে অপরের জন্য কিছু করে না। দ্বিতীয়ত, যদি অন্য কোনো রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে বন্ধু হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তাহলে ওই দেশের সেই রাজনীতিকদের প্রতিপক্ষরা আপনার রাষ্ট্রকে বন্ধু নাও ভাবতে পারেন।
শক্তি দেখানোর ধারণাটা ভ্রান্ত। কারণ, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের অতীত থেকে অনেক সাবলীল সম্পর্ক রয়েছে। বর্তমানে ও ভবিষ্যতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি মোকাবিলায় মানবিকতা দেখানোর ধারণাটাও পর্যাপ্ত নয়। দুটি মনোভাবের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য—‘আমাদের অবশ্যই ভারতের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন শাসককে সহায়তা করতে হবে’—এই ধারণাটিই ত্রুটিপূর্ণ। কাজেই পররাষ্ট্রনীতিতে বন্ধুত্বের উপযোগিতা এবং বন্ধু বনাম শত্রুর বাইনারি সম্পর্কে আমাদের সুগভীর কিছু পূর্বানুমান অবশ্যই পুনর্বিবেচনা করে দেখতে হবে।

বিরোধপূর্ণ রাষ্ট্রগুলো একে অপরের পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে শুধু এ কারণে নয় যে তারা একে অপরকে অপছন্দ করে। বরং প্রাথমিকভাবে তাদের স্বার্থের দ্বন্দ্ব রয়েছে। অনেক সময় বিরোধপূর্ণ রাষ্ট্রগুলোও পরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে। বিশেষ করে যখন তারা মনে করে, এটা তাদের স্বার্থের অনুকূলে যাবে। অন্যদিকে বন্ধু রাষ্ট্রগুলো যখন একে অপরের উদ্দেশ্যের পারস্পরিক মূল্য বুঝতে পারে, তখন একে অপরের পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে সহায়তা করে থাকে।

কিন্তু যখন বন্ধুদের মধ্যে স্বার্থের দ্বন্দ্ব দেখা দেয়, তখন পরস্পরের পররাষ্ট্রনীতির বাস্তবায়নে সমর্থনের সম্ভাবনাও কমে আসে। তাই বলা যায়, রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সহযোগিতার প্রাথমিক সম্পর্ক বন্ধুত্ব কিংবা শত্রুতার ভিত্তিতে নয়, বরং স্বার্থের সমন্বয়ের মাধ্যমে গড়ে ওঠে। এটা ঠিক যে, বন্ধুত্বে আস্থার পরিবেশ বজায় থাকে। কিন্তু জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় শুধু এটাই যথেষ্ট নয়। স্বার্থের ক্ষেত্রে বিশ্বাসেরও বড় ভূমিকা রয়েছে।

বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলে ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই: শশী থারুর

রাষ্ট্রের মধ্যে কী ধরনের বন্ধুত্ব থাকে? বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে অভিন্ন স্বার্থ, হুমকি ও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে। কিন্তু বন্ধুত্ব কখনো অভিন্ন স্বার্থ গড়ে তুলতে পারে না। এরপরও যখন রাষ্ট্রগুলো একে অপরকে নিজেদের পরীক্ষিত বন্ধু বলে থাকে, তখন বুঝতে হবে, উভয়েই নিজ নিজ জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করছে।

উদাহরণ হিসেবে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলা যায়। দেশ দুটির দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মূলে বন্ধুত্ব নয়, বরং অভিন্ন স্বার্থ রক্ষা অগ্রাধিকার পায়। ভারত ও জাপান একসঙ্গে কাজ করে শুধু বন্ধুত্বের খাতিরে নয়, উভয়ের অভিন্ন স্বার্থ আর হুমকি রয়েছে।

পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্য অর্জনের পথে বন্ধুত্বের কিছু অন্তর্নিহিত বিষয় রয়েছে। প্রথমত, বন্ধু রাষ্ট্রগুলো কখনো নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে একে অপরের জন্য কিছু করে না। দ্বিতীয়ত, যদি অন্য কোনো রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে বন্ধু হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তাহলে ওই দেশের সেই রাজনীতিকদের প্রতিপক্ষরা আপনার রাষ্ট্রকে বন্ধু নাও ভাবতে পারেন।

তৃতীয়ত, বন্ধুত্ব কখনো কখনো দায় হয়ে উঠতে পারে। অনেক সময় বন্ধুরা আপনাকে এমন কিছু করার জন্য চাপ দিতে পারে, যেটা আপনার জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে যায় না। তাই বলা যায়, অভ্যন্তরীণ রাজনীতি আর সামাজিক ব্যবস্থায় বন্ধুত্ব একটি ভালো গুণ হলেও পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্য অর্জনে অনেক সময় তা দায় হয়ে ওঠে।

আরও পড়ুন
মিত্র শেখ হাসিনার পতন ভারতের জন্য কূটনৈতিক সংকট
১১ আগস্ট ২০২৪
মিত্র শেখ হাসিনার পতন ভারতের জন্য কূটনৈতিক সংকট

বন্ধুভাবাপন্ন কিংবা বৈরী রাষ্ট্রেও বন্ধু থাকাটা বেশ উপকারী। তবে এখানে একটি শ্রেণিবিন্যাস রয়েছে, যা রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে। সেটা হলো—আগে স্বার্থ, পরে বন্ধুত্ব। কাজেই নিজের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে কোনো রাষ্ট্র প্রয়োজনে বন্ধুকে ছুড়ে ফেলতে দ্বিধা করবে না। আমাদের অবশ্যই এটা ভুলে যাওয়া উচিত হবে না, এমন বন্ধুত্ব শুধু আমাদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষার তাগিদে।

বন্ধুত্ব কখনো কখনো দায় হয়ে উঠতে পারে। অনেক সময় বন্ধুরা আপনাকে এমন কিছু করার জন্য চাপ দিতে পারে, যেটা আপনার জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে যায় না। তাই বলা যায়, অভ্যন্তরীণ রাজনীতি আর সামাজিক ব্যবস্থায় বন্ধুত্ব একটি ভালো গুণ হলেও পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্য অর্জনে অনেক সময় তা দায় হয়ে ওঠে।
রাষ্ট্রীয় বন্ধুত্বের উদাহরণ দিতে গিয়ে হরহামেশা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যকার ‘ট্রান্স–আটলান্টিক সম্পর্কের’ কথা বলা হয়। সেখানেও স্বার্থের বিষয়টি রয়েছে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিশ্বব্যবস্থা রক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ইউরোপের গুরুত্ব অপরিসীম। আর নিরাপত্তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দরকার ইউরোপের দেশগুলোর। দুপক্ষ ধর্মীয়–সাংস্কৃতিক মিত্রতা বজায় রেখে চলে। কিন্তু শুধু এ দুই ক্ষেত্রে একই মনোভাব রাষ্ট্রের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে দেবে, এমনটাও নয়। পশ্চিম এশিয়া আর আমাদের অঞ্চলের ভূরাজনীতি এর প্রমাণ।

তাহলে শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারানোর পর বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের নীতি কেমন হওয়া উচিত? প্রথমেই ভারতকে অবশ্যই নিজের স্বার্থগুলো সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করতে হবে। ভারত–বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে স্বার্থসংক্রান্ত কিছু বিষয় রয়েছে। যেমন অবৈধ অভিবাসন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যের নিরাপত্তা, বাংলাদেশে ভারতীয় বিনিয়োগ এবং চীনের প্রভাব। এসব বিষয়ে মাথায় রেখে দিল্লির উচিত বর্তমানে ও ভবিষ্যতে যারা বাংলাদেশে ক্ষমতায় আছেন ও আসবেন, তাঁদের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করা। কীভাবে স্থিতিশীল দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উভয় পক্ষকে সহায়তা করবে, সেটা তুলে ধরা।

আপাতত দিল্লিতে শেখ হাসিনা, ভারতের আশ্রয়প্রার্থী নীতি কী বলছে
প্রকৃতপক্ষে, ভারতের বাংলাদেশকে যতটা প্রয়োজন; তার চেয়েও বাংলাদেশের ভারতকে বেশি প্রয়োজন। হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া একটি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি। কিন্তু ভারতে অবস্থান করে হাসিনাকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হলে, তা প্রতিবেশী দেশে ভারতের জাতীয় স্বার্থকে ক্ষুণ্ণ করতে পারে। মনে রাখতে হবে, আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ব্যক্তির চেয়ে রাষ্ট্র বেশি অগ্রাধিকার পায়।

এই কথাটা শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী অন্য দেশগুলোর ক্ষেত্রেও ভারতকে মনে রাখতে হবে। এটা শাসনকাঠামো পরিবর্তন কিংবা হস্তক্ষেপের সময় নয়। কাজেই, ব্যক্তি তোষণ নয়, জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় মনোনিবেশ করুন। কেননা, ক্ষমতাকাঠামো বদলে গেলে বন্ধুত্ব পরবর্তী ধাপে বয়ে নিয়ে যাওয়া যায় না, জাতীয় স্বার্থ যায়।

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: আগষ্ট ১৩, ২০২৪

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

,

ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪,সোমবার

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ