বাংলাদেশে মর্মান্তিক সহিংসতা বন্ধ করতে আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও হুকুমের দায়দায়িত্বসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গতকাল রোববার জেনেভা থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছেন ফলকার টুর্ক। বিবৃতিটি জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে গতকাল রোববার রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যাপক সংঘর্ষ ও হানাহানির ঘটনা ঘটছে। গতকাল এই কর্মসূচির প্রথম দিনে সরকার-সমর্থক নেতা-কর্মী ও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে রাজধানী ঢাকাসহ ২০টি জেলা-মহানগরে ৯৮ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় সন্ত্রাসী হামলায় পুলিশের ১৩ সদস্য এবং কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জে পৃথক হামলায় হাইওয়ে থানার এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার তাঁর বিবৃতিটিতে বলেন, বাংলাদেশে মর্মান্তিক সহিংসতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। দেশটিতে সপ্তাহান্তে আরও অনেক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। সিরাজগঞ্জ জেলার একটি থানায় হামলায় অন্তত ১৩ পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হয়েছেন।
বিবৃতিটিতে বলা হয়, সোমবার ঢাকায় একটি গণমিছিলের পরিকল্পনা আছে। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন দলের যুব শাখাকে ডাকা হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে আরও প্রাণহানি ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হবে।
জীবনের অধিকার, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার বাধ্যবাধকতা মেনে চলার জন্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি জরুরি ভিত্তিতে আবেদন জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার।
বিবৃতিটিতে ফলকার টুর্ক বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও হুকুমের দায়দায়িত্বসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই স্পষ্ট করে দিতে হবে যে এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কোনো দায়মুক্তি থাকবে না।
আরও পড়ুন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি আজ
৫ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি আজ
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার বলেন, সরকারকে অবশ্যই প্রতিবাদ আন্দোলনে শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণকারীদের লক্ষ্যবস্তু করা বন্ধ করতে হবে। অবিলম্বে নির্বিচার আটক ব্যক্তিদের মুক্তি দিতে হবে। ইন্টারনেট পুরোপুরি ফিরিয়ে দিতে হবে। অর্থপূর্ণ সংলাপের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
ফলকার টুর্ক আরও বলেন, অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের মাধ্যমে জনগণের বিপুল অসন্তোষ দমন করার অব্যাহত প্রচেষ্টা, ইচ্ছাকৃতভাবে অপতথ্যের বিস্তার ও সহিংসতার জন্য উসকানি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: আগষ্ট ০৫, ২০২৪
রেটিং করুনঃ ,