Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

বাংলাদেশে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা নিয়ে কেন এত উন্মাদনা-ওয়াশিংটন পোস্টে (২০২২)

Share on Facebook

In Bangladesh, the Argentina-Brazil soccer rivalry is a curious ‘frenzy’

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন

ফুটবল। বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা। ফুটবল জ্বরে এখন কাঁপছে বিশ্ব। কাতারে শুরু বিশ্বকাপ ফুটবলের ২২তম আসর। চার বছর পরপর আসে বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপ এলেই দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায় এশিয়ার অন্যতম দেশ বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ। ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা দলকে নিয়ে বাংলাদেশে যে উন্মাদনা দেখা যায়, তা বিশ্বে একটু বিরল।

আমাদের ফুটবল উন্মাদনার বিষয়টি চোখ এড়ায়নি বিদেশি গণমাধ্যমগুলোরও, এড়ায়নি মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের। গত শুক্রবার এ নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলকে নিয়ে উন্মাদনার থেকে ফুটবল নিয়ে মারামারির খবর পর্যন্ত উঠে এসেছে। পাঠকের জন্য তা তুলে ধরা হলো।

প্রতিবেদনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে পছন্দের দলের পতাকা টাঙানোর বিষয়টি। বিশ্বকাপ এলেই কীভাবে বাংলাদেশের মানুষ আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের পতাকা টাঙায়, তার বিশদ বর্ণনা রয়েছে। বাড়ির ছাদ, বারান্দা এমনকি সেতুতেও দুই দেশের পতাকা আঁকা বা টাঙানো হয়েছে। বাংলাদেশিরা বিশ্বকাপের সময় ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা নিয়ে নানান তর্কে মেতে থাকেন। কখনো কখনো সেটি হাতাহাতি, ইট ও পাথর ছোড়াছুড়িতেও রূপ নেয় বলে ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এমন একটি দেশে ফুটবল নিয়ে এমন উত্তেজনা, যেটিকে ক্রিকেটপাগল দেশ বলে মনে করা হয়। এমনকি বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষের জীবনে কোনো দিন আর্জেন্টাইন বা ব্রাজিলিয়ানদের সঙ্গে দেখাও হয়নি। বাংলাদেশ থেকে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার দূরত্ব হাজারো মাইল দূরে। তারপরও ফুটবল নিয়ে এমন উন্মাদনা।

ঢাকার বাসিন্দা আকেদ কাদের চৌধুরী। নেইমারের ব্রাজিলের ভক্ত আকেদ কাদের চৌধুরী কাজ করেন টেলিযোগাযোগ খাতে। তাঁর মতে, এটি উন্মাদনা! আপনি যদি এ ঘটনাকে এককথায় বলতে চান, ‘তবে এটি আসলে উন্মাদনা, যা পুরো দেশকে জাগিয়ে তোলে।’
আগামী ২০ নভেম্বর শুরু হবে ফুটবল বিশ্বকাপ। ইতিমধ্যে বিশ্বকাপের উন্মাদনা শুরু হয়ে গেছে। আকর্ষণীয় ছাড়ে বিভিন্ন দেশের পতাকা বিক্রির জন্য সাজিয়ে রেখেছেন দরজি পান্না সরদার। একটি কিনলে আরেকটি পতাকা বিনা মূল্যে দিচ্ছেন তিনি। পতাকা কিনলে লাকি কুপন আর ফুটবল খেলার সময়সূচিসহ লোভনীয় সব ছাড়ও দিচ্ছেন। বিসিক এলাকা, বগুড়া শহর, ১৯ অক্টোবর
আগামী ২০ নভেম্বর শুরু হবে ফুটবল বিশ্বকাপ। ইতিমধ্যে বিশ্বকাপের উন্মাদনা শুরু হয়ে গেছে। আকর্ষণীয় ছাড়ে বিভিন্ন দেশের পতাকা বিক্রির জন্য সাজিয়ে রেখেছেন দরজি পান্না সরদার। একটি কিনলে আরেকটি পতাকা বিনা মূল্যে দিচ্ছেন তিনি। পতাকা কিনলে লাকি কুপন আর ফুটবল খেলার সময়সূচিসহ লোভনীয় সব ছাড়ও দিচ্ছেন। বিসিক এলাকা, বগুড়া শহর, ১৯ অক্টোবর ছবি: সোয়েল রানা

এদিকে আর্জেন্টিনার ভক্ত ঢাকার বাসিন্দা নোফেল ওয়াহিদ বলেন, ‘জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ একটি বড় দেশ।’ কিন্তু আপনি আর্জেন্টিনাভক্ত ও ব্রাজিলভক্তদের খেলাসম্পর্কিত নানা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিকে দুই ভাগে ভাগ করতে পারবেন। তিনি বলেছিলেন, এটি একটি মজার ব্যাপার। এ ক্ষেত্রে কোনো যুক্তিই খাটে না। লাতিন আমেরিকা থেকে এত দূরে দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশে ফুটবল নিয়ে এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা কেন? এটি ব্যাখ্যা করা কঠিন।

আকেদ কাদের চৌধুরী ও নোফেল ওয়াহিদ এ ব্যাপারে একমত যে, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা নিয়ে উন্মাদনার শুরু ৮০ দশকের দিকে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে জায়গা করে নেয়। এর এক দশক পরই দেশে রঙিন টেলিভিশন কেনা বেড়ে যায়। তখনই তাঁরা ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার রংবেরঙের জার্সি পরা খেলোয়াড়দের দেখতে শুরু করেন। আর সে সময়ই মানুষ এ দুই দলের ভক্ত হতে শুরু করেন। তবে এ ক্ষেত্রে ডিয়েগো ম্যারাডোনার কথা আলাদা করে না বললেই নয়। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে দুই গোলের কথা মানুষ ভুলতে পারেনি। নোফেল ওয়াহিদ বলেন, আসলে ম্যারাডোনা ছিলেন একজন মন্ত্রমুগ্ধকর ফুটবলার।

তবে ফুটবল নিয়ে কষ্টও আছে বাংলাদেশে। মানুষ এত ভালোবাসলেও বাংলাদেশে ফুটবলের উন্নতি ঠিক সেভাবে করতে পারেনি। ক্রিকেটে বাংলাদেশ ওয়ানডে র‌্যাকিংয়ে ৭ম, আর ফুটবলে বাংলাদেশ ১৯২তম। তবে বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় এসব ভুলে বাংলাদেশিরা পছন্দের দুই দলকে সমর্থনে মেতে ওঠেন। ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপের কথা আজন্ম মনে রাখবে সে সময়ের তরুণ– কিশোরেরা।

কীভাবে এক জায়গায় জড়ো হয়ে অনেক মানুষ মিলে খেলা দেখত, সেটি এখন বাংলাদেশে ইতিহাস। ওই বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল রাউন্ড অব ১৬-তে মুখোমুখি হয়েছিল। সেই খেলা দেখতে বাড়িতে বাড়িতে চলছিল বিশাল সব আয়োজন। ব্রাজিলভক্ত আকেদ কাদের চৌধুরীর বয়স তখন ১০। তিনি জানান, সে সময় বড় ভোজের আয়োজন করা হয়েছিল তাঁদের বাড়িতে। তাঁর বাবার বন্ধু ও সহকর্মীরা খেলা দেখতে একত্র হয়েছিলেন। অন্তত ৫০ জন একসঙ্গে বসে সেই খেলা দেখেছিলেন।

তিনি বলেন, হাজারো মাইল দূরে থাকা দুটি দলের জন্য কেন আমার পরিবারের মানুষ কাঁদছে, হাসছে, লাফালাফি করছে, তা আমি তখন বুঝতে পারতাম না।

সেই খেলায় ৮২ মিনিটে ক্লদিও ক্যানিজিয়ার গোলে ১–০ গোলে জয় পায় ম্যারাডোনার দেশ। ৩২ বছর আগের সেই স্মৃতি তাই মনে করতে চান না কাদের চৌধুরী। তবে সেই বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ফাইনালে হেরে যায় জার্মানির কাছে। খেলার ৮৫ মিনিটের পেনাল্টির গোলে হেরে যায় আর্জেন্টিনা। সে সময়ের ছয় বছর বয়সী নোফেল ওয়াহিদ বলেন, ‘এটা আমার মনে আছে। পেনাল্টিটি স্পষ্টতই আর্জেন্টিনার বিপক্ষে গিয়েছিল। আমার মনে আছে, ম্যারাডোনা অধিনায়ক হিসেবে পদক নেওয়ার সময় কাঁদছিলেন এবং যখন আমি এটা দেখেছিলাম, তখন আমি শুধু কাঁদতে শুরু করি।

আমার মনে আছে, মা আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। বলছিলেন, “চিন্তা করবি না, আর্জেন্টিনা আবার জিতবে।”’ ফোনে নোফেল ওয়াহিদ বলছিলেন, ‘সেই থেকে আমি অপেক্ষায়।’

ফুটবল নিয়ে সেই সময়ের উন্মাদনা এখনো আছে। ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনা দলের নেইমার ও মেসিকে ছাড়া অন্য খেলোয়াড়দের চেনেন এমন বাংলাদেশির সংখ্যা খুব বেশি নয়। কিন্তু তাতে দলের প্রতি ভালোবাসার শেষ নেই। এ ব্যাপারে আকেদ কাদের চৌধুরী বলছিলেন, ‘আমার মা–সহ যাঁরা আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের সমর্থক, তাঁরা তিন-চারজনের বেশি খেলোয়াড়ের নাম না জানলেও সমর্থন আছে। ২০১১ সালে লিওনেল মেসিসহ আর্জেন্টিনা দল ঢাকায় আসে। সে কত উন্মাদনা! ২০২১ সালের জুলাই মাসে দুই দল যখন কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠল, তখন বেশির ভাগ বাংলাদেশি সেই ম্যাচ দেখেছে। কোন টুর্নামেন্ট চলছে বা এর নাম কী, তা নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাতে দেখা যায় না। আকাশি নীল আর হলুদ জার্সি (আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল) পরে খেলা হচ্ছে, এটাই যথেষ্ট এদের জন্য।

২০২১ সালে কোপার সেই ম্যাচ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ বড় পর্দায় দেখতে পারেনি। কারণ, ব্রাজিলের সেমিফাইনাল ম্যাচের সময় সংঘাতের এত ঘটনার কারণে পুলিশ প্রকাশ্যে জড়ো হয়ে খেলা দেখতে বাধা দিয়েছিল। এমন ঘটনা ওটাই প্রথম ছিল না। ২০১৪ সালে বরিশালে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সমর্থকদের সংঘর্ষে ১১ জন আহত হয়েছিলেন। সেখানে এক ব্রাজিলভক্ত ম্যারাডোনার হাত দিয়ে গোল (ঈশ্বরের হাত) দেওয়ার কথা তুললে ওই সংঘাত শুরু হয়।

২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ব্রাজিল জার্মানির কাছে সাত–শুন্য গোলে হেরে যায়। এরপর থেকেই ব্রাজিলভক্তদের ‘সেভেন আপ’ বলে খেপানোর প্রবণতা শুরু হয়। আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা তখন দোকানে গিয়ে সেভেন আপ কেনাও শুরু করেন। ব্রাজিলভক্তদের সামনে দাঁড়িয়ে তা খেয়ে তাঁদের উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করেন। আর্জেন্টিনার ভক্ত ওয়াহিদ জানান, তিনিও এমন কাজ করেছেন।

ফুটবল বিশ্বকাপের ২২তম আসর শুরু হয়েছে দুই দিন হলো। এ নিয়ে বরাবরের মতো উন্মাদনায় বাংলাদেশিরাও। আবারো এ দেশের ফুটবলপ্রেমীরা দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছেন। এখন বাড়িতে বাড়িতে পতাকা উড়ছে, সেতু রং করে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার পতাকা টানানো হচ্ছে।

চায়ের দোকানে বসলেই শোনা যাচ্ছে মেসি–নেইমার নিয়ে নানান আলোচনা। অবশ্য এ দুই দল বাদে জার্মানি, ফ্রান্স, পর্তুগালেরও কিছু সর্মথন আছেন বাংলাদেশে। তবে দিন শেষে আকাশি নীল ও হলুদ জার্সি নিয়ে বাংলাদেশে যে এত উন্মাদনা, তা নিয়ে নানান আলোচনা আছে।

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:নভেম্বর ২২, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ