বাংলাদেশে সামরিক অভ্যুত্থানের কোনো প্রশ্নই নেই বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর। এই ধারণার পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেছেন, বস্তুত বাংলাদেশে সামরিক একনায়কতন্ত্র ফেরানোর চেষ্টা করা হলে, তাদের জাতিসংঘের নানান নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে হবে। সে কারণেই এই ধরনের একনায়কতন্ত্র ফেরার আশঙ্কা নেই।
ভারতে যাঁরা সরকারের তরফে বাংলাদেশের রাজনীতির ওপরে নজর রাখেন এবং পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সরকারকে তাঁদের অভিমত জানান, তাঁদের মধ্যে অভিজ্ঞ সাংবাদিক এম জে আকবর অন্যতম। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বাংলাদেশ নিয়ে এ কথা বলেন। ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে এই আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল সিভিল সোসাইটি গ্রুপ ‘ইন্ডিয়া ন্যারেটিভ’, যারা একটি সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইট পরিচালনা করে থাকে।
বাংলাদেশে বর্তমান সরকার ক্রমশ যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার রাজনীতির শিকার হচ্ছে কি না, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল নরেন্দ্র মোদি সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রীর কাছে। আকবর বলেন, ‘শেখ হাসিনা সম্পর্কে ভারতের নিজস্ব চিন্তাভাবনা রয়েছে। আমরা মনে করি যেমন তাঁর পিতা সে দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়েছিলেন, তেমনি তিনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) লড়েছেন গণতন্ত্রের জন্য। তিনি সেখানে গণতন্ত্র কায়েম করেছেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা যদি আরও জোরালো হয়, তবে ভারত কী ধরনের ভূমিকা পালন করতে পারে, এ প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতা আকবর বলেন, ‘ভারত কী করবে, তা হয়তো প্রকাশ্যে বলা সম্ভব নয়। কিন্তু যা করার তা অবশ্যই আমরা করব।’
ভারত কী করতে পারে তার একটি সাম্প্রতিক উদাহরণ দিয়ে আকবর বলেন, ‘ভারত রাশিয়ার জাহাজ পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া বন্দরের কাছে ভিড়তে দিয়েছিল। সেখান থেকে যাবতীয় মালপত্র ছোট জাহাজে করে বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণেই রাশিয়ার জাহাজটিকে বাংলাদেশ তার বন্দরে স্থান দিতে পারেনি।’
তবে ঢাকায় সরকারি কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা রাশিয়ার জাহাজ থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য হলদিয়া বন্দরে খালাস করা যায়নি।
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাব ও বাহিনীর সাবেক–বর্তমান সাতজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এর পর থেকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বেশ আলোচনা রয়েছে।
আলোচনা সভায় অপর বক্তা ছিলেন বাংলাদেশের লেখক সৈয়দ বদরুল আহসান। বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচনে কোন বিষয়গুলো ইস্যু হয়ে উঠতে পারে, এই প্রশ্নের জবাবে বদরুল আহসান বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিকে গুছিয়ে তোলা এবং দুর্নীতি রোধে সরকারের সাফল্য বা ব্যর্থতা নির্বাচনে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।’ নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রয়োজন রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:জানুয়ারী ১৭, ২০২৩
রেটিং করুনঃ ,