২০২৩ সালেও মূল্যস্ফীতির কারণে বাংলাদেশের মানুষ ভুগবে। সেই সঙ্গে জ্বালানি ও সারের স্বল্পতার কারণে প্রবৃদ্ধি হোঁচট খাবে। কিন্তু অবকাঠামো খাতে সরকারের বিনিয়োগের কারণে তা কিছুটা প্রশমিত হবে।
২০২৩ সালে বাংলাদেশের জিডিপি বা মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতির গড় হার হতে পারে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ।
যুক্তরাজ্যের সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট–এ ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের এ সমীক্ষা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, চলতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতির কী পরিস্থিতি হতে পারে, তা নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছে ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হিসাব করা হয় অর্থবছরের সাপেক্ষে, পঞ্জিকা বছরের সাপেক্ষে নয়। কিন্তু প্রতিবেদনে বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়নি, এই হিসাব পঞ্জিকা বছরের, নাকি অর্থবছরের।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে আরও বলা হয়েছে, ২০২৩ সালেও মূল্যস্ফীতির কারণে দেশের মানুষ ভুগবে। সেই সঙ্গে জ্বালানি ও সারের স্বল্পতার কারণে প্রবৃদ্ধি হোঁচট খাবে। কিন্তু অবকাঠামো খাতে সরকারের বিনিয়োগের কারণে তা কিছুটা প্রশমিত হবে।
চলতি বছর রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের একটি ইউনিট কার্যক্রম শুরু করবে। এতে জ্বালানি পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
চলতি বছর রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের একটি ইউনিট কার্যক্রম শুরু করবে। ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বলছে, এতে দেশের জ্বালানি পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। তারা সেদিকে নজর রাখবে বলে জানিয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হবে গায়ানার। এ বছর তাদের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩০ শতাংশ। জ্বালানির দুর্মূল্যের বাজারে তারা তেল ও গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধি করছে। তার ওপর ভর করে এ বছর তাদের বিপুল প্রবৃদ্ধি হবে বলে মনে করছে ইন্টেলিজেন্স ইউনিট।
প্রবৃদ্ধিতে দ্বিতীয় স্থানে থাকবে লিবিয়া; ১৫ শতাংশ। বলা হয়েছে, তারাও তেল ও গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধি করছে আর দেশটিতে যদি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকে, তাহলে তারাও সে থেকে লাভবান হতে পারে।
তৃতীয় স্থানে থাকবে ভেনেজুয়েলা। এ নিয়ে অবশ্য ইন্টেলিজেন্স ইউনিট নিজেই বিস্ময় প্রকাশ করেছে। বলেছে, টানা কয়েক বছরের মন্দার পর তারা ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। সেই তেল-গ্যাসের উচ্চ মূল্যের কারণে তাদের এবার ৯ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।
এ ছাড়া উন্নত ও বড় অর্থনীতির দেশগুলো সম্পর্কেও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বলছে, এ বছর বড় অর্থনীতিগুলোর মধ্যে ভারতের প্রবৃদ্ধি হতে পারে সবচেয়ে বেশি—৫ দশমিক ১ শতাংশ। এ ছাড়া চীনের ৪ দশমিক ৭ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। যুক্তরাজ্যের শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ সংকোচন হতে পারে।
দ্য ইকোনমিস্ট–এর শেষ সংখ্যায় ২০২৩ সালের বৈশ্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়েও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তারা বলছে, মূল্যস্ফীতির চাপ এবারও থাকবে। সে জন্য এ বছর খুচরা বিক্রি তেমন একটা বাড়বে না। এমনকি ই-কমার্সের প্রবৃদ্ধিও কমবে। একই কারণে সারা বিশ্বের গাড়ি বিক্রির প্রবৃদ্ধি হতে পারে ১ শতাংশ। তবে চীন বৈদ্যুতিক গাড়ির করসুবিধা অব্যাহত রাখায় এই গাড়ির বিক্রি ২৫ শতাংশ বাড়তে পারে।
চলতি বছর বিমানভ্রমণ ৩০ শতাংশ বাড়তে পারে, যদিও তা প্রাক্–মহামারি সময়ের চেয়ে কম।
সামগ্রিকভাবে চলতি বছরের অর্থনীতি নিয়ে তেমন একটা আশার বাণী দেয়নি দ্য ইকোনমিস্ট। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অনিশ্চয়তা এ বছরও থেকে যাবে।
সূ্ত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:ফেব্রুয়ারী ২৫, ২০২৩
রেটিং করুনঃ ,