Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

বাংলাদেশের নেওয়া সব বড় প্রকল্পই ভালো নয়। (২০২২)

Share on Facebook

লেখক:আহসান এইচ মনসুর।

শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি একসময় ভালো ছিল। তারা সামাজিক সূচক ও অবকাঠামোয় আমাদের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত। মাথাপিছু আয়েও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে। দেশটি দীর্ঘকালীন একটা যুদ্ধাবস্থায় ছিল। গৃহযুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে অনেক আগে। তখনো কিন্তু তারা এতটা খারাপ অবস্থায় ছিল না। তবে যুদ্ধের একটা দীর্ঘকালীন প্রভাব তো আছেই। এখন তারা বড় সমস্যায় পড়েছে বিনিয়োগ কতটা ফিরে আসবে, সেটা ঠিক না করেই তারা বিভিন্ন অলাভজনক বড় প্রকল্পে বিপুল অঙ্কের অর্থ ঋণ করেছে।

ঋণ করতে সমস্যা নেই। কিন্তু অর্থ ফেরত আসবে না, তা এমন সব প্রকল্পে যদি ঋণ করা হয়, তাহলে সেই প্রকল্প একটি দেশের জন্য বোঝা হয়ে পড়ে। শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে ঠিক তা-ই হয়েছে। পাশাপাশি সরকার নিজের ব্যয়ও কমাতে পারেনি। এখন তারা এ জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলকে (আইএমএফ) দোষ দিচ্ছে। কিন্তু এখন ঠিকই দেশকে চরম অবস্থায় নিয়ে আইএমএফের কাছে তাদের যেতে হচ্ছে। অথচ আইএমএফের কাছে যাবে না বলে গোঁয়ার্তুমি করেছিল। এখন গোঁয়ার্তুমির আর সুযোগ নেই। সস্তা জাতীয়তাবাদ না দেখিয়ে সুচিন্তিত পদক্ষেপ নেওয়াই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান সরকার সেটা করেই আরও বিপদ ডেকে এনেছে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এখান থেকে বাংলাদেশের কী শিক্ষা নেওয়ার আছে। আমরা এখন ভালো অবস্থানে আছি। তবে পরিস্থিতি কিন্তু আগের চেয়ে দুর্বল হতে শুরু করেছে। সামষ্টিক অর্থনীতি আগের মতো শক্ত নয়। দেশের চলতি হিসাবে বিশাল ঘাটতি, যা শ্রীলঙ্কারও আছে। এবার যে ঘাটতি হতে যাচ্ছে, তা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। ইতিহাসে কখনো এর অর্ধেক ঘাটতিও হয়নি। সুতরাং উদ্বেগের কিছু জায়গা তৈরি হয়েছে।

এ অবস্থায় কিছু প্রস্তুতি নেওয়া দরকার, নীতির কিছু সমন্বয়ও করা প্রয়োজন। যেমন বিনিময় হারে সমন্বয় দরকার ছিল, যা তেমন নেওয়া হয়নি। সর্বশেষ হিসাবে আমদানি বেড়েছে ৫৪ শতাংশ হারে। এই হারে যদি বাড়ে, তবে চলতি অর্থবছর শেষে আমদানি ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি ডলারের মতো হয়ে যাবে। এটা ভয়ানকভাবে উচ্চমাত্রার। আমাদের ৬০ বিলিয়ন বা ৬ হাজার কোটি ডলারের বেশি আমদানি ব্যয় কখনোই হয়নি। সুতরাং এতটা বেড়ে গেলে সেই চাপ সহ্য করাটা কঠিন হবে। আর বৃদ্ধির এই প্রবণতা যদি আরও এক বছর চলে, তাহলে কিন্তু আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার মজুতও শেষ হয়ে যাবে।

এখন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কি ভালো প্রকল্প হাতে নিয়েছি? আমার মতে, তা নেওয়া হয়নি। ব্যয় অনেক বেড়েছে, তবু পদ্মা সেতু ভালো প্রকল্প। কিন্তু পদ্মা সেতুতে রেললাইন প্রকল্প অত্যন্ত ব্যয়বহুল প্রকল্প। পদ্মা সেতু করছি ৩২ হাজার কোটি টাকা দিয়ে, কিন্তু রেললাইন করছি ৫০ হাজার কোটি টাকায়। এটা তো আরও বাড়বে। অথচ এই রেলপথ দিয়ে যেসব পণ্য আসবে, তার জন্য নৌপথ আছে। সুতরাং এই বিশাল ব্যয়ের আসলে যৌক্তিকতা নেই।

আর আছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প। এর সম্ভাব্যতা, লাভজনকতা বা পরিবেশসংক্রান্ত সমীক্ষা কেউ দেখেছে বলে শুনিনি। অথচ এটা হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। এক লাখ কোটি টাকার বেশি এই প্রকল্পের জন্য একটি মাত্র উৎস থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের তেজস্ক্রিয় পদার্থ যদি রাশিয়া না নেয়, তাহলে আমাদের বিকল্প কী? আর এখন যুদ্ধের কারণে লেনদেন করাই সমস্যা। এর সমাধান কবে হবে, কেউ জানি না। প্রকল্পটি লাভজনক হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আমাদের এটা বহন করতে হবে। এই প্রকল্পের ঋণ অনেক, ১৩ বিলিয়ন বা ১৩০০ কোটি ডলার। যখন এটি নেওয়া হয়েছিল, তখন এটি ছিল বাংলাদেশের মোট বৈদেশিক ঋণের এক-চতুর্থাংশ। এটা বাংলাদেশে মতো একটা দেশের জন্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

আমাদের রেল বিভাগেরও অলাভজনক কিছু প্রকল্প আছে। যেমন কক্সবাজার থেকে রামু, এখানে কী চলবে? মিয়ানমারের সঙ্গে তো আমাদের তেমন বাণিজ্যই নেই। অথচ আমরা ১২ হাজার কোটি টাকা দিয়ে এটা করছি। তবে সরকার কিছু ভালো পদক্ষেপও নিয়েছে। চীনা ঠিকাদারেরা বাড়তি অর্থ দাবি করায় রেলের দুই প্রকল্প সরকার বাতিল করে দিয়েছে। আবার পদ্মার ওপর রেলসেতু লাভজনক না হলেও যমুনার ওপর যে ডাবল লেনের রেললাইন হবে, এটা ভালো সিদ্ধান্ত। এটি লাভজনক হবে, বেশি ব্যয়বহুলও নয়। এই পথ দিয়ে ভারত থেকে আমরা দ্রুত পণ্য নিয়েও আসতে পারব। এটি কাজে লাগবে।

সুতরাং প্রকল্প বাছাইয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এমনকি শুরুর পরও অলাভজনক প্রকল্প বাতিল করা যায়। যেমন পায়রা বন্দর কোনো সময়েই লাভজনক প্রকল্প ছিল না। কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করার পর এটা বাতিল করা হয়েছে। আমি মনে করি, সঠিক সিদ্ধান্ত। তবে এই উপলব্ধি আগে হলে আরও ভালো হতো। যেমন রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প শুরুতেই বাতিল করলে ভালো হতো।

এমন না যে আমাদের বড় প্রকল্পের দরকার নেই। দেশের সব মহাসড়ক যদি চার লেন করা হয়, তাহলে এর লাভজনকতা অনেক বেশি। তবে এসব ক্ষেত্রে ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে ভাবতে হবে। আমাদের সব প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণ হচ্ছে বিশাল দুর্নীতির একটি জায়গা। এতে প্রকল্পের খরচ অনেক বেড়ে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে সরকারই সারা দেশে জমির দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।

সুতরাং শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি পরিহার করতে হলে আমাদের প্রকল্পগুলো ভালো হতে হবে। বিনিয়োগ ফেরত পাওয়ার (রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট) মতো লাভজনক হতে হবে। শ্রীলঙ্কা আমাদের এই শিক্ষাই দিচ্ছে।

আহসান এইচ মনসুর: চেয়ারম্যান, ব্র্যাক ব্যাংক, নির্বাহী পরিচালক, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই)।

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: এপ্রিল ০৪, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

,

নভেম্বর ১৭, ২০২৪,রবিবার

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ