বর্ণিলার সাথে অলকের এমন একটি সময় দেখা যখন একটি নতুন সূর্যের উদয় আর অন্য দিকে সূর্যাস্ত সময়। অলকের যখন জীবন গড়ার সূর্যাস্ত সময় ঠিক তখন বর্ণিলা আসল একটি প্রজেক্টের সহকারী হয়ে। প্রসাঙ্গিক ভাবে অনেক কাজের সহযোগি হয়ে বর্ণিলা এখন অলকের জীবনে। কাজের প্রয়োজনে বা অকারণে বর্ণিলার সাথে দেখা ও কথা হওয়ার পরিধীহীন সুযোগ বয়সের অনেক ব্যবধান এই যুযোগ করে দিয়েছে। কর্মক্ষেত্রের পরিমন্ডলে নানান গুঞ্জনের কোন সম্ভবনা নেই। বর্ণিলাকে দেখে প্রথমই অলকরে মনে হয়েছে বর্ণিলা একটি সৃষ্টিকর্তার সুক্ষ দৃষ্টিতে গড়া অমূল্যমানের একটি উপহার। শরীরের রঙ, নতুন সূর্য উদয় সময় কালের যে দেহের গড়ন, কথার বলার মাধুর্য, চাঞ্চলতা সবই অলকের কাছে অমূল্যমানের একটি উপহার।
অলক এ প্রশ্ন রাখে নি এই উপহার কার জন্য ! কোন রাজ-যুবকের জন্য বরাদ্ধ ! বর্ণিলার কল্যাণ চাওয়াটাই অলকের লক্ষ্য, তার জীবনের প্রতি পদে পদে যে অভিজ্ঞতার অর্জন তা নিস্বার্থ ভাবে বর্ণিলাকে সেই অভিজ্ঞতা দিয়ে পথ দেখানো যাতে করে এই প্রতিযোগিতা মূলক কর্মক্ষেত্রে সঠিক পথ ধরে যাতে অন্যদের চেয়ে ভালো ভাবে এগিয়ে যেতে পারে।
কারও ব্যক্তিগত বিষয়ে প্রশ্ন করা অলকের কাজ নয়, তার ধারণা প্রতিটি মানুষের একটি ব্যক্তিগত জীবন চিন্তা চেতনা ও ধারা থাকে সেই ধারার সাথে সবার জীবনে বড় ধরণের ব্যবধান কখনই এক হয় না, আর এ কারণেই পৃথিবী এতো বৈচিত্রময় ও সুন্দরের সমাবেশে ভরা।
বর্ণিলার কোন ব্যক্তিগত প্রশ্ন না করে বরং কর্মক্ষেত্রের কিছু নিয়ম কানুন শেখানো, জীবনের কিছু দার্শণিক দিক নিয়ে কথা বলা এই সব।
অলকের হাতে কিছুটা সময় বর্ণিলার সাথে কথা বলার তাই প্রশ্ন করে বসল তোমার জীবনের উদ্দেশ্য কি, বর্ণিলা মাথা নেড়ে বলে দিল এই বিষয়ে তার কোন ধারণা বা কখনও চিন্তা করে নি।
একটু সহজ করে বুঝিয়ে বলল, ছাত্র জীবনে শিখতে হয় লিখতে হয় জীবনের লক্ষ্য নিয়ে রচনা, এখন ছাত্র জীবন শেষে কর্ম-জীবনে যেখানে পৌঁছাতে চেয়েছিলে হয় তো পৌঁছাতে পেরেছো বা পারও নাই সেটি আর ভাবার প্রয়োজন নেই, এখন প্রয়োজন লক্ষ্য নির্ধারণের এই কর্ম-জীবনকে কেন্দ্র করে জীবনের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা। কোন উদ্দেশ্য নিয়ে জীবনের প্রতি পদক্ষেপ ফেলবে তার একটি হিসাব রাখা ও লিখে রাখা। জীবনের উদ্দশ্য হতে হবে অনেক বড় আর প্রতি পদক্ষেপে হিসাব রাখতে হবে বড় উদ্দশ্যের লক্ষ্য থেকে কতটুকু প্রতি নিয়ত পিছিয়ে পড়ছো !
বর্ণিলা আবার হেসে উত্তর দিল এতো ভারী বিষয় নিয়ে আমার চিন্তা করা হবে না। অলক তারপরও বলল আমার এই প্রশ্নের তাৎপর্য বুঝতে তোমার আরও দশটা বছর তো লাগারই তো কথা।
আমার জীবনের প্রথম দিনে এই চিন্তা চেতনায় ছিলাম না বলেই আমার আজ পিছিয়ে পড়া, তুলনা মূলক ভাবে মানুষ পিছিয়ে পড়লে যে বুঝতে পারে সে পিছিয়ে পড়েছে। পিছিয়ে পড়ার উপলদ্ধি বোধ জীবন যখন এগিয়ে চলে তখন অনেকেই তা বুঝতে পারে না। যারা বুঝতে পারে চলমান ধারার সাথে তাল মিলাতে না পেরে পিছিয়ে পড়ছে তারাই বরাবরই এগিয়ে থাকে তুলনা মূলক ভাবে।
বর্ণিলার আবারও উত্তর জীবনের উদ্দশ্য নিয়ে ভাবি নাই। আবারও অলকের প্রশ্ন বিদেশে যেতে চাও ! মুখে একটি করুণা ভাব নিয়ে বলল না, বিদেশে যাব না, দেশেই ভালো থাকবো। অলক মনে মনে বলল মায়ের কাছেই থাকতে চাও !
তারিখঃ ফেব্রুয়ারী ২১, ২০২০ (ন)
রেটিং করুনঃ ,