এ বিশ্বের বড় একটি কঠিন কাজ হচ্ছে অন্যের পকেট থেকে টাকা নিজের পকেটে আনা, একই ধারায় আরও বড় একটি কঠিন কাজ হচ্ছে একজন লেখকের লেখা একটি বই পাঠকের হাতে পৌঁছিয়ে দেওয়া। খুব সহজে একজন লেখকের লেখা একটি বই পাঠকের হাতে পৌঁছায় না অথবা একজন পাঠক একজন লেখকের লেখা বই খুব সহজে কেনে না, লেখকের ছাপানো বই লেখকের কাছেই থেকে যায়, এই অবস্থায় লেখকের বই লেখার বা ছাপানোর গুরুত্ব হারায়।
এই ধারণাটি আসার একটি কারণ হলো পাঠাগারে থরে থরে বই সাজানো থাকে কিন্তু পাঠকের বই কেনার আগ্রহ বেশ ইদানিং কম। পাঠাগারে বা লাইব্রেরীতে যথেষ্ট বই বিক্রি হয় তবে সেগুলি পরীক্ষা পাসের জন্য বা পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য যেখান থেকে ভালো ডিগ্রী বা ভালো আয় উপার্জনের পথ খুঁজে পাওয়া যায়। মানবিক বা মানসিক অথবা মন ও মননের উন্নতি বিকাশের জন্য লেখাপড়ার সিলেবাস ঘোষিত যে বই পুস্তুক তার বাইরে বিভিন্ন লেখকের বই যেমন কবিতার বই, ছোট গল্প, উপন্যাস, ভ্রমণ কাহিনী বা জীবন দর্শনের বই পড়া উন্নত জীবন যাত্রায় অপরিহার্য। উন্নত মন ও মননের বিকাশে প্রচুর বই পড়া যেমন প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন প্রচুর বই কেনা।
গত কাল যা চল ছিল, আজ তা অনেকটাই অচল এমন ধারণায় পড়ে আমাদের অনেক কিছুতে যথেষ্ট পরিবর্তন আনতে হচ্ছে বা পরিবর্তন তার ধারা মত চলে আসছে। এখন ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে নানান ধরণের গল্প উপন্যাসের পরিবর্তে তার স্থান দখল করে নিয়েছে সেল ফোন আর ল্যাপ টপ, এই দুই যন্ত্র বা দুই মাধ্যমকে হাতে নিয়ে তারা দ্রুত শিখে যাচ্ছে অনেক কিছু, বিশ্বকে যেন নিয়ে এসেছে হাতের মুঠোয়। প্রয়োজনের বাইরে বই কেনার ও বই পড়ার প্রবনতা যে কমেছে এটা স্বীকার করতে হয় এখন।
বই বিক্রি করার কথা চিন্তা না করে লেখক তার মনের চিন্তা চেতনা লিখে প্রকাশ করে যাবেন এটাই স্বাভাবিক কিন্তু কবি, লেখক, উপন্যাসিক যদি পাঠক শুন্য হয়ে পড়েন তখন লেখকও হারিয়ে ফেলেন লেখার আগ্রহ, লেখকও আজকাল খুব সফল হচ্ছে না পাঠকের হাতে তাঁর লেখা বই তুলে দিয়ে আর পাঠকও কঠিন হয়ে যাচ্ছে বই বেনা বিষয়ে। বাসে, ট্রেনে যাত্রা পথে আগে দেখেছি পাঠক বই পড়ছেন হয়তো প্রিয় কবিতা, গল্প বা উপন্যাস, কিন্তু সে জায়গায় এখন হাতে মোবাইল বা ল্যাপ-টপ।
এই ধারা অব্যাহত থাকলে আমাদের ঐতিয্যের যে ভিত্তি তা নড়বড়ে হয়ে যাবে – এ কথাটি বললে ভুল হবে না। সত্য করে বলি লেখাপড়া ও ডিগ্রী অর্জন ছাড়া প্রতি মাসে আমরা বই কেনার জন্য কত টাকা বরাদ্দ রাখি বা কত টাকার বাজেট ঘোষনা করি !! তবে কারো বিবাহ বার্ষিকিতে, জন্ম বাষির্কিতে বা প্রতি মাসে কত টাকার জামা কাপড় কেনা হবে বা রিচ ফুড খাওয়ার জন্য অনেকে হয়তো একটি বাজেট করে থাকেন কিন্তু প্রতি মাসে বই কেনার বাজেট কত আমাদের !!
কথাগুলি লেখার পরে মনে হলো বই মনে হয় একটি গুরুত্ব হীন পণ্যে পরিণত হতে যাচ্ছে আর তাই যদি হয় তখন আমাদের গরিবী দশার মন মানসিকতা কি দামী কাপড় ও রিচ ফুড দিয়ে ঢেকে রাখা যাবে !! যে বই দিয়ে জ্ঞানার্জন সেই জ্ঞানার্জনকে কখনও কোন কিছু দিয়ে মোড়ানো রাখা চলে না্, লেখকরা বই লেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেললে বই অবিক্রিত অবস্থায় থাকলে আমাদের দৈণ্য দশাকে কোন ভাবে ঢেকে রাখা যাবে না। ভাবতে কঠিন লাগবে তখন আমাদের কোন দশা হবে !!
ভালো খাবারও খেতে চাই, ভালো পোশাকও পরিধান করতে চাই সেই সাথে আমাদের বই বেনার বাজেট থাকা চাই, বই কেনার জন্য উন্নত মানসিকতা থাকা্ চাই। মন ও মননের উন্নত বিকাশ চাই। বই কেনা, বই কেনার আগ্রহ ছাড়া মন ও মননের উন্নত বিকাশ কী ভাবে হয় তা আমার জানা নেই, তা জানার জন্য অনেক বই পড়া দরকার এটুকুই শুধু জানা আছে। এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশ, সমাজ আধুনিক প্রযুক্তিতে তবুও আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি যুগের সাথে তাল মিলাতে না পেরে।
রেটিং করুনঃ ,
বাহ্! বই কেনার গুরুত্বটা খুবই দক্ষতার সাথে সুন্দরভাবে তোলে ধরেছেন রব্বানী ভাই। খুবই ভালো লাগলো আপনার অসাধারণ লিখাটি পড়ে, অনেক মূল্যবান কিছু কথা বেরিয়ে এসেছে আপনার এই লেখাটিতে। :-)
সুন্দর ও প্রাণ-বন্ত মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ, শুভেচ্ছা রইলো আপা।
মন ও মননের উন্নত বিকাশ চাই। বই কেনা, বই কেনার আগ্রহ ছাড়া মন ও মননের উন্নত বিকাশ কী ভাবে হয় তা আমার জানা নেই, তা জানার জন্য অনেক বই পড়া দরকার এটুকুই শুধু জানা আছে। এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশ, সমাজ আধুনিক প্রযুক্তিতে তবুও আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি যুগের সাথে তাল মিলাতে না পেরে।
অতি মূল্যবান কথা বলেছেন ভাই!
কিন্তু বই না পড়েও কিন্তু এখন তরুণ সমাজের বিচক্ষণতার শেষ নেই যেন। অন লাইনেও বেশ পড়ে এরা!
আগের তুলনায় এখনকার প্রজন্ম নানা বিষয়ে অনেক পড়ে সত্য কিন্তু বই যদি প্রকাশিত না হয় তখন অন লাইনে তারা কি ভালো কোন বিষয় পাবে। আবার সব বই অন লাইনে পাওয়া যায় না।
এ কথাও সত্য যে নেট ভিত্তিক পড়া শুনার পাশাপাশি বই পড়ার গুরুত্ব কখনই কমবে না।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো।
খুবই ভালো লাগলো :rose:
অনেক শুভেচ্ছা।
বই বিক্রি করার কথা চিন্তা না করে লেখক তার মনের চিন্তা চেতনা লিখে প্রকাশ করে যাবেন এটাই স্বাভাবিক কিন্তু কবি, লেখক, উপন্যাসিক যদি পাঠক শুন্য হয়ে পড়েন তখন লেখকও হারিয়ে ফেলেন লেখার আগ্রহ, লেখকও আজকাল খুব সফল হচ্ছে না পাঠকের হাতে তাঁর লেখা বই তুলে দিয়ে আর পাঠকও কঠিন হয়ে যাচ্ছে বই বেনা বিষয়ে। বাসে, ট্রেনে যাত্রা পথে আগে দেখেছি পাঠক বই পড়ছেন হয়তো প্রিয় কবিতা, গল্প বা উপন্যাস, কিন্তু সে জায়গায় এখন হাতে মোবাইল বা ল্যাপ-টপ। :yes: :yes: :yes: :yes:
:heart: :rose:
লেখাটি পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ মান্নান ভাই।
পড়িলে বই আলোকিত হই
না পড়িলে বই অন্ধকারে রই!!!
ছন্দে ছন্দে খুব সত্য কথা লিখেছেন আলভী ভাই।
“বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না”
– সৈয়দ মুজতবা আলী
খুব সত্য কথা, তাই তো বই কিনি, বই পড়ি।
রাব্বানী ভাই তবুও কেউ কেউ বই কিনে আপনার মতো ।আমি কেনা বই পড়া হলে অন্য কাউকে দিয়ে দেই যদি তাঁর ভাল লাগে সেই আশায় । অবশ্য প্রিয় অংশগুলো আন্ডার লাইন করে দিই …।